সংক্ষিপ্ত
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নির্ণায়ক হয়ে উঠবেন কারা? এক্ষেত্রে মোট সাতটি প্রদেশের ফলাফল বেশ প্রভাব ফেলতে পারে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নির্ণায়ক হয়ে উঠবেন কারা? এক্ষেত্রে মোট সাতটি প্রদেশের ফলাফল বেশ প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই এই প্রদেশগুলির বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের ভোট নির্দিষ্ট একটি দলের বাক্সেই পড়ে।
কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে সাতটি প্রদেশ। এই প্রদেশগুলিকে দোদুল্যমান প্রদেশও আবার বলা হয়ে থাকে। কারণ, এই সেগুলির রাজনৈতিক আনুগত্য বদলানোর একাধিক উদাহরণ রয়েছে। আর তাই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস, দুজনেরই লক্ষ্য এই সাতটি প্রদেশের মানুষকে নিজেদের দিকে টেনে নিয়ে আসা।
একটি সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, এই সাতটি প্রদেশের মধ্যে উইসকনসিন, পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান এবং নেভাদায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন কমলা। আর নর্থ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া আর অ্যারিজ়োনায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালে জর্জিয়ায় জয়ী হয়েছিলেন বাইডেন। কিন্তু ১৯৯২ সালের পর সেই প্রথম ওই প্রদেশে জয়ী হয় ডেমোক্র্যাটরা। জর্জিয়ার ভোটারদের মধ্যে বড় একটি অংশ আবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। সেই অঙ্কে এখানে বাজিমাৎ করতে পারেন কমলা। তবে হাল ছাড়ছেন না ট্রাম্পও।
এরপরই রয়েছে নেভাদা। এই প্রদেশে মাত্র ছটি ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে। কিন্তু ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ লাতিন বংশোদ্ভূত। অন্যদিকে, একাহেন আছেন এশীয়-আমেরিকান এবং কৃষ্ণাঙ্গ। এই ভোট কমলার দিকে যাওয়ার কথা। কিন্তু অর্থনীতির বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। তাই এই সময়ে দাঁড়িয়ে, ভোটারদের একাংশ ট্রাম্পের সমর্থনে ভোট দিতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।
অপরদিকে ১৫টি ইলেক্টোরাল ভোট সম্বলিত মিশিগানে দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাটদের খাসতালুক বলেই পরিচিত ছিল। কিন্তু গত ২০১৬ সালে এই মিশিগানে জয় পান ট্রাম্প। অতেব এই প্রদেশে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারেন আরব-আমেরিকানরা। আবার এটাও ঠিক যে, এদের একাংশ গাজ়ার পরিস্থিতি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। তেমনই ইজ়রায়েলকে সমর্থনের প্রশ্নে বাইডেন প্রশাসনের ভূমিকায় যথেষ্ট অসন্তুষ্ট। তাই এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে, এখানে জয়ের আশা দেখছে রিপাবলিকানরা।
ওদিকে আবার পেনসিলভেনিয়া একটা সময় ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। কিন্তু ফিলাডেলফিয়া কিংবা পিটসবার্গের মতো শহরগুলিতে শিল্পায়নের নিম্নগতি এখানকার ভোটারদের একাংশকে কমলার দলের প্রতি বিমুখ করে তুলেছে।
এরপর রয়েছে অ্যারিজ়োনা। সেই ২০২০ সালে এই প্রদেশে ১০ হাজারের একটু বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন বাইডেন। এই প্রদেশটি মূলত, মেক্সিকো সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। সেই কথা মাথায় রেখেই, অভিবাসন নীতি নিয়ে সুর চড়াচ্ছেন ট্রাম্পও। সেক্ষেত্রে ট্রাম্পের উগ্র জাতীয়তাবাদী এবং আমেরিকাকেন্দ্রিক প্রচার ভোটের ফল ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে আশা করছেন রিপাবলিকানরা।
নর্থ ক্যারোলাইনাতে গত ৫০ বছর ধরে, অধিকাংশ সময়েই জয়ী হয়েছেন রিপাবলিকানরা। কিন্তু ২০০৮ সালে, নর্থ ক্যারোলাইনায় জয়ী হন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বহু কলেজ পড়ুয়ার বাস করেন এখানে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় রয়েছেন লাতিন বংশোদ্ভূত, শ্বেতাঙ্গ এবং কৃষ্ণাঙ্গরাও।
এমনকি, রিপাবলিকান পার্টি তাদের জাতীয় কনভেনশনও এই প্রদেশেই করেছিল। তারপরেও এই প্রদেশটি ধরে রাখা আদৌ সম্ভব হবে কিনা, এমনটা অবশ্য জোর গলায় দাবি করতে পারছেন না কেউই। বাকিটা সময় বলবে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।