Trump On Tariff: ভারতের উপর ৫০০ শতাংশ কর চাপাতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। হঠাৎ কেন এত পরিমাণ করের বোঝা?  বিশদে জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন…  

Trump On Tariff: ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন করে ঝড় তুলতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশ, যেমন ভারত ও চীনের উপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাবিত একটি নিষেধাজ্ঞা বিলে তিনি সমর্থন করেছেন বলে জানা গিয়েছে। 

এই বিলের মূল উদ্দেশ্য হলো, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা করা এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নতুন করে সাজানো। সূত্রের খবর, মার্কিন সেনেটে প্রস্তাবিত এই বিলটি যদি পাশ হয়, তবে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও জ্বালানি পণ্য ক্রয়কারী দেশগুলোকে তাদের পণ্যের উপর অভূতপূর্ব হারে শুল্ক দিতে হবে। রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহামের মতে, ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে এই বিলকে সমর্থন জানিয়েছেন। গ্রাহাম বলেন, ‘’ভারত ও চীন বর্তমানে পুতিনের দেশের ৭০ শতাংশ তেলের বড় ক্রেতা। যা রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রকে সচল রাখতে সাহায্য করছে। তাই এই শুল্ক আরোপের মাধ্যমে রাশিয়ার আয়ে বড়সড় আঘাত হানাই লক্ষ্য।''

এই পদক্ষেপে ভারত ও চীনের মতো দেশগুলোর অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এই অবস্থায় ট্রাম্পের এই নতুন নীতি আন্তর্জাতিক বাজারে আরও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

 ট্রাম্প সম্প্রতি একটি ক্যাবিনেট বৈঠকে জানিয়েছেন যে, তিনি ইউক্রেন সংক্রান্ত একটি বিল নিয়ে সক্রিয়ভাবে ভাবনাচিন্তা করছেন। তিনি বলেন, "এটি সম্পূর্ণই আমার ইচ্ছা। তারা এটি পাশ করলে, আমি তা বাতিল করতে পারি - সম্পূর্ণই আমার ইচ্ছাধীন। এবং আমি এটি খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছি।"

অন্যদিকে, ইউক্রেনের সঙ্গে সংঘাত দীর্ঘায়িত করার জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিনের উপর ট্রাম্প ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করেছেন। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবর অনুযায়ী, তিনি প্রতিরক্ষা বিভাগকে ইউক্রেনে প্রতিরক্ষা অস্ত্রের সরবরাহ বাড়ানোর নির্দেশও দিয়েছেন, যা তাঁর কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত বলেই মনে করা হচ্ছে। 

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম সম্প্রতি একটি আইনের প্রশংসা করে এটিকে একটি "ব্রেকথ্রু" বা যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, ট্রাম্প আইনপ্রণেতাদের এই বিল নিয়ে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছেন।

গ্রাহাম আরও বলেন, "যদি আপনারা রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনেন এবং ইউক্রেনকে সাহায্য না করেন, তাহলে আপনাদের পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় ৫০০% শুল্কের মুখে পড়বে।" শুধু তাই নয়, এই আইন কার্যকর হলে রাশিয়ার জ্বালানি নির্ভর দেশগুলোর ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন এনে ট্রাম্প সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো কানাডার আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক। যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। কানাডা যদি এর প্রতিক্রিয়ায় কোনও পদক্ষেপ নেয়, তাহলে এই শুল্ক আরও বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

এছাড়াও, আরও সাতটি দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্কের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিলিপাইন, মলদোভা, লিবিয়া এবং শ্রীলঙ্কা। যদিও এই দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে গণ্য করা হয় না। তবুও এই পদক্ষেপ ট্রাম্প প্রশাসনের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির অধীনে বাণিজ্য সুরক্ষাবাদকে আরও জোরদার করবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

এই নতুন শুল্ক আরোপের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে। যদি এই নিয়মগুলি কার্যকর হয়, তবে এটি রাশিয়ার শক্তি রপ্তানি থেকে আয় বন্ধ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক প্রচেষ্টাগুলির মধ্যে একটি হবে। এবং এটি বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিতে পারে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।