সংক্ষিপ্ত
নিজের ফেলে আসা জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে বিধ্বস্ত মানুষ যাতে অর্ধেক ভেঙে থাকা বাড়ির ভিতরে না যান, তার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষদের উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা জানিয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা।
ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর কেটে গিয়েছে প্রায় ২ সপ্তাহ। মৃত্যুপুরীর মতো শূন্য হয়ে রয়েছে তুরস্ক এবং সিরিয়ার ধ্বংসস্তূপ। এরই মধ্যে দেশের দুর্যোগ সংস্থার পক্ষ থেকে রবিবার জানানো হয়েছে, প্রচণ্ড ভূমিকম্পের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দুটি প্রদেশ ছাড়া তুরস্কের সব প্রদেশে এবার উদ্ধারকাজ শেষ করা হল। “অনেকগুলি প্রদেশে আমাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে, কাহরামানমারাস এবং হাতায় প্রদেশে উদ্ধারকাজ এখনও চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে”, জানিয়েছেন সংস্থার প্রধান ইউনুস সেজার আঙ্কারায়।
২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল কাহরামানমারাসের পাজারসিক জেলা। তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বে মোট ১১টি প্রদেশে আঘাত হেনেছে এই কম্পন। সেজার জানিয়েছেন যে, ১৪তম দিনেও প্রদেশের প্রায় ৪০টি ভবনে অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছিল, তবে, রবিবার দিনের শেষে উদ্ধারপ্রাপ্তের সংখ্যা অনেক কমে এসেছে বলে মনে করছে প্রশাসন।
উদ্ধারকাজের প্রথম দিকে যতটা সুফল পাওয়া গিয়েছিল, ধীরে ধীরে সেই গতি অনেক ধীর হয়ে এসেছে এবং উদ্ধারকারীদের তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে আর কোনও জীবিত মানুষের সাড়া পাওয়া যায়নি। শনিবার, উদ্ধারকারীরা দক্ষিণ তুরস্কের আন্তাকিয়া শহরে ভূমিকম্পের ২৯৬ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে একজন পুরুষ এবং একজন মহিলাকে জীবিত খুঁজে বের করতে পারলেও তাদের তিন সন্তানের কেউই আর বেঁচে নেই বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার এক ১৪ বছর বয়সি বালক সহ মোট চারজনকে উদ্ধার করা গিয়েছিল। দুর্যোগ সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন যে, তুরস্কের মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার ৬৮৯। সিরিয়া সহ মোট মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে প্রায় ৪৬ হাজার। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে শনিবার বলেছেন যে, প্রায় দেড় লক্ষের কাছাকাছি বাসস্থান ধ্বংসীভূত হয়ে গেছে। যেগুলি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলি অতি শীঘ্র ভেঙে ফেলা প্রয়োজন। নিজের ফেলে আসা জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে বিধ্বস্ত মানুষ যাতে অর্ধেক ভেঙে থাকা বাড়ির ভিতরে না যান, তার জন্য ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার মানুষদের উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা জানিয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন যে, প্রায় ২.২ মিলিয়ন মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কত মানুষ নিজের বাসস্থান হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন, তার সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করেনি দেশের প্রশাসন।