সংক্ষিপ্ত

  • ব্রাজিলের বেলোমন্টে হাইড্রোইলেকট্রিক ড্যাম প্রতিবাদের নেতা 
  • আমাজন রক্ষায় যিনি আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়েছিলেন 
  • ব্রাজিলের আদিবাসীরা যাকে ‘বাবা’, ‘নেতা’, ‘যোদ্ধা’ বলে আখ্যায়িত করে
  • সেই পরিবেশবন্ধু পাউলিনহো পাইয়াকান মারা গেলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে

পৃথিবীর ফুসফুস বলে পরিচিত আমাজন জঙ্গলের অন্যতম রক্ষাকর্তা, পরিবেশবন্ধু ও আদিবাসী নেতা পাউলিনহো পাইয়াকান মারা গেলেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলীয় পারা অঙ্গরাজ্যের একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। 

আদিবাসী জনগণের অধিকার লংঘনের প্রতিবাদে ২০১৭ সালে ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়ায় যে বিক্ষোভ আন্দোলন হয়েছিল তিনি ছিলেন তার নেতৃত্বে। এছাড়া তিবি আমাজন বনাঞ্চলের সুরক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে আসছিলেন।  

১৯৮০ সালে ব্রাজিলের বেলো মন্টে বিশ্বের তৃতীয় দীর্ঘতম হাইড্রোইলেকট্রিক ড্যাম প্রজেক্টের প্রতিবাদে সামিল হয় বহু পরিবেশ সংগঠন। কায়াপো জনগোষ্ঠীর নেতা কায়াপো সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিকভাবে নজরে আসেন। 

ওই বাঁধ নির্মাণের বিপক্ষে তীব্র আন্দোলনের কারণে দীর্ঘতম বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয় বিশ্ব ব্যাংক। তবে থামানো যায়নি সেই বাঁধ নির্মাণকাজ। 


৬৫ বছর বয়সী এই আদিবাসী নেতার বিরুদ্ধে ১৯৯৮ সালে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ধর্ষণে সহযোগিতার দায়ে তার স্ত্রীও দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তবে সমর্থকদের দাবি, পাইয়াকানের সুনাম নষ্ট করতে এবং আমাজন রক্ষায় তাঁর তৎপরতাকে থামিয়ে দিতেই তাঁকে ধর্ষণের মামলায় জড়ানো হয়েছিল।


পরিবেশবাদী সংগঠন প্লানেট আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা গার্ট-পিটার ব্রুচ বলেছেন, আমাজন রক্ষার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পায়াকান সারাবিশ্বের আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে পুরোটা জীবন ব্যয় করেছেন।

চরম সাহসী এই আদিবাসী নেতাকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষা ও পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য ‘একজন বাবা’, ‘একজন নেতা’ ও ‘একজন যোদ্ধা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ব্রাজিলের আদিবাসীদের সংগঠন এপিআইবি। 

প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের সবচেয়ে ভয়াবহ আঘাতের শিকার ব্রাজিল। আমাজন বনাঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই রেইনফরেস্টের ২৮০ জনের বেশি আদিবাসী ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। 

পাইয়াকান নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন; ব্রাজিলের যেসব অঞ্চলে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের দাপট বেশি পারা তার মধ্যে একটি।