সংক্ষিপ্ত

বাঘের মূত্র খেলেই দূর হয়ে যাবে সমস্ত রোগ-ব্যধি! এক বোতলের কত দাম জানেন?

রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হবে বাঘের প্রস্রাব! চিনে ঘটছে এমনই ঘটনা। বাঘের মূত্রকে ব্যবহার করা হচ্ছে রোগের নিরাময় হিসেবে। এক বোতল বাঘের প্রস্রাবের দাম প্রায় ৬০০ টাকা। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ-পশ্চিম চিনের সিচুয়ান প্রদেশের একটি চিড়িয়াখানা বাতের চিকিৎসায় বাঘের মূত্র বিক্রি করছে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিখ্যাত ইয়ান বিফেংজিয়া ওয়াইল্ডলাইফ চিড়িয়াখানা সাইবেরিয়ার বাঘের মূত্র বিক্রি করে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ প্রতি বোতল ৫০ ইউয়ান (৫৯৬ টাকা) দরে ঘের মূত্রের বোতল বিক্রি করছে। একটি বোতলে ২৫০ গ্রাম বাঘের মূত্র থাকে। এই বোতলগুলি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, স্প্রেন এবং পেশী ব্যথার মতো রোগে থেরাপিউটিক প্রভাব রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

বাঘের মূত্র কীভাবে ব্যবহার করতে হবে সে সম্পর্কেও নির্দেশনা দিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। নির্দেশনা অনুযায়ী বাঘের প্রস্রাবের সঙ্গে সাদা ওয়াইন ও আদার টুকরো মিশিয়ে খেতে হবে। এর পর যেখানে প্রয়োজন সেখানে রাখতে হবে। এটি ব্যথা বা অসুস্থতা নিরাময় করবে। চিড়িয়াখানার তরফে আরও জানানো হয়েছে, বাঘের মূত্রও পান করা যেতে পারে, তবে কারও কোনও অ্যালার্জি থাকলে তা খাওয়া উচিত নয়।

চিড়িয়াখানার এক কর্মী জানিয়েছেন, বাঘ প্রস্রাব করার পর একটি বেসিন থেকে মূত্র সংগ্রহ করা হয়। তবে ক্রেতাদের কাছে বিক্রির আগে বাঘের মূত্র জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। ওই কর্মী অবশ্য জানিয়েছেন, বাঘের মূত্র বিক্রি সামান্যই এবং দিনে দু'বোতলের বেশি নয়। ২০১৪ সালে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ একটি আউটডোর রিয়্যালিটি শোতে সেলিব্রিটি প্রতিযোগীদের পুরস্কার হিসেবে বাঘের মূত্র দিয়েছিল বলে অভিযোগ।

তবে বাঘের মূত্র খাওয়া নিয়ে চিনে হৈচৈ শুরু হয়েছে। চিকিৎসকরা এর বিরোধিতা করেছেন। হুবেই প্রভিন্সিয়াল ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন হাসপাতালের এক ফার্মাসিস্ট বাঘের মূত্রের ঔষধি দাবি অস্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ফার্মাসিস্ট বলেন, প্রচলিত চিনা ওষুধে বাঘের মূত্রের কোনো ভিত্তি নেই। 

এটি কাজ করে এমন কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বাঘের মূত্রের মতো অপ্রমাণিত চিকিৎসার প্রচারণা শুধু চিনের ঐতিহ্যবাহী ওষুধকেই ভুলভাবে উপস্থাপন করে না, বাঘ সংরক্ষণের প্রচেষ্টাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। পর্যটকদের এটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন এই ফার্মাসিস্ট। তবে চিড়িয়াখানার কর্মীরা জানিয়েছেন, বাঘের মূত্র বিক্রির বৈধ ব্যবসায়িক লাইসেন্স রয়েছে তাদের।