সংক্ষিপ্ত
প্রজনন ক্ষমতা ছাড়া কীভাবে সম্ভব বংশ রক্ষা? বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এলো নয়া তথ্য। প্রমাণিত যৌন ক্ষমতা ছাড়া ও কীভাবে দীর্ঘকাল বেঁচে থাকা সম্ভব।
নিজস্ব প্রজাতিকে রক্ষা করতে সহবাস বা যৌন ক্ষমতা (Sexual Power) থাকা অবশ্যই প্রয়োজন। অথচ পৃথিবীতে এমন প্রজাতির ও প্রাণী আছে যারা যৌন ক্ষমতাবিহীন হয়ে ও বংশ (Breed) রক্ষা করে যাচ্ছে। কিন্তু সহবাস ছাড়া তা কী করে সম্ভব? তাঁর উত্তর খুঁজে বের করলেন একদল বিজ্ঞানী।
আরও পড়ুন- নতুন সম্পর্কের সূচনা, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ঐতিহাসিক বৈঠক
বিজ্ঞানীরা (scientists) তাঁদের গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, একটি অতিক্ষুদ্র প্রজাতির পোকা অর্থাৎ যার আয়তন এক মিলিমিটারের পঞ্চমাংশ সে যৌন ক্ষমতা (Sexual Power ) ছাড়াই বাঁচতে পারে। 'ওপিয়েলা নোভা' (Oppiella nova) একটি মহিলা প্রজাতির কীট এবং এই জাতীয় পোকার রূপকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন 'পৌরাণিক অযৌন কেলেঙ্কারি' (ancient asexual scandal)। বিজ্ঞানীরা উদ্ধার করেছেন যে কিভাবে এই জাতীয় পোকা নিজেদের বংশ রক্ষা করে চলেছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুসারে তারা সম্ভবত জাততাত্ত্বিকদের সামনে লুকিয়ে থাকে।
আরও পড়ুন- পাকিস্তানকে অস্ত্রসাহায্য থেকে ভারত সীমান্ত অশান্তি তৈরির চেষ্টা, দুমুখো সাপের নীতি চিনের
এই প্রসঙ্গে ডঃ আলেকজান্ডার ব্র্যান্ড্ট (Dr Alexander Brandt) বলেছেন এক্ষেত্রে কখনও বা গুপ্ত যৌন বিনিময় (Cryptic sexual exchange) হতে পারে। যেমন, কখনও জৈব যোগ দ্বারা একটি প্রজনন পুরুষ তৈরি করা যেতে পারে। তবে তার সম্ভাবনা একেবারেই নগন্য বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানী। যদিও এতদিন ধরে মনে করা হতো যে প্রজনন ক্ষমতা বিহীন কোনো প্রাণী বেঁচে থাকা কার্যত অসম্ভব। এবার 'কোলন এবং গোটেনজেন' (Cologne and Göttingen) বিশ্ববিদ্যালয়ের আবিষ্কার সেই তত্ত্বকে ভুল প্রমাণিত করেছে। তারা প্রমান করেছেন যে ওপিয়েলা নোভা জাতীয় পোকা প্রজনন ক্ষমতা ছাড়া শুধু হাজার কেন লক্ষ লক্ষ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন- Durga Puja ২০২১: দুর্গাপুজোয় ভিড় এড়াতে নয়া নির্দেশিকা জারি করলো কেন্দ্র
বিজ্ঞানীদের মতানুসারে, সাধারণত দুজন বা দুটি মা-বাবার থাকার এক বিরাট সুবিধা রয়েছে। কারণ মানুষসহ যে কোনো দুটি ক্রোমোজোম (chromosome) বিশিষ্ট প্রাণীরই জেনেটিক বৈচিত্র রয়েছে। অর্থাৎ গড়ে দুটি জেনেটিক তথ্যের মধ্যে যদি মিল পাওয়া সম্ভব ও হয় আদতে গড়ে দুটি মানুষের মধ্যে এই মিল পাওয়া প্রায় অসম্ভব। এই জেনেটিক বৈশিষ্ট্যই অনেক সময় প্রাণীকে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের দুটি কপি একটি পৃথক মিউটেশন সৃষ্টি করে এবং স্বাধীনভাবে বিকাশ লাভ করে। এটিকে বলা হয় 'মেসেলিন এফেক্ট' (Meselson effect) এবং এটি কেবলমাত্র সেই সকল প্রজাতির মধ্যেই লক্ষ করা যায় যারা প্রজনন ক্ষমতাবিহীন।
আরও পড়ুন- Rabindranath Tagore: 'গীতাঞ্জলির অনুবাদ এখানে বসে, লন্ডনের সেই বাড়িই আজ বিক্রির পথে
লোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও বিবর্তন বিভাগের অধ্যাপক তানজা শোয়ান্ডার (Prof. Tanja Schwander) বলেছেন, এই 'মেসেলিং এফেক্ট' (Meselson effect) বিষয়টি শুনতে যতটা সহজ বলে মনে হচ্ছে আদতে তা নয়। যৌন প্রজনন ছাড়া এই প্রজাতির দীর্ঘকাল বেঁচে থাকা বিরল বিশ্বাস করা হলেও বর্তমানে গবেষণায় প্রমাণিত যে অসম্বব নয়। যদিও জীববিজ্ঞানী ও প্রাণীবিজ্ঞানীদের (biologists and zoologists) একাংশ মনে করেন যে যৌনতা ছাড়াই বিবর্তন কীভাবে কাজ করে তা বোঝার ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র পোকার প্রজাতি তাদের জন্য চমক রাখার ক্ষমতা রাখে।
আরও পড়ুন- ভারতের সৌজন্য, প্রত্যেক রাষ্ট্রনায়ককে দেওয়া নরেন্দ্র মোদীর উপহার নজর কাড়ল বিশ্বের