চার বছর পরে বিদেশ সফরে কিম জং উন। কোভিড - ১৯ মহামারির সময় তিনি শি জিংপিং এর সঙ্গে দেখা করতে চিনে গিয়েছিলেন। সেই সময়ই ট্রেনে করেই সফর করেছিলেন কিম। 

উত্তর কোরিয়ার প্রধান কিম জং উন- যাঁর ভয় গোটা দেশ ত্রস্ত, সেই তিনি কিনা বিমানে চড়তে ভয় পান। সেইজন্যই কিম সর্বদাই ট্রেনে চড়েই সফর করেন। খুব প্রয়োজনে নিজের বিলাসবহুল রণতরীতে। তবে প্রশাসনিক প্রয়োজনে রাশিয়া বা চিন-এ যেতে কিম জং উনের ভরসা তাঁর নিজের বুলেটপ্রুফ ট্রেন। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া থেকে রাশিয়া গিয়েছেন কিম জং উন। সেখানে রুশ প্রসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। তবে প্রতিবেশী রাশিয়া সফরে কিম জং উন কিন্তু গিয়েছেন তাঁর সাঁজোয়া ৯০ কামরার বুলেটপ্রুফ ট্রেন নিয়ে।

চার বছর পরে বিদেশ সফরে কিম জং উন। কোভিড - ১৯ মহামারির সময় তিনি শি জিংপিং এর সঙ্গে দেখা করতে চিনে গিয়েছিলেন। সেই সময়ই ট্রেনে করেই সফর করেছিলেন কিম। এবারও নিজের বুলেটপ্রুফ ট্রেন নিয়েই গিয়েছেন রাশিয়া। ২০১১ সালের উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতা অধিগ্রহণের পর এই নিয়ে কিম মোট সাতবার বিদেশ সফরে গেলেন। তার নিজস্ব ট্রেনে এই নিয়ে দুইবার দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত অতিক্রম করেছে।

সংবাদ সংস্থা বিবিসি-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার নেতাদের অনুসরণ করেই কিম জং উন-এর ট্রেনটি সবুজ ও হলুদ রঙের। অত্যন্ত ধীর গতিতে চলে এই ট্রেন। বিবিসি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী কিম ২০ ঘণ্টায় ১,১৮০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছেন।

কিম-নিজের ট্রেনে অত্যান্ত ভারী সাঁজোয়া সুরক্ষা ব্যবস্থা করেছেন। তবে সবথেকে রহস্যের বিষয় হল কিম-এর ট্রেনে ৯০টি কামরা রয়েছে। তবে এই কামরাগুলিতে কী কী রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

Health Tips: বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বদলে যায় যৌনসঙ্গীর সংখ্যা , বলছে সমীক্ষা রিপোর্ট

কিম-এর ট্রেন নিয়ে জল্পনা বিশ্বজুড়ে। অনেকেই বলছে কিম -এর ট্রেনে রয়েছে গলদা চিংড়ি, ফ্রেঞ্চ বোর্দো, বারগান্ডি রেড ওয়াইন। রাশিয়ার কর্মকর্তা কনস্ট্যান্টিন পুলিকভস্কির সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট অনুযায়ী ট্রেনটিতে রয়েছে বিলাসবহুল ব্যবস্থাপনা। কনফারেন্স রুম, দর্শকের চেম্বার, শোয়ার ঘর। ব্রিফিংএর জন্য স্যাটেলাইট ফোন ও ফ্ল্যাটস্ক্রিন বিলাশ টিভি।

Hilsa: পুজোর বাঙালির পাতে পদ্মার ইলিশ? রফতানির জন্য নাকি প্রস্তুত বাংলাদেশ

কিম-এর ট্রেনের নিরাপত্তা

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওল-এর এক কর্মকর্তার কথায় কিম জং উন-এর ট্রেন শুধুমাত্র ট্রেন নয়। এটি একটি চলমান দূর্গ। কিম-এর বর্তমান ট্রেনটি বিস্ফোরণ প্রতিরোধী। ট্রেনের জানলা দরজা এমনকি মেঝেও ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের মধ্যে অক্ষত থাকে। ট্রেনের মধ্যেই রয়েছে একটি হেলিকপ্টার। ট্রেন আক্রান্ত হলেও হেলিকপ্টার করে পালানোর রাস্তা রয়েছে। আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য হরেক রকম অস্ত্র। ট্রেনের ওজন অত্যাধিক বেশি হওয়ায় ট্রেনের গতিবেগ অত্যান্ত কম। ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে চলে এই ট্রেন। ট্রেনটি ধীর গতির হলেও বিমানের সবরকম সুবিধে মজুত রয়েছে।

Russia Ukraine war: জি২০ ঘোষণাপত্রে সায় দেওয়াই সার! রাশিয়ার যুদ্ধংদেহী মেজাজে ইউক্রেন একটি ঘুঁটি মাত্র

ট্রেনে সফরেই স্বাচ্ছ্যন্দ উন পরিবার

কিম জং উন ও তাঁর পূর্বসুরিরা ট্রেনে করেই সফর করতে পছন্দ করেন। কিম এর দাদু কিম ইল সুং ভিয়েতনাম ও পূর্ব ইউরোপে ট্রেনে করেই সফর করেছিলেন। তিনি ট্রেন সফরের প্রথা চুল করেন। কিম-এর বাবা ও পূর্বসূরি কিম জং ইলও বিমানে চড়তে ভয় পেতেন। তিনি ২০০১ সালে পিয়ংইয়ং থেকে মস্কো পর্যন্ত ট্রেমে করে গিয়েছিলেন। ২০ হাজার কিলোমিটার পথ তিনি ২৪ দিনে পার করেছিলেন। কিমও পরিবারের ঐতিহ্য বজায় রেখেই ট্রেন সফরেই স্বাচ্ছন্দ্য। সূত্রের খবর এজাতীয় একটি নয়, বেশ কয়েকটি ট্রেন রয়েছে কিম জং উন-এর দখলে। যেগুলি রাখা রয়েছে পিয়ংইয়ংএর একটি কারখানায়।