আমেরিকার ট্রাম্প সরকার ৬০০০ এরও বেশি বিদেশী ছাত্রের ভিসা বাতিল করেছে। এর মধ্যে অনেক ভারতীয় ছাত্রও রয়েছে। ছোটখাটো অপরাধ, সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে সমর্থন, এবং অন্যান্য অভিযোগই এর প্রধান কারণ।
আমেরিকান ছাত্র ভিসা বাতিল: আমেরিকার ট্রাম্প সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিশেষ করে অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করেছে। এই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য বড় ধাক্কা। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে এই বছর এখনও পর্যন্ত ৬০০০ এরও বেশি আন্তর্জাতিক ছাত্রের ভিসা বাতিল করেছে আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রক। এই পদক্ষেপ বিশেষ করে ভারতীয় ছাত্রদের জন্য বড় ধাক্কা।
আধিকারিকদের মতে, ভিসা বাতিলের প্রধান কারণ হলো আমেরিকার আইন লঙ্ঘন এবং জাতীয় নিরাপত্তার আশঙ্কা। প্রায় ৪০০০ ভিসা বাতিল হয়েছে আমেরিকার আইন লঙ্ঘনের জন্য। এদের মধ্যে মারধর, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, চুরি ইত্যাদি অপরাধে জড়িতরা রয়েছে। আরও ২০০-৩০০ ভিসা বাতিল হয়েছে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে সমর্থন করার অভিযোগে।
তবে, কোন গোষ্ঠীগুলোর কথা বলা হচ্ছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের বিধান অনুযায়ী। এই আইন অনুসারে, সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত বিদেশীরা আমেরিকায় প্রবেশের অযোগ্য বলে বিবেচিত।
ছাত্রদের উপর নজরদারি
আমেরিকায় পড়াশোনা করা ছাত্রদের উপর নজরদারি আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প সরকার। এর অংশ হিসেবে ছাত্রদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট এবং তাদের পূর্ণাঙ্গ পটভূমি যাচাই করা হচ্ছে। ইসরায়েল-গাজা সংঘর্ষ সংক্রান্ত ছাত্র বিক্ষোভের উপর ট্রাম্প সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে। অনেক ফিলিস্তিন-সমর্থক বিক্ষোভকারী ভিসা নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
এই বিক্ষোভে ইহুদি-বিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সরকার অভিযোগ করেছে। ২০২৫ সালের মার্চে টাফ্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্রী রুমেসা ওজতুর্কের ভিসা বাতিল করে ফেডারেল এজেন্টরা তাকে আটক করে। কয়েক সপ্তাহ আইসিই হেফাজতে থাকার পর, মে মাসে একজন ফেডারেল বিচারকের আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এই ঘটনাগুলো ছাত্রদের ভবিষ্যতের উপর বড় প্রভাব ফেলবে এবং আমেরিকার সুনাম ক্ষুন্ন করবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উদ্বেগ
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমেরিকার হার্ভার্ড, ব্রাউন, ক্যালিফোর্নিয়া, পেনসিলভানিয়া ইত্যাদি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ছোটখাটো ভুলে ভিসা বাতিল করা ঠিক নয় এবং এই নীতি আন্তর্জাতিক ছাত্রদের মধ্যে আমেরিকায় পড়াশোনার আগ্রহ কমিয়ে দিতে পারে বলে তারা মনে করছে। ইতিমধ্যেই কিছু ছাত্র আদালতের আশ্রয় নিয়েছে।


