- Home
- World News
- International News
- এবার থামবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ? পুতিনের শান্তি আলোচনার আহ্বানে কী বললেন জেলেনস্কি?
এবার থামবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ? পুতিনের শান্তি আলোচনার আহ্বানে কী বললেন জেলেনস্কি?
Putin Calls for Direct Peace Talks: ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনার জন্য এগিয়ে এসেছেন। যুদ্ধবিরতি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পুতিন। জেলেনস্কি যেকোনো আলোচনার জন্য ইউক্রেন প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন।

পুতিনের আহ্বান:
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে পুতিন প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। সোমবার পুতিন জানান, তিনি জেলেনস্কির সাথে আলোচনার জন্য প্রস্তুত।
জেলেনস্কি সরাসরি জবাব না দিলেও, বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলা বন্ধের লক্ষ্যে যেকোনো আলোচনার জন্য ইউক্রেন প্রস্তুত বলে ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন।
আমেরিকার চাপ:
যুদ্ধবিরতিতে অগ্রগতি না হলে আমেরিকা শান্তি প্রচেষ্টা থেকে সরে আসবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়ায় দুই নেতা আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়েছেন বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
রাশিয়া ৩০ ঘণ্টার ইস্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর আরও যুদ্ধবিরতির কথা বললেও, উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছে।
লন্ডনে আলোচনা:
বুধবার লন্ডনে আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সাথে ইউক্রেন আলোচনায় বসবে বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। গত সপ্তাহের প্যারিস বৈঠকের ধারাবাহিকতায় এই আলোচনা হবে। প্যারিসে আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলো তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে।
রাশিয়ার সরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় পুতিন বলেছেন, শনিবার ঘোষিত ইস্টার যুদ্ধবিরতির পর আবার যুদ্ধ শুরু হয়েছে। রাশিয়া যেকোনো শান্তি প্রচেষ্টার জন্য প্রস্তুত এবং ইউক্রেনের জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে বলেও তিনি জানান।
“আমরা সবসময় এই বিষয়ে কথা বলে আসছি, যেকোনো শান্তি প্রচেষ্টা সম্পর্কে আমাদের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে। আমরা আশা করি ইউক্রেনের প্রতিনিধিরাও একইভাবে অনুভব করবেন,” বলেছেন পুতিন।
ইউক্রেন-রাশিয়া প্রথম শান্তি আলোচনা:
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো সরাসরি আলোচনা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের আলোচনার আহ্বান নতুন মোড় নিয়েছে।
পুতিনের বক্তব্যের পর জেলেনস্কি এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলা বন্ধের লক্ষ্যে ইউক্রেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং যেকোনো আলোচনার জন্য প্রস্তুত। এর আগে আমেরিকা ও ইউক্রেন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল।
“ইউক্রেন অন্তত বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলা বন্ধের জন্য তার পরিকল্পনা অব্যাহত রাখবে। এই বিষয়ে যেকোনো আলোচনার জন্য আমরা প্রস্তুত,” বলেছেন জেলেনস্কি।
বিনাশর্তে যুদ্ধবিরতি চায় ইউক্রেন:
লন্ডন আলোচনার মূল লক্ষ্য হলো বিনাশর্তে যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ সৃষ্টি করা, যা স্থায়ী শান্তির সূচনা বিন্দু হবে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। প্রকৃত ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিনাশর্তে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন বলে জোর দিয়েছেন জেলেনস্কি।
ইস্টারের যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর ব্যাপারে আমেরিকা স্বাগত জানিয়েছে। ইস্টারের সময়ও রাশিয়ার হামলা অব্যাহত রাখা প্রমাণ করে যে রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া জানাতে ইউক্রেনের সেনাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
যুদ্ধবিরতির জন্য রাশিয়ার শর্ত:
আলোচনায় অগ্রগতি না হলে আমেরিকা তার প্রচেষ্টা থেকে সরে আসতে পারে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
রবিবার ট্রাম্প আশাব্যঞ্জক বার্তা দিয়ে বলেছেন, দুই পক্ষই এই সপ্তাহে একটি চুক্তিতে আসবে।
রাশিয়ার দাবি হলো, রাষ্ট্রপতি পুতিন যেসব অঞ্চল রাশিয়ার সাথে যুক্ত করেছেন, ইউক্রেনকে সেগুলো ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু ইউক্রেন এই শর্ত মানতে রাজি নয়। তারা বলছে, রাশিয়ার শর্ত মানা মানে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ, যার ফলে পুনরায় আক্রমণ হলে আত্মরক্ষার কোনো নিশ্চয়তা থাকবে না।

