Israel Intensified Airstrikes: মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও ইজরায়েলকে সম্পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেওয়ার পরেই গাজার ওপর হামলা তীব্র করেছে ইজরায়েল। এই হামলায় সেখানকার সাধারণ নাগরিকরা ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে আটকা পড়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে ঘি ঢালল আমেরিকা

আমেরিকার সমর্থন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইজরায়েল গাজার ওপর হামলা তীব্র করেছে। ইজরায়েলের হামলায় গাজার বিল্ডিংগুলোতে আগুন লেগে যাওয়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার লক্ষ্যে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নতুন সামরিক অভিযানে আমেরিকা সম্পূর্ণ সমর্থন দেবে বলে মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও আশ্বাস দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইজরায়েল গাজার ওপর ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে।

ইজরায়েলকে পূর্ণ সমর্থনের কথা বললেন মার্কিন বিদেশ সচিব

গতকাল সোমবার জেরুজালেম সফরকালে মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও বলেন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত প্যালেস্তিনীয় অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইজরায়েল আমাদের অবিচল সমর্থনের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারে। তিনি কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেন এবং হামাসকে 'বর্বর জন্তু' বলে অভিহিত করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রুবিওর এই বিবৃতির পরেই ইজরায়েল গাজার ওপর হামলা তীব্র করেছে।

মার্কো রুবিওর বিবৃতির পরেই হামলা তীব্র করল ইজরায়েল

গাজার আবাসিক ভবনগুলো ইজরায়েলের হামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে। ২৫ বছর বয়সী বাসিন্দা আহমেদ গজল বলেন, "আমরা তাদের চিৎকার শুনেছি।" গাজায় রাতভর বিমান হামলার পর ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ আজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, "গাজা আগুনে জ্বলছে। ইজরায়েল এই অঞ্চলে আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।" আরও হামলা চালানোর আগে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী সেখানকার বেসামরিক নাগরিকদের সরে যেতে বলেছে। ইতোমধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ গাজা থেকে পালিয়ে গেছে। কিন্তু এখনও সেখানে বহু মানুষ রয়ে গেছে। হামাস সেখানকার মানুষদের সেখানেই থাকতে বলেছে, যার ফলে খাদ্যাভাব এবং অন্যান্য সমস্যায় জর্জরিত গাজার বাসিন্দারা ধর্মসঙ্কটে পড়েছেন। হয় সেখানেই থেকে মরতে হবে, অথবা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও বেঁচে থাকার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে আটকে গাজার সাধারণ মানুষ 

এখানে ইজরায়েলি বাহিনী ইতিমধ্যে অন্তত চারটি পূর্ব এলাকায় সপ্তাহব্যাপী অভিযান চালাচ্ছে, যার মধ্যে তিনটি বড় অংশ তাদের হামলায় অনুর্বর ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সেনাবাহিনী এখন মধ্য ও পশ্চিম গাজার দিকে এগোচ্ছে, যেখানে বহু বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে, ইজরায়েল যেটিকে মানবিক অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে, সেই দক্ষিণেও নিরাপত্তা বা স্থানের অভাব রয়েছে। তাই সেখানে যাওয়া সম্ভব নয় বলে অনেক নাগরিক জানিয়েছেন, রয়টার্স এমনটাই প্রতিবেদন করেছে। অন্যরাও বলছেন যে তাদের স্থানান্তরিত হওয়ার মতো সামর্থ্য নেই এবং তারা আশা করছেন যে কাতারে মিলিত আরব নেতারা ইজরায়েলকে তার পরিকল্পনা বন্ধ করার জন্য চাপ দিতে পারেন।

ইজরায়েলি সেনা জানিয়েছে, গত সপ্তাহে গাজা শহরের ওপর পাঁচ দফা বিমান হামলা চালানো হয়েছে এবং ৫০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে। ইজরায়েলের মতে, এর মধ্যে হামাসের নজরদারি ও স্নাইপার পজিশন, টানেল এবং অস্ত্রের ডিপো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এদিকে, রবিবার এই অঞ্চলে হামলায় কমপক্ষে ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। হামাস জানিয়েছে, ১১ আগস্ট থেকে ইজরায়েলি বাহিনী কমপক্ষে ১,৬০০টি আবাসিক ভবন এবং ১৩,০০০টি তাঁবু ধ্বংস করেছে।

দুই বছর ধরে চলছে যুদ্ধ: ৬৪,৯০০ জনেরও বেশি মৃত্যু

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মতে, ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ হামাসের হামলার পর ইজরায়েল তার প্রতিশোধমূলক অভিযান শুরু করে, যা দুই বছর পরেও থামেনি। এই যুদ্ধে শিশু ও মহিলা সহ ৬৪,৯০০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। হামাসের হামলায় ইজরায়েলে ১,২১৯ জন নিহত হয়েছিলেন এবং ২৫১ জনকে পণবন্দী করা হয়েছিল।

গাজায় যুদ্ধের কারণে দুর্ভিক্ষ, জানাল রাষ্ট্রসঙ্ঘ, অস্বীকার ইজরায়েলের

অন্যদিকে, রাষ্ট্রসঙ্ঘ সতর্ক করেছে যে যুদ্ধের কারণে গাজায় দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন। তবে ইজরায়েল এই তথ্য প্রত্যাখ্যান করেছে।

Scroll to load tweet…