সংক্ষিপ্ত

আফগানিস্তান তালিবানদের দখল নেওয়ার কথা মাথায় রেখে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে আলোচনা হয়েয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকে শান্ত ও স্থিতিশীল আফগানিস্তান গড়ে তোলার পক্ষে ভারতের সঙ্গে একমত হন তাঁরা। 

ভারতের (India) সঙ্গে মধ্য এশিয়ার (Central Asian Country) সম্পর্ক তিন দশকের পুরোনো। কিন্তু, তালিবানরা (Taliban) আফগানিস্তানের (Afghanistan) দখল নেওয়ার পর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গিয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা (Security System)। কারণ তালিবানরা সেখানে দখল নেওয়ার পরই ধীরে ধীরে আফগানিস্তানে শক্তি বৃদ্ধি করছে লস্কর, আল কায়দার মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি (Terror Group)। তা এ প্রকার উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মধ্য এশিয়ার দেশগুলির কাছে। আর এই পরিস্থিতির মধ্যেই এবার মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের সঙ্গে যৌথ কর্মসমিতি (Joint Working Group) তৈরি করতে চলেছে ভারত।    

বৃস্পতিবার একটি ভার্চুয়ার বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) পাশাপাশি ছিলেন কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম জোমার্ট টোকায়েভ, উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজাইওইয়েভ, তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এমোমালি রহমন, তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট গুরনাঙ্গুলি বেরদিমুহামেদেও এবং কিরঘিজস্তানের সাদির জাপারোভ। বৈঠকের পরে একটি সুদীর্ঘ ঘোষণাপত্রে নাম না করে পাকিস্তানের প্রসঙ্গে ভারতের উদ্বেগ জোরালো ভাবে রাখা হয়েছে। ভারত-মধ্য এশিয়ার প্রথম সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় মোদী বলেন, “আমাদের প্রত্যেকেরই আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে একই রকম উদ্বেগ এবং লক্ষ্য রয়েছে। আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ঘটনাক্রম সম্পর্কে আমরা সবাই অবহিত। এই পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং সুস্থিতির ক্ষেত্রে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা এখনও আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।”

আরও পড়ুন- আজ এনসিসি সমাবেশে ভাষণ দেবেন মোদী, সাজো সাজো রব রাজধানীতে

আফগানিস্তান তালিবানদের দখল নেওয়ার কথা মাথায় রেখে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে আলোচনা হয়েয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকে শান্ত ও স্থিতিশীল আফগানিস্তান গড়ে তোলার পক্ষে ভারতের সঙ্গে একমত হন তাঁরা। পাশাপাশি, দেশটির সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এই সম্মেলনের পর একটি বিবৃতিতে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, “বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলির প্রধানরা রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২৫৯৩ নম্বর (২০২১) প্রস্তাবের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে তা সমর্থন করেছেন। ২০২১ সালের ওই প্রস্তাব অনুযায়ী আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদীদের জায়গা দেওয়া যাবে না। এছাড়া, আফগানিস্তান নিয়ে একটি যৌথ কর্মসমিতি তৈরি করার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন তাঁরা।”

আরও পড়ুন, Air India: এয়ার ইন্ডিয়া হাতে পেয়েই নয়া বিধি ঘোষণা, একাধিক নিয়মে বদল আনছে সংস্থা 

দিল্লির তরফে আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্বেগ। আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি এবং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তায় তার অভিঘাত নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। তাঁরা পোক্ত, সুস্থির, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ আফগানিস্তান গঠনের প্রশ্নে ফের নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন। আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব এবং একতার দিকগুলি যেন রক্ষিত হয়, এমন কথাও বলেছেন তাঁরা। আফগানিস্তানের বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ পৌঁছনো নিয়েও কথা হয়েছে বৈঠকে।

আরও পড়ুন- 'জেহাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ দেশদ্রোহিতা', জঙ্গিদের আপিল খারিজ লাহোর হাইকোর্টের

উল্লেখ্য, সম্মেলনে পেশ করা বক্তব্যে মূলত তিনটি বিষয়ের উপর বাড়তি গুরুত্ব দেন মোদী। আফগানিস্তান ও উপমহাদেশে শান্তি বজায়, কাজাখস্তানের সাম্প্রতিক ইস্যুতে পাশে দাঁড়ানো, যেহেতু এই দেশ ভারতের তৈল আমদানির বড় অংশ এবং গোটা মধ্য এশিয়ার সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে এমন গভীর সংযোগের উদ্যোগ এই প্রথম। আপৎকালীন সঙ্কট পরিস্থিতিতেই এমন আত্মীয়তা গড়ে ওঠে বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।