ইথিওপিয়া আগ্নেয়গিরির ছাই সতর্কতা: ১২,০০০ বছর পর হালি গুব্বি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট ছাই ঘণ্টায় ১২০ কিমি বেগে ভারতে পৌঁছেছে। একাধিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং DGCA জরুরি এয়ার ট্র্যাফিক সতর্কতা জারি করেছে।  

নতুন দিল্লি। ইথিওপিয়ায় ১২,০০০ বছর পর হালি গুব্বি আগ্নেয়গিরির (Hali Gubbi Volcano) অগ্ন্যুৎপাত সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত ছাইয়ের ঘন মেঘ এখন ভারতে পৌঁছেছে, যার গতি প্রায় ১০০-১২০ কিমি/ঘণ্টা। সোমবার রাতে এই ছাই প্রথমে রাজস্থানের সীমানায় প্রবেশ করে এবং তারপর উত্তর ভারতের দিকে এগোতে থাকে। ছাইয়ের মেঘ এতটাই ঘন যে ইন্ডিগো, আকাসা এয়ার, কেএলএম-সহ বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা তাদের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবিলম্বে বাতিল করে দিয়েছে। DGCA বিমান সংস্থাগুলিকে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে যাতে তারা ছাইযুক্ত এলাকা এড়িয়ে বিমান চালায়, কারণ আগ্নেয়গিরির ছাই ইঞ্জিনের ব্যর্থতা, কেবিনে ধোঁয়া এবং দৃশ্যমানতা হ্রাসের বড় কারণ হতে পারে।

Scroll to load tweet…

এই ছাইয়ের মেঘের কারণে ভারতের বাতাসে দূষণ বাড়ার সম্ভাবনা কম বলে জানানো হয়েছে, তবে দৃশ্যমানতা এবং বিমান চলাচলে এর বড় প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে দিল্লি এবং এনসিআর-এ, যেখানে বাতাসের মান ইতিমধ্যেই খারাপ পর্যায়ে রয়েছে।

আগ্নেয়গিরির ছাই কি ভারতের আবহাওয়া খারাপ করে দেবে?

ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD) অনুসারে, এই ছাইয়ের মেঘ প্রথমে রাজস্থানের আকাশে প্রবেশ করে এবং তারপর ধীরে ধীরে ভারতের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে এই ছাইয়ের AQI-এর উপর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না, তবে দৃশ্যমানতা অবশ্যই কমতে পারে। অর্থাৎ, বিমান চলাচলের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

Scroll to load tweet…

হঠাৎ ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে কেন?

আগ্নেয়গিরির ছাই বাতাসে উপস্থিত থাকলে তা অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়। এটি বিমানের ইঞ্জিনের ক্ষতি করে, যা ইঞ্জিন বিকল হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। এই কারণে DGCA সমস্ত বিমান সংস্থাকে অবিলম্বে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে:

  • ছাইযুক্ত এলাকা এড়িয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করতে হবে
  • জ্বালানি এবং রুট পুনরায় পরিকল্পনা করতে হবে
  • ইঞ্জিনের শব্দ, ধোঁয়া, গন্ধ, বা দৃশ্যমানতার মতো কোনো সন্দেহজনক পরিস্থিতি অবিলম্বে রিপোর্ট করতে হবে
  • এর ফলে ইন্ডিগো এবং আকাসা এয়ার জেদ্দা, কুয়েত এবং আবু ধাবিগামী ফ্লাইট বাতিল করেছে।
  • KLM-ও দিল্লি থেকে আসা-যাওয়ার ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে।

Scroll to load tweet…

১২,০০০ বছর পর অগ্ন্যুৎপাত, এই আগ্নেয়গিরি কি নতুন বিপদ?

  • হালি গুব্বি আগ্নেয়গিরি প্রায় ১২,০০০ বছর ধরে শান্ত ছিল। এই আকস্মিক অগ্ন্যুৎপাত আফ্রিকান দেশগুলিতেও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
  • ইথিওপিয়ার এরতা আলে এবং আফদেরা শহরে হালকা কম্পনও অনুভূত হয়েছে।
  • বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ছাইয়ের মেঘ লোহিত সাগরের পথ ধরে ইয়েমেন ও ওমান হয়ে ভারতে পৌঁছেছে।

দিল্লি-এনসিআর-এর দূষিত বাতাস কি আরও খারাপ হতে পারে?

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে যদি ছাইয়ের ঘনত্ব বাড়ে, তবে দিল্লি এবং এনসিআর-এর আগে থেকেই দূষিত বাতাস আরও খারাপ হতে পারে। যদিও IMD জানিয়েছে যে আপাতত AQI-এর উপর সরাসরি কোনো প্রভাব পড়বে না, তবে বাতাস অবশ্যই धुंधला বা ঝাপসা দেখাতে পারে।

এই ছাই কি আগামী দিনে আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে?

ছাইয়ের মেঘ বাতাসের দিক এবং গতির উপর নির্ভর করে। যদি বাতাসের দিক পরিবর্তন না হয়, তবে এই মেঘ উত্তর-পশ্চিম ভারতে আরও কিছু সময় থাকতে পারে। এর ফলে বিমান চলাচল এবং আবহাওয়া উভয়ই প্রভাবিত হবে।