সংক্ষিপ্ত
ইরানি মেয়েদের প্রবল প্রতিবাদের জেরে নীতিপুলিশ তুলে নিতে বাধ্য হলো ইরান সরকার । গোঁড়া ইরান প্রসাশনের ভাবধারায় বড় - সড় কুঠারাঘাত
মেয়েদের পোশাক নিয়ে বরাবরই গোঁড়া ছিল ইরান প্রশাসন। ইসলামিক দেশ হাওয়ায় হিজাব ছাড়া মেয়েদের ঘোরাঘুরি একেবারেই কোরানবিরুদ্ধ বলে জারি করেছিল দেশের প্রশাসনিক বিভাগের একাংশ। কিন্তু মেয়েরা কিধরনের পোশাক পড়বে তা দেশের সরকার বলে দেবে এমন স্টিরিওটাইপ মানিসিকতার বিরুদ্ধে সেসময় গর্জে উঠেছিল ইরানি মেয়েরা। সরকারের বেঁধে দেওয়া পোশাকবিধির বিরুদ্ধে দুমাস ধরে লাগাতার আন্দোলন চালায় ইরানি মেয়েরা। তাদের প্রতিবাদের প্রতিকৃতিস্বরূপ হিজাব টেনে ছিঁড়ে ফেলে দেয় তারা। নীতি পুলিশের বিরুদ্ধে একটানা এমন আন্দোলন এর আগে কখনো হয়নি ইরানের ইতিহাসে। অবশেষে এই আন্দোলনের সামনে মাথা নত করতে হলো ইরান সরকারকে। এই আন্দোলনের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ তারা প্রত্যাহার করে নেয় মেয়েদের উপর নজরদারি চালানোর জন্য নিযুক্ত বিশেষ নীতিপুলিশ বাহিনীকে।
ইরানের সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ মারফত প্রকাশ্যে এসেছে খবরটি। ইরানের কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ জাফর মন্তেজারি নিজেই ওই সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, ওই নীতিপুলিশ কোনও দিনই ইরানের কেন্দ্রীয় বিচারব্যবস্থার অন্তর্গত ছিল না। ইরান সরকার ওই নীতিপুলিশ বাহিনী ‘গস্ত-এ-এরশাদ’কে সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে । পোশাকবিধি না মানায় ইরানের রাজধানী তেহরানে এক তরুণী— মাহাসা আমিনিকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের এই নীতিপুলিশের দল। হেফাজতে থাকাকালীনই মৃত্যু হয় সেই তরুণীর। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই আগুনের গতিতে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে ইরানের পথে। মেয়েরা পথে নামেন প্রশাসনের এই নীতিপুলিশির বিরুদ্ধে। হিজাব বিরোধী তীব্র আন্দোলনকে সমর্থন জানান বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ মহিলা-পুরুষ থেকে খ্যাতনামা ব্যক্তি সকলেই । অবশেষে চাপের মুখে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হল ইরানের প্রশাসন।