সংক্ষিপ্ত
হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, ইউক্রেন সঙ্কট মেটাতে উদ্যোগী বাইডেন। ইউক্রেন নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যে কোনও মুহূর্তে আলোচনা করতে পারেন তিনি।
চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত (Ukraine-Russia Conflict)। যুদ্ধের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন বিশ্ব। আর তার মধ্যেই কিছুটা আশার আলো দেখাল রাশিয়া ও ফ্রান্স (Russia and France)। কারণ ইউক্রেন সমস্যা (Ukraine Crisis) মেটাতে রাজি হয়েছে তারা। তার জেরে এবার এবার ইউক্রেন সমস্যা মিটবে বলে মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, রবিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) সঙ্গে ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরেঁর (Emmanuel Macron) টেলিফোনে কথা হয়েছে। ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দু’দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্য়ে প্রায় ২ ঘণ্টা কথা হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতির কূটনৈতিক সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেও সম্মত হয়েছেন তাঁরা। মাকরঁ-র অফিস থেকে জানানো হয়েছে, পুতিন বেলারুশ থেকে রাশিয়ান সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন।
অন্যদিকে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনার জন্য পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আমেরিকার একটি টক শোয়ে একথা জানিয়েছেন সেক্রেটারি অফ স্টেটস অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, "আমরা যা প্রত্যক্ষ করছি, তাতে মনে হচ্ছে এটা (ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া সেনার টহলদারি) অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। যে কোনও মুহূর্তে ইউক্রেনের উপর আক্রমণ হতে পারে।"
আরও পড়ুন- পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, ইউক্রেন দূতাবাস কর্মীদের পরিবারকে দেশে ফেরার নির্দেশ নয়াদিল্লির
ইউক্রেন সমস্যা
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। কিন্তু, তারপর দুই পক্ষই উত্তেজনার আঁচ কিছুটা কমানোয়, দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী এলাকায় অচলাবস্থা রয়েছে। তবে মাঝে মধ্যেই সেখানে দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এদিকে ২০২১ সাল থেকে এই সংঘর্ষ ক্রমে বেড়েই চলেছে। গত বছর অক্টোবরে মাস থেকেই, সম্ভাব্য আক্রমণের ছুতোয় ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রাশিয়া তাদের সৈন্য এবং সামরিক সরঞ্জাম সরানো শুরু করেছিল। বাণিজ্যিক উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাস ধরে তারা ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য ভারী অস্ত্র ইউক্রেনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সেই সময়ই মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা সতর্ক করেছিলেন, ২০২২-এর শুরুতেই ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি রুশ সেনা জড়ো হয়েছে ইউক্রেন সীমান্তে। এই পরিস্থিতিতে ক্রমেই বাড়ছে উত্তেজনার পারদ। রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেন থেকে ন্যাটো (NATO) বাহিনীকে সরাতে হবে। কিন্তু, আমেরিকা এবং ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি সেই দাবিগুলি প্রত্যাখ্যান করে, রাশিয়াকে পাল্টা প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে, বাইডেন ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশ পোল্যান্ড এবং রোমানিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রায় তিন হাজার মার্কিন সেনার মোতায়েন করেছেন। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেই অবশেষে ইউক্রেন সমস্যা মেটাতে রাজি হয়েছে রাশিয়া ও ফ্রান্স। মাকরেঁর অফিস থেকে জানানো হয়, "ইউরোপে নতুন করে শান্তি ও সুরক্ষার স্বার্থে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সম্মত হয়েছে দু’দেশ।"
আরও পড়ুন- তীব্র হচ্ছে ইউক্রেন সঙ্কট, রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড়সড় আর্থিক নিষেধাজ্ঞার পথে আমেরিকা
অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, ইউক্রেন সঙ্কট মেটাতে উদ্যোগী বাইডেন। ইউক্রেন নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যে কোনও মুহূর্তে আলোচনা করতে পারেন তিনি। ইউক্রেন নিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- ইউক্রেন সীমান্তের উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ্যে, ভয় ধরাচ্ছে রাশিয়ার ফাইটার জেট
এদিকে ইউক্রেনে (Ukraine crisis) ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের (Indian Embassy officials) পরিবারকে ভারতে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সে দেশে থাকা ভারতীয় নাগরিকদেরও ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ভারতীয় ছাত্রদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউক্রেন ছেড়ে যেতে বলা হয়েছিল। ইউক্রেনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, যে সেদেশের পরিস্থিতি সাধারণ নাগরিকদের জন্য সঠিক ও নিরাপদ নয়। উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। তাই দূতাবাসের কর্মীদের পরিবারকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।