সংক্ষিপ্ত
বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যই বিপদগ্রস্ত নয়, প্রতি বছর মানুষের পা রাখার ফলেও ক্ষতি হচ্ছে হিমালয় পর্বতের। বাড়ছে হিমালয়ের বিপদ।
আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। অক্সিজেনের ফাঁকা সিলিন্ডার, ছেঁড়া-ফাটা তাঁবু, টন টন বর্জ্য তো আছেই, সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও নানারকম আবর্জনা। প্রতি বছরই অভিযাত্রীরা মাউন্ট এভারেস্টে ওঠা ও নামার পথে আবর্জনার পরিমাণ বাড়িয়ে চলেছেন। একইসঙ্গে তাঁরা বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে রেখে আসছেন মানবদেহের জীবাণু। মাউন্ট এভারেস্টে পাওয়া গিয়েছে মানবদেহের ব্যাকটেরিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মাউন্ট এভারেস্টের ২৬ হাজার ফুট অংশ থেকে আনা মাটি ও বরফ পরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছেন, নরম টিস্যু দিয়ে সদ্যোজাতদের দেহ পরিষ্কার করার পর সেই টিস্যুতে যে জীবাণু পাওয়া যায়, সেই একই জীবাণু পাওয়া গিয়েছে মাউন্ট এভারেস্টের মাটিতে। সেই জীবাণু অত উচ্চতাতেও নষ্ট হয়নি। বরফে জমে যাওয়া সত্ত্বেও পাথরের মধ্যে বেঁচে আছে ব্যাকটেরিয়া। এই আবিষ্কার বিজ্ঞানী মহলে সাড়া ফেলে দিয়েছে। সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন।
গবেষক স্টিভেন স্কিমিডট জানিয়েছেন, 'ঠান্ডা ফ্রিজার খোলা অবস্থায় কেউ যদি হাঁচি দেন এবং তারপর দরজা বন্ধ করে রেখে অনেক বছর পরে সেই ফ্রিজারের দরজা খুলে যদি দেখতে পান সেই জীবাণু এখনও ফ্রিজারের মধ্যে জীবন্ত আছে তাহলে যে অবস্থা হয়, মাউন্ট এভারেস্টে আমরা একই জিনিস খুঁজে পেয়েছি। মাউন্ট এভারেস্ট আমাদের ফ্রিজার ছিল। সেখানে ব্যাকটেরিয়া এখনও জীবন্ত অবস্থায় আছে। গবেষণাগারে তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। কোনও শিশুর গলার মধ্যে যে ব্যাকটেরিয়া থাকে, সেই একই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে মাউন্ট এভারেস্টে।'
অধ্যাপক স্কিমিডট আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা সাধারণত যে যে ডিএনএ নুমনা পরীক্ষা করি, সেগুলি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু মাউন্ট এভারেস্টে যে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে, সেগুলি নষ্ট হয়নি। শুধু বরফে জমে গিয়েছে। এই ব্যাকটেরিয়াকে ফের জীবন্ত করে তোলা সম্ভব। আমাদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, প্রবল ঠান্ডাতেও বেঁচে থাকতে পারে ব্যাকটেরিয়া। আমরা এটা ভাবতেও পারিনি।’
যে অভিযাত্রীরা মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে যান, তাঁরা শেষবার থামেন ৪ নম্বর ক্যাম্পে। গত কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চল থেকে আবর্জনা ও মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে প্রাণ হারানো অভিযাত্রীদের মৃতদেহ নামিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হিমালয়ের এই অংশে আরও অনেক ধরনের জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা গবেষকদের। এই কারণেই তাঁদের উদ্বেগ বেড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন-
'বাংলাদেশকে জ্বালানি নিরাপত্তা দিচ্ছে ভারত', পাইপলাইন উদ্বোধনের পর বললেন শেখ হাসিনা
ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিল করল আদালত, স্বস্তিতে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী