সংক্ষিপ্ত
এয়ার ইন্ডিয়া ও নেপাল এয়ারলাইন্সের বিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটতে পারত শুক্রবার। কিন্তু অল্পের জন্য রক্ষা পাওয়া গেছে। তবে বরখাস্ত দুই কর্মী,
মাঝ আকাশেই ঘটে যেত ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। কারণ শুক্রবার এয়ার ইন্ডিয়া ও নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান মাঝ আকাশেই মুখোমুখি চলে এসেছিল। কিন্তু অল্পের জন্য দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। রবিবার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সতর্কীকরণ ব্যবস্থাগুলি দুই বিমানের পাইলটদের সতর্ক করেছিল। যার ফলে তারা হাতে সময় থাকতে থাকতে পদক্ষেপ করতে পেয়েছিল। তবে কর্তব্যে অবহেলার জন্য ইতিমধ্যেই দুই কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত হবে বলেও জানিয়েছে নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বা CAAN -এর মুখপাত্র জগন্নাথ নিরুলা জানিয়েছেন কর্তৃব্যে অবহেলার জন্য দুই কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে মালয়েশিয়ার কুয়ালালাপুর থেকে কাঠমান্ডুর উদ্দেশ্যে নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান যাত্রা শুরু করেছিল। সেটির সঙ্গেই মাঝ আকাশে ধাক্কা লাগার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটির। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি নয়া দিল্লি থেকে কাঠমান্ডু আসছিল।
নেপালের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি ১৯ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে নামছিল। সেখানে নেপাল এয়ারলাইন্সের বিমানটি একই স্থানে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ছিল। মুখপাত্র জানিয়েছেন দুর্ঘটনা এড়াতে নেপালের বিমানটিকে ৭ হাজার ফুট নিচে নামিয়ে আনা হয়।
নেপাল CAAN এর মুখপাত্র জানিয়েছেন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার সময় এয়ার ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা দুই কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন ঘটনাটি নিছকই দুর্ঘটনা ছিল নাকি এর পিছনে কোনও নাশকতার ছক ছিল তাও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি নেপালে ভয়ঙ্কর বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ATR 72 বিমানে চার ক্রু মেম্বার-সহ ৭২ জন যাত্রী ছিল। যাদের মধ্যে ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার কবলে পড়া পাঁচ ভারতীয় নাগরিকও মারা গিয়েছে। সকলেই উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা। চার বন্ধু প্যারাগ্লাইডিং-এর টানেই রিসর্ট শহর পোখরায় যেতে চেয়েছিল। কিন্তু পোখরায় নতুন বিমান বন্দরে অবতরণের আগেই ধ্বংস হয়ে যায় ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ATR 72 বিমান।
এই বিমানে তোলা ভয়ঙ্কর ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, বিমানের মধ্যে নিশ্চিন্তে বসে রয়েছে যাত্রীরা। বিমানের মধ্যে থেকে বার্ড আই ভিউতে দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের কোলে সাজান পোখরা শহর। তখনও মনে হয়নি যে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সব ধ্বংস হয়ে যাবে! কিন্তু সেই ভিডিও মধ্যেই হঠাৎ শোনা যায় একটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ। কেঁপে ওঠে হাতের মুঠোয় থাকা সেলফোনটি। তারপরই ভয়ঙ্কর আগুনের ছবি গোটা স্ক্রিন জুড়ে।
দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল পাঁচ ভারতীয়র। অভিষেক কুশওয়াহা (২৫), বিশাল শর্মা( ২২), অনিল কুমার রাজভর (২৭) ,সোনু জয়সওয়াল (৩৫) ও সঞ্জয় জয়সোয়াল। মৃতের মধ্যে চারজনই প্যারাগ্লাইডিং-এর জন্য পোখরা গিয়েছিল। চার জন শুক্রবারই ভারত থেকে নেপালের কাঠমাণ্ডুতে পৌঁছেছিল। এদিন সকালে কাঠমাণ্ডু থেকে তাদের গন্তব্য ছিল পোখরা। কিন্তু অবতরণের কয়েক মিনিট আগেই বিমানটি ধ্বংস হয়ে যায়। মৃত্যু হয় তাদের।