সংক্ষিপ্ত

পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ৭০ বছরের ইমরান খান আদালতের পৌঁছানোর পরে তাঁকে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছেল। কারণ সেই সময় আদালতের বাইরে ইমরানের অনুগামীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ রীতিমত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল।

 

আপাতত স্বস্তির নিঃশ্বাস ইমরান খানের। তোষাখানা মামলায় প্রাক্তন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিল কলল আদালত। আদালতের বাইরে পুলিশ ও ইমরান খানের অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষের পরেই তাঁকে অভিযুক্ত না করে ইমরানকে বাড়ি যাওযার অনুমতি দিয়েছে আদালত। শনিবার ইমরান খান লাহোর থেকে ইসলামাবাদের জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সে পৌঁছে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জাফর ইকবালের আদলতে হাজিরা দেওয়ার জন্য। পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন ইমরান খানের সম্পদের ঘোষণায় উপহারের বিবরণ গোপনার করা অভিযোগ তুলেছিল। তারপরই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত।

এদিন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ৭০ বছরের ইমরান খান আদালতের পৌঁছানোর পরে তাঁকে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছেল। কারণ সেই সময় আদালতের বাইরে ইমরানের অনুগামীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ রীতিমত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল। আদালত চত্ত্বরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই কারণেই ইমরানকে দীর্ঘক্ষণ আদালতের বাইরেই অপেক্ষা করতে হয়েছিল। কিন্তু আদালতের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ ছিল যে ইমরান আদালত কক্ষে প্রবেশও করতে পারেননি। বাইরে থেকেই তাঁকে বিচারপতি হাজিরা খাতায় সই করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আইনজীবীর পরামর্শ ইমরান সই করতেও সম্মত হন। তারপরই আদালতের নির্দেশে সেখান থেকে চলে যান ইমরান খান। ইসলামাবাদের জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সের বাইরে উপস্থিতি চিহ্নিত করার পরই আদালত প্রাক্তন প্রধাননন্ত্রীকে লাহোর যেতে পরামর্শ দিয়েছে।

লাহোরের আদালতেই তোষাখানা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু একের পর এক শুনানিতে ইমরান অনুপস্থিত ছিলেন। সেই কারণেই ইসলামাবাদে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। এদিন ইসলামাবাদের আদালত জানিয়েছে, পরিস্থিতি যা , তাতে শুনানি ও উপস্থিতি চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। সেই জন্য যারা আদালতে জড়ো হয়েছেন তাদের প্রয়োজনী কাজের পরই সেখান থেকে চলে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। আদালত জানিয়েছেন এদিন শুনানি করা যাবে না। অন্যদিকে ডন পত্রিকা জানিয়েছে, বিচারক ইকবার তোষাখানা মামলায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিল করেছে। পুলিশ ও পিটিআই সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে এতটাই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে যে আদালত ৩০ মার্চ পর্যন্ত শুনানি বন্ধ থাকবে।

ডন পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালত দুই পক্ষের সংঘর্ষের কারণে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে পুলিশ বাধ্য হয় টিয়ার গ্যাস চালাতে। সেই কারণে আদালতের ভিতরেও কাজকর্মের সমস্যা হয়। ইমরানের দলের সদস্য আরিফ আলভি টুইট করে বলেন, পাকিস্তানের জীবনের ওপর বিপর্যয়ের আরও একটি দিন কাটল। তবে যে কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত। যদিও দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলিকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন। এদিন আদালতে আসার আগেই ইমরান একটি টুইট করে বলেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা করছেন। তারপরই তাঁর দলের অনুগামীরা আদালতে ভিড় জমাতে শুরু করেছিল।

যদিও ইমরান বিরোধীরা তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ -এর নেতা ইমরানকে শেয়ালের সঙ্গে তুলনা করে বলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গ্রেফতারিতে ভয় পান। তাই গাড়ি থেকে নামতেই চাননি। ইসলামবাদের পুলিশ জানিয়েছেন ইমরানের দলের কর্মীরাই প্রথম থেকেই হিংসাত্মক ছিল। পুলিশ ধৈর্য্য ধরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার পরই টিয়ারগ্যাস ছোঁড়া হয়।