সংক্ষিপ্ত

তিনি নিজেই কার্গিল হামলার পরিকল্পনা করেন। জানা যায় প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কাছ থেকেও গোপন করেছিলেন সেই পরিকল্পনার খবর। যতদিন তিনি সেনাপ্রধান ছিলেন ততদিন তিনি ছিলেন পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি।

পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মুশারফ দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়। তাকে পাকিস্তানের বাইরে থাকতে বাধ্য করা হয়। তিনি পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক যাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। মুশারফ তার শাসনকালে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় ভিলেন। ১৯৯৯ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে লড়াই হলে তিনি নিজেই ফ্রন্ট নেন। তিনি কিছু সময়ের জন্য পাকিস্তানের জন্য নায়ক এবং ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় ভিলেন ছিলেন। এটা তার চরম নিষ্ঠুর কাজ ছিল যে তিনি তার সেনাদের ভারত আক্রমণ করার জন্য কার্গিলের মত একটি এলাকায় পাঠিয়েছিলেন।

তিনি নিজেই কার্গিল হামলার পরিকল্পনা করেন। জানা যায় প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কাছ থেকেও গোপন করেছিলেন সেই পরিকল্পনার খবর। যতদিন তিনি সেনাপ্রধান ছিলেন ততদিন তিনি ছিলেন পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি। প্রধানমন্ত্রী তাদের হাতের পুতুলই থেকে গেছেন। অবসর নেওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর পতন।

পাকিস্তানে সেনাপ্রধান বরাবরই বেশি ক্ষমতাবান। সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানে ওস্তাদ হয়েছে। পারভেজ মোশাররফের সময় পর্যন্ত সেনাবাহিনী ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। নওয়াজ শরীফ ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সাথে সমঝোতার পরিকল্পনা তৈরি করছিলেন এবং এখানে পারভেজ মুশারফ ষড়যন্ত্র করছিলেন।

অটল বিহারী বাজপেয়ী বাসে করে লাহোর যাচ্ছিলেন কিন্তু ১৯৯৯ সালে জেনারেল পারভেজ মুশারফ সিংহাসন উল্টে দেন। মুশারফ নিজেই কার্গিল হামলার পরিকল্পনা করেন এবং প্রচুর সেনাকে যুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। যা আখেরে তাঁর কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিয়েছিল। এই যুদ্ধে যথারীতি জয় পেয়েছিল ভারত।

মুশারফ ছিলেন স্বৈরশাসক, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন

জেনারেল পারভেজ মুশারফের উদ্দেশ্য সবসময়ই অত্যন্ত বিপজ্জনক ছিল। নওয়াজ শরিফ এটা জানতেন। তারা আশঙ্কা করেছিল যে এই ব্যক্তি একটি অভ্যুত্থান ঘটাতে পারে। তিনি পারভেজ মুশারফকে সেনাপ্রধানের পদ থেকে অপসারণের চেষ্টা করলেও নিজেই ফাঁদে পড়ে যান। তিনি জেনারেল আজিজকে এই দায়িত্ব দিলেও তা ছিল অকার্যকর। মুশারফ এ খবর পেয়ে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটান। ক্ষমতাচ্যুত হন নওয়াজ শরিফ।

মুশারফ যে দেশে জন্মেছিলেন সেই দেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন

পারভেজ মোশাররফ সম্পর্কে মজার বিষয় হল তিনি দিল্লির দরিয়াগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দেশভাগ হলে তার পরিবার করাচিতে বসতি স্থাপন করে। তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধানের পদে পৌঁছান। ১৯৯৯ সালে, তিনি নওয়াজ শরিফ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সিংহাসন উল্টে নিজেই ক্ষমতা দখল করেন। তিনি ২০ জুন ২০০১ থেকে ১৮ আগস্ট ২০০৮ পর্যন্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। এ সময় তিনি একটানা ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন।