Pakistan Medicine: জম্মু কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকেই নতুন করে উত্তপ্ত ভারত-পাক সম্পর্ক। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি…   

Pakistan Medicine: জম্মু কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকেই নতুন করে উত্তপ্ত ভারত-পাক সম্পর্ক। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত সরকার (India Government)। এই পরিস্থিতিতে ভাঁড়ে মা ভবানী পাকিস্তান জলের পর এবার পড়েছে স্বাস্থ্য সঙ্কটে। জানা গিয়েছে, পাকিস্তান ওষুধ সরবরাহ বজায় রাখতে 'জরুরি' পদক্ষেপ নিয়েছে।

একদিকে যখন পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে সমস্ত প্রকার বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তানে ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সরকার দ্রুত বিকল্প উৎস থেকে ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী আমদানির জন্য জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। স্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলোর উৎপাদন বাড়ানো এবং অন্যান্য দেশ থেকে দ্রুত আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সূত্রের খবর, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের ফলে পাকিস্তানে ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রীর চাহিদা পূরণে "জরুরি পদক্ষেপ" নেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এই সরবরাহ নিশ্চিত করতে জরুরি প্রস্তুতি গ্রহন শুরু করেছে।

ভারতের জলচুক্তি স্থগিত এবং বাণিজ্য বন্ধের এই জোড়া ধাক্কা পাকিস্তানের অর্থনীতি এবং জনস্বাস্থ্যের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বাণিজ্য বন্ধের কারণে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান সরকার কিভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। অন্যদিকে, ওষুধ শিল্পের উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি না থাকলেও প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান, জানালো ড্রাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

পাকিস্তানের ড্রাগ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (DRAP) জানিয়েছে যে, ভারতের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার ওষুধ শিল্পের উপর কী প্রভাব পড়বে, সেই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা না হলেও, সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলার জন্য আগাম পরিকল্পনা তৈরি রাখা হয়েছে। এই বিষয়ে DRAP-এর এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "২০১৯ সালের সংকটের পর থেকেই আমরা এই ধরনের জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিলাম। আমাদের ওষুধের চাহিদা মেটাতে আমরা এখন বিকল্প পথগুলি সক্রিয়ভাবে খুঁজছি।"

বর্তমানে, পাকিস্তান তার প্রয়োজনীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কাঁচামালের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য ভারতের উপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে রয়েছে অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (API) এবং বিভিন্ন উন্নত থেরাপিউটিক পণ্য। ভারতের বাণিজ্য বন্ধের ফলে এই সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তবে DRAP বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানিয়েছে পাকিস্তান সরকার।

অন্যদিকে, সর্বভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে যে, পাকিস্তানের মন্ত্রী হানিফ আব্বাসি সম্প্রতি এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে ভারতকে পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি বলেন, ''পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার - যেখানে ঘৌরি, শাহিন ও গজনভির মতো অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ১৩০টি পরমাণু বোমা রয়েছে - শুধুমাত্র ভারতের জন্যই তৈরি করে রাখা হয়েছে।''

সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করে ভারত যদি পাকিস্তানের জল সরবরাহ বন্ধ করার দুঃসাহস দেখায়, তাহলে তাদের "পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে" হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন পাকিস্তানের মন্ত্রী হানিফ আব্বাসি। তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, ''পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রাগার প্রদর্শনের জন্য নয়। সেগুলি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গোপন স্থানে রাখা আছে এবং কোনো প্রকার উস্কানি পেলে তা আঘাত হানতে প্রস্তুত।''

উল্লেখ্য, কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলায় উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান। বেছে বেছে হিন্দুদের নৃশংস এই খুনের প্রতিবাদে ইতিমধ্যে পড়শী দেশকে শিক্ষা দিতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার (India Pakistan Clash)। বাতিল সার্ক ভিসা, স্থগিত রাখা হয়েছে সিন্ধু জলচুক্তি। আর ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যেন আরও তেড়েফুঁড়ে উঠেছে পাকিস্তান। কারণ, এবার ভারতকে সরাসরি পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দিয়েই দিলেন খোদ পাক মন্ত্রী। 

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।