সংক্ষিপ্ত

পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি এই বিশ্ব জুড়ে যে তরঙ্গ তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে কাজের সম্মানে উইনফ্রিড অটো শুম্যানের নামে এগুলির নামকরণ করা হয়েছে। এটি ১৯৬০ এর দশকে প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল। 

মানব সভ্যতা চাঁদ এবং মঙ্গলে অবতরণ করেছে, কিন্তু এখনও পৃথিবীর সমস্ত রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আপনি কি জানেন যে পৃথিবীর (Earth) একটি 'হার্টবিট' (Heart Beat) আছে এবং এটি অজান্তেই এই গ্রহে বসবাসকারী আমাদের সকলকে প্রভাবিত (Effect) করতে পারে?

এটাও অনেকের অজানা যে বজ্রপাত আমাদের গ্রহকে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৫০ বার আঘাত করে এবং এর ফলে কম-ফ্রিকোয়েন্সি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ তৈরি হয় যা পুরো গ্রহকে ঘিরে ফেলে। এগুলোকে শুম্যান রেজোন্যান্স বা পৃথিবীর হৃদস্পন্দন বলা হয় এবং কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন যে এগুলো মানুষের আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে।

পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি এই বিশ্ব জুড়ে যে তরঙ্গ তৈরি হচ্ছে, তা নিয়ে কাজের সম্মানে উইনফ্রিড অটো শুম্যানের নামে এগুলির নামকরণ করা হয়েছে। এটি ১৯৬০ এর দশকে প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল। তরঙ্গগুলি ৭.৮৩ হার্জ বেস ফ্রিকোয়েন্সিতে পাওয়া যায়। যে ফ্রিকোয়েন্সিটিকে 'পৃথিবীর হৃদস্পন্দন'ও বলা হয়।

আরও পড়ুন - কালো মহিলার নগ্ন ছবি বলেই কি ডিলিট, ইনস্টাগ্রামের বিরুদ্ধে উঠল বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ, দেখুন

আরও পড়ুন - শুধু আছে লাইনে দাঁড়ানোর ধৈর্য্য, দিনে ১৬০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন এই ব্যক্তি

'নতুন যুগের বিজ্ঞানের' ক্ষেত্রে, অনেকেই বিশ্বাস করেন যে শুম্যান রেজোন্যান্স মানুষের চেতনা দ্বারাও প্রভাবিত হতে পারে। এই ফ্রিকোয়েন্সিগুলির একটি অস্বাভাবিক স্পাইক মানুষ এবং প্রাণীদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে ধীরে ধীরে কমছে এর ফ্রিকোয়েন্সি। কিন্তু কেন কমে আসছে পৃথিবীর হার্টবিট। 

আর্থ অ্যান্ড প্লানেটারি সাইন্স লেটার্সের বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পৃথিবীর ম্যান্টাল এবং কোর অংশ দুটি মূলত পৃথিবীর দুটি স্তর। পৃথিবীর একেবারে অন্তরে রয়েছে কোর। সেখানে রয়েছে উষ্ণ গলিত ধাতুর স্রোত। এই স্রোত পৃথিবীর স্পন্দন। কিন্তু গবেষকরা তাদের গবেষণায় দেখেছেন কোর অংশের উষ্ণতা ক্রমাগত কমে আসছে। যদি পৃথিবী তার উষ্ণতা হারিয়ে ফেলে তাহলে বায়ুমণ্ডল উবে যাবে। সূর্য থেকে ভয়ঙ্কর রশ্মি পৃথিবীতে ছুটে আসবে যা জীবজগতকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে।

উষ্ণ গলিত ধাতুর স্রোতের পরিচালন ভূস্তর এবং ভূগর্ভের পরিবর্তন ঘটায়। টেকটনিক প্লেটের সঞ্চালনায় কাজ করে। এর ফলে হয় ভূমিকম্প। এর ফলে আগ্নেয়গিরি জেগে ওঠায় অগ্নুৎপাত হয়। বিগত কয়েক শ’ কোটি বছর ধরে প্রাণের অস্তিত্ব এবং টিকে থাকার জন্য সহায়ক হয়েছে এই অংশের উষ্ণতা। এই খনিজ পদার্থ কেমন গতিতে কাজ করবে তার উপরে নির্ভর করবে পৃথিবীর হৃদস্পন্দন।

গবেষকরা এই গবেষণা চলাকালীন পৃথিবীর হৃদস্পন্দন কমে আসার অন্যতম কারণ চিহ্নিত করে ফেলেছেন। এটি আসলে একটি খনিজ পদার্থ ব্রিজম্যানাইটের কারণে হচ্ছে। যদি এমনটাই চলতে থাকে তাহলে পৃথিবী আর খুব বেশিদিন বাসযোগ্য থাকবে না। পৃথিবীর হৃদয়ের উষ্ণতা যদি কমে যায় তাহলে চৌম্বক ক্ষেত্র এবং বায়ুমণ্ডল হারিয়ে পৃথিবীও মঙ্গল এবং বুধ গ্রহের মতো নিষ্প্রাণ হয়ে পড়বে।