দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবারও করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। JN.1 ভ্যারিয়েন্টের কারণে হংকং, সিঙ্গাপুর, চীন এবং থাইল্যান্ডে সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেনে নিন ভারতের অবস্থা এবং বুস্টার ডোজ সম্পর্কে পরামর্শ। 

এশিয়ায় কোভিড-১৯ এর পুনরুত্থান: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবারও কোভিড-১৯ (Covid-19 Resurgence) মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। প্রথমে সতর্কতা এসেছে হংকং থেকে, যেখানে সেন্টার ফর হেলথ প্রোটেকশন অনুসারে ভাইরাসের সক্রিয়তা 'বেশ উচ্চ' স্তরে পৌঁছেছে। সেখানে সম্প্রতি শ্বাসযন্ত্রের নমুনাগুলিতে করোনা পজিটিভ পাওয়ার হার গত এক বছরে সর্বোচ্চ।

৩ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে ৩১ টি গুরুতর ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে যা এক বছরে সর্বোচ্চ সংখ্যা। নর্দমার জলে ভাইরাসের বোঝা এবং হাসপাতালে ভর্তির ক্রমবর্ধমান সংখ্যা হংকংয়ে সংক্রমণ আবার ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

সিঙ্গাপুরে ২৮% বৃদ্ধি

সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৩ মে পর্যন্ত সপ্তাহে সংক্রমণ ২৮% বেড়ে ১৪,২০০ হয়েছে। প্রতিদিনের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও ৩০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় এক বছর পর এভাবে সরকার সংক্রমণের আপডেট প্রকাশ করল। মন্ত্রণালয়ের মতে, সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে জনসংখ্যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়া একটি কারণ হতে পারে তবে বর্তমানে যে ভ্যারিয়েন্টটি ছড়িয়ে পড়ছে তা খুব গুরুতর নয়।

থাইল্যান্ডে সংক্রান্তি উৎসবের পর দ্বিগুণ হয়েছে সংক্রমণ

থাইল্যান্ডেও পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের মতে, ১৭ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে ৩৩,০৩০ টি নতুন করোনা সংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে, যা আগের সপ্তাহের ১৬,০০০ টি ঘটনার দ্বিগুণ। ব্যাংকক (৬,২৯০), চন বুরি (২,৫৭৩), রায়ং (১,৬৮০) এবং নোনথাবুরি (১,৪৮২) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা। ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা গেছে। জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের বুস্টার ডোজ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

চীনেও সংক্রমণের হার দ্বিগুণ

চীনেও কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৩১ মার্চ থেকে ৪ মে এর মধ্যে বহির্বিভাগ এবং জরুরি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো লক্ষণযুক্ত রোগীদের মধ্যে করোনা পজিটিভিটি ৭.৫% থেকে বেড়ে ১৬.২% হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের পজিটিভিটিও ৩.৩% থেকে ৬.3% এ পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন আরেকটি গ্রীষ্মকালীন ঢেউয়ের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।

ভারতে পরিস্থিতি স্থিতিশীল কিন্তু সতর্কতা অব্যাহত

ভারতেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে ২৫৭ টি সক্রিয় সংক্রমণ নথিভুক্ত হয়েছে। যদিও কোনও বড় প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি তবে সরকার পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।

JN.1 ভ্যারিয়েন্ট উদ্বেগের কারণ

এই সমস্ত সংক্রমণের পেছনে ওমিক্রন বংশের নতুন উপ-ভ্যারিয়েন্ট JN.1 এবং তার বংশধরদের দায়ী করা হচ্ছে। WHO এটিকে Variant of Interest ঘোষণা করেছে, অর্থাৎ এখনও এই ভ্যারিয়েন্টটি খুব গুরুতর নয় তবে এর বিস্তারের উপর নজর রাখা দরকার।

কী করবেন সাধারণ মানুষ?

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সমস্ত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে বুস্টার ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। গণসমাবেশ এবং উৎসবের পর সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তাই সতর্ক থাকা জরুরি।