সংক্ষিপ্ত
- নেপালে মহিলা সাংসদের বাড়িতে হামলা
- ভারতের হয়ে কথা বলার মূল্য চোকাতে হচ্ছে
- মানচিত্র প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন তিনি
- হামলার সময় নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল পুলিশ
ভারতীয় মূল ভূখণ্ডের অন্তর্গত লিপুলেখ, লিম্পুয়াধুরা ও কালাপানিকে অন্তর্ভুক্ত করে নেপাল নিজেদের নয়া মানচিত্র প্রকাশ করতে চলেছে। মানচিত্র বদলে করতে ২ দিন আগেই নেপালি সংসদে সংশোধন প্রস্তাব পাশ হয়েছে। কিন্তু অন্যায় ভাবে ভারতের জমিকে নিজেদের মানচিত্রে দেখানোর বিষয়টির সংসদে প্রতিবাদ করেছিলেন নেপালের মহিলা সাংসদ সরিতা গিরি। আর তারই মূল্য এবার চোকাতে হচ্ছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সরিতাকে। নেপালের সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব খারিজ করার জন্য সরব হওয়ায় সাংসদ সরিতা গিরির বাড়িতে হামলা চালানো হল।
অভিযোগ ভারতীয় বংশোদ্ভুত সাংসদের ঘরের বাইরে কালো পতাকা ঝুলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে দেশত্যাগ করার হুমকিও দিয়েছে হামলাকারীরা। গোটা ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠছে। পুলিশ-প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করায় আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন জনতা সমাজবাদী পার্টির সাংসদ।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনা ছড়ানোর জন্য জিনিপং-এর বিরুদ্ধে মামলা, সাক্ষী বানানো হল মোদী আর ট্রাম্পকে
গত মঙ্গলবার ভারতের তিন অংশ নিয়ে নয়া মানচিত্র প্রকাশের বিষয়ে সংবিধান সংশোধনী বিলে সিলমোহর দিয়েছে নেপালের সংসদ। নিয়মানুযায়ী, সংবিধান সংশোধনী বিলে আপত্তি জানানোর জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় পান সাংসদরা। যদি কোনও সাংসদদের আপত্তি থাকে বা কেউ কোনও সংশোধনী জমা দিতে চান, তাহলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেই আপত্তি জানাতে হয়। সেই মতো নয়া মানচিত্র নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সংশোধনী জমা দিয়েছিলেন জনতা সমাজবাদী পার্টির সাংসদ সরিতা গিরি। বিষয়টি জানাজানি শুরু হতেই রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সরিতা দেবীকে সংশোধনী প্রস্তাব প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত মহিলা সাংসদ। তার পরেই তাঁর বাড়িতে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা।
সংবিধান সংশোধন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নিজের আলাদা প্রস্তাব এনে গিরি সংশোধন প্রস্তাবকে খারিজ করার দাবি করেন। উনি পরিস্কার জানিয়ে দেন, চিন নিজেদের ইশারায় নেপালের নক্সার বদল আনতে চাইছে। দাবি করেন, নেপালের মানুষও চায়না যে ভারতের সাথে মানচিত্র নিয়ে কোন বিবাদ সৃষ্টি হোক। সরিতা জানান, এই বিষয়ে ভারত আর চিনের সাথে নেপালের কথা বলা উচিৎ।
ছবিতে দেখুন: অসমের তেল কূপের আগুনে জ্বলছে গ্রামের পর গ্রাম, দাবানলের গ্রাসে বিপন্ন এবার বন্যপ্রাণ
এদিকে সরিতা গিরির মানচিত্র নিয়ে বিরোধিতার বিষয়টিকে একেবারেই ভাল চোখে দেখছে না নেপাল সরকার। শোনা যাচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এই অবস্থায় তাঁর দল নেপালের সমাজবাদী পার্টিও সরিতার পাশে নেই। তাঁর সদস্যপদ বাতিল করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
এদিকে নেপাল সরকারের নতুন মানচিত্রে লিম্পিইয়াধুরা, কালাপানি আর লিপুলেখকে নিজেদের অংশ দেখানোয় ভারত সরকার কড়া প্রতিক্রিতা জানিয়েছে। বিদেশমন্ত্রক স্পষ্ট করে দিয়েছে, দেশের কোন অংশ নিয়ে এরকম দাবিকে ভারত সরকার স্বীকৃতি দেবে না। নয়াদিল্লির তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নেপাল যেই মানচিত্র তৈরি করেছে সেখানে ভারতের অংশ গুলোকে নিজেদের বলে দেখানো হয়েছে, এই একতরফা পদক্ষেপে ঐতিহাসিক তথ্য আর প্রমাণের কোন ভিত্তি নেই। যদিও নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি নয়া মানচিত্র প্রকাশকে সঠিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে দাবি করেছেন, ‘লিপুলেখ নেপালের ভূখণ্ড। ভারত গায়ের জোরে এবং সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে তা নিজেদের দখলে নিয়েছে।’