সংক্ষিপ্ত

সমুদ্রের অন্যতম ভয়ঙ্কর প্রাণী গ্রেট হোয়াইট শার্ক (The Great White Shark) বা সাদা হাঙ্গর। মেক্সিকোর ইসলা গুয়াডালুপে'র (Isla Guadalupe, Mexico) এমনই এক সাদা হাঙ্গরের গায়ে বিশাল কামড়ের দাগ ঝড় তুলেছে গোটা বিশ্বে। 

বিশ্বে সাড়া ফেলে দিল একটি গ্রেট হোয়াইট শার্ক (The Great White Shark) বা সাদা হাঙ্গরের ছবি। ৪০ বছরের জলিল নাজাফভ (Jalil Najafov), একজন হাঙ্গর সংরক্ষণবাদী (Shark Conservationist) এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা । মেক্সিকোর ইসলা গুয়াডালুপে'তে (Isla Guadalupe, Mexico) ডাইভিং-এর সময় প্রায় ১৫ ফুট দীর্ঘ এই হাঙ্গরটিকে দেখেছিলেন জলিল, তিনিই ছবিটি তুলেছেন। তবে হাঙ্গরটির শরীরের একপাশে, একটি বিশাল কামড়ের দাগ রয়েছে, যা জলিলকে অবাক করেছিল। এমনিতে খুনে তিমি (Killer Whale) ছাড়া আর কোনও প্রাণী নেই, যারা সাদা হাঙ্গরকে আক্রমণ করতে পারে। কিন্তু, তার কামড়ের দাগও এত বড় হওয়ার কথা নয়। বর্তমানে এই কামড়ের চিহ্নটা নিয়েই বিশ্বজোড়া চর্চা শুরু হয়েছে। সকলেরই প্রশ্ন, এমন দাগের পিছনে কী কারণ হতে পারে, তাহলে কি সমুদ্রের জলে আমাদের অজ্ঞাতে রয়েছে কোনও রাক্ষুসে প্রাণী? 

জলিলের তোলা ছবিতে হাঙ্গরটিকে (Shark) সাগরে সাঁতার কাটতে দেখা গিয়েছে। তার গায়ে একটি বড় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, যা তার দুটি পাখনার প্রস্থ বরাবর বিস্তৃত। দাগটি বিশাল, রক্তহীন এবং বৃত্তাকার। হাঙরটি কখন বা কীভাবে এবং সবথেকে বড় কথা হল কে কামড়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। জলিল, মূলত আজারবাইজানের (Azerbaijan) বাসিন্দা। 'দ্য সান'কে সে জানিয়েছে, হাঙরটির গায়ে ওই কামড়ের দাগ দেখে তিনি সত্যিই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, অনেক বছর ধরে হাঙর নিয়ে কাজ করলেও, তিনি তাঁর জীবনে এমনটা আগে দেখেননি। এত বড় কামড়ের দাগ তিনি আগে কখনও দেখেননি তিনি। একটি প্রমাণ মাপের হাঙ্গরের গায়ে এত বড় কামড়ের দাগ দেখে তিনি বিস্মিত হয়ে যান। তাঁর মনে প্রশ্ন জেগেছিল, এটা কি সত্যি? 

আরও পড়ুন - আকাশে রহস্যময় আগুনের গোলা - তারপরই ঘূর্ণিঝড়-ভূমিকম্প, কী ঘটল মেক্সিকোয়

আরও পড়ুন - করোনাভাইরাসের মারণ কাঠি লুকিয়ে রয়েছে হাঙরের পেটে, আশঙ্কার খবর শোনালেন বিশেষজ্ঞরা

আরও পড়ুন - বিশাল ভূমিকম্পে কেঁপে গেল কয়োকশো কিলোমিটার এলাকা - রিখটার স্কেলে মাত্রা ৭, জারি সুনামির সতর্কতা

জলিল, তাঁর ইনস্টাগ্রাম পৃষ্ঠায় কামড়ের চিহ্ন-সহ হাঙ্গরটির একটি ছবি পোস্ট করেছেন। সেই ছবিটি নেটিজেনদের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলেছে। হাঙ্গরটির আঘাত নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে, ওই আঘাতের অনেক রকম সম্ভাব্য কারণ জানিয়েছেন। পরে জলিল জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেন কামড়ের চিহ্নের কারণ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। যেখানে মূলত দুটি মত উঠে এসেছে। একদল বলছেন, মিলনের সময় হাঙ্গরটির যৌনসঙ্গী ওই কামড় দিয়েছে। অন্যদলের মত এটা মিলনের নয় আগ্রাসনের চিহ্ন। কেউ কেউ অবশ্য মনে করছেন, সমুদ্রের জলে, আমাদের নাগালের মধ্যেই কোনও অজ্ঞাত রাক্ষুসে প্রাণী রয়েছে। তারই কামড়ের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে হাঙ্গরটি। 

View post on Instagram
 

জলিল অবশ্য শুধু সোশ্যাল মিডিয়া জনতার মত নিয়ে বসে নেই। তিনি ছবিটি বেশ কয়েকজন হাঙ্গর বিশেষজ্ঞের কাছেও পাঠিয়েছিলেন। ডা. ট্রিস্টাঁ গাট্রিজ (Dr. Tristan Guttridge) সঙ্গমের কামড়ের তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি সাফ জানিয়েছেন, সঙ্গমের কামড়ের ক্ষত এত গভীর হয় না। আরেক বিশেষজ্ঞ মাইকেল ডোমেয়ার (Michael Domeier) মনে করছেন, কোনও অজানা রাক্ষুসে প্রাণী নয়, গ্রেট হোয়াইট শার্কটিকে সম্ভবত অন্য কোনও হাঙ্গর আক্রমণ করেছিল। তারই কামড়ের দাগ এটি। তবে চিহ্নটা এতটাই বড়, যে এই নিয়ে বিতর্ক এখনও চলছে। আর ছবিটি তুমুল ভাইরাল (Viral Photo) হয়েছে।