সংক্ষিপ্ত
আজ থেকে প্রায় ৬ বছর আগেই বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করেছিলেন যে, জোনাথনের সন্তানের সংখ্যা প্রায় একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে।
শুক্রাণু দান করে মহিলাদের সন্তান ধারণে সাহায্য করতেন এক ব্যক্তি। কিন্তু সেই সাহায্যের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে দেশের সীমা ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ল একেবারে বিশ্বব্যাপী। সারা বিশ্ব জুড়ে ওই একটিমাত্র ব্যক্তির সন্তান থাকতে পারে প্রায় সাড়ে পাঁচশোরও বেশি! এই সন্দেহ করে অবিলম্বে সেই ডাচ ব্যক্তিকে শুক্রাণু দান করা বন্ধ করার নির্দেশ দিল আদালত।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম জোনাথন, তাঁর বয়স প্রায় একচল্লিশের কাছাকাছি। তিনি যদি আবার শুক্রাণু দান করার চেষ্টা করেন, তাহলে তাঁকে ১ লক্ষ ইউরো, অর্থাৎ, প্রায় ৯০ লক্ষ ৯ হাজার ৯শো টাকারও বেশি জরিমানা করা হতে পারে বলে আদালতের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
২০১৭ সালে নেদারল্যান্ডসের শুক্রাণু সরবরাহকারী ক্লিনিকগুলিতে শুক্রাণু দান করা থেকে জোনাথনকে নিষিদ্ধ করেছিল নেদারল্যান্ডসের দেশের আদালত। সেই সময়, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৬ বছর আগেই বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করেছিলেন যে, জোনাথনের সন্তানের সংখ্যা প্রায় একশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। ওই সময় জোনাথন আদালতের নির্দেশ বেমালুম অমান্য করে যান। এমনকি, দেশের অভ্যন্তরে তো বটেই, অনলাইন সরবরাহকারীর মাধ্যমে তিনি বিদেশেও নিজের শুক্রাণু পাঠিয়ে রোজগার করতে থাকেন। ২০২৩ সালে তাঁর বিরুদ্ধে আবার মামলা দায়ের করা হলে হেগের একটি আদালত তাঁকে নির্দেশ দিয়েছে তাঁর শুক্রাণু পাঠানো সমস্ত ক্লিনিকের তালিকা দিতে এবং সেই সমস্ত ক্লিনিককে তাঁর শুক্রাণু ধ্বংস করার নির্দেশ দিতে।
আইনজীবীদের অভিযোগ, ওই একজন ব্যক্তি সারা বিশ্বের শত শত নারীকে বিভ্রান্ত করেছেন। নেদারল্যান্ডস, অর্থাৎ, ডাচ ক্লিনিকাল নির্দেশিকা বলে যে, একজন শুক্রাণু দাতা ১২টি পরিবারে মোট ২৫টি সন্তানের জন্ম দিতে পারেন। তার বেশি জন্ম দেওয়া উচিত নয়। শুক্রাণু দাতাদের বলা হয় যে তাঁরা যাতে খুব বেশিবার নিজের শুক্রাণু না দেন। যাতে ‘সৎ’ ভাইবোনরা ভবিষ্যৎকালে নিজেদের অজান্তে দাম্পত্যের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে এবং সন্তান ধারণ করলে দেশে কোনও বড় সমস্যা না তৈরি হয়। অভিযুক্ত জোনাথনের বিরুদ্ধে বিচারকরা বলেছেন যে, তিনি ২০০৭ সাল থেকে শুক্রাণু দান করা শুরু করেছিলেন। তার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচশো থেকে ছশো সন্তান উৎপাদনে সহায়তা করেছেন।
কৃত্রিমভাবে জন্ম দেওয়া শিশুদের অধিকার রক্ষাকারী একটি ফাউন্ডেশন তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে এবং তাঁর শুক্রাণু থেকে জন্ম নেওয়া একটি শিশুর মা তাঁকে আদালতে নিয়ে যান। আদালতের একজন মুখপাত্র, গের্ট-মার্ক স্মেল্ট বলেছেন, "বিষয়টি হল, তাঁর শুক্রাণুর মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে এখন শত শত সৎ ভাই এবং সৎ বোনের একটা আত্মীয়তার নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে, যার পরিধি অনেক বড় হয়ে গেছে।" আদালত বলেছে যে এটি যথেষ্ট ‘যুক্তিসঙ্গত’ যে, এই বিষয়টি শিশুদের জন্য নেতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে পারে।
ডাচ ক্লিনিকের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন জোনাথন। বহু নারীর সাথে ‘প্রতারণা’ করে ব্যক্তিগতভাবে তিনি বহু সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, এরপর একটি ডেনিশ ক্লিনিকেও তিনি নিজের শুক্রাণু দান করেছিলেন, যে ক্লিনিকটি তাঁর বীর্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাঠিয়েছিল। দ্য হেগের জেলা আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, অতীতে এবং বর্তমানেও জোনাথনের দ্বারা জন্ম দেওয়া সন্তানের সংখ্যা সম্পর্কে ইচ্ছুক পিতামাতাদের কাছে ক্রমাগত "ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য" দেওয়া হয়েছে। বিচারক থেরা হেসেলিংক রায় দিয়েছেন, আসামীকে আর কখনও বীর্য দান করতে নিষেধ করা হচ্ছে। বিচারক জোনাথনকে আর কোনও ইচ্ছুক বাবা-মায়ের সাথে বা আর কোনও শুক্রাণু গ্রহণকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বারণ করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন-
Viral News: মেট্রোর ভেতর বসে বসে হস্তমৈথুন করে চলেছেন এক যুবক! ভাইরাল ভিডিও নিয়ে তোলপাড় দিল্লি
শনিদেবের পূজা থেকে মা লক্ষ্মীর চরণে, ৬টি বিশেষ উপায়ে আপনার ভাগ্য খুলে দিতে পারে অপরাজিতা ফুল