সংক্ষিপ্ত

২০২৩ সালে পৃথিবীতে সংবাদসংস্থাগুলির স্বাধীনতার তালিকায় ভারতের স্থান এত নীচে নেমে গিয়েছে যে, ভারতকে ছাপিয়ে ওপরের দিকে উঠে এসেছে চিন, শ্রীলঙ্কা এমনকি, পাকিস্তানও।

বিশ্বে সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা নিয়ে ভারতের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কয়েক মাস আগেই অভিযোগ তুলেছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি। মোদী তথা বিজেপি সরকার নিজের শক্তি প্রয়োগ করে দেশের অন্দরে সমস্ত সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে চাইছে, এমনই অভিযোগ করেছিল এই সংস্থা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটেনের শাসক ঋষি সুনক এবং আমেরিকার শাসক জো বাইডেন, উভয়েই সমর্থন করেছিলেন সংবাদ সংস্থার স্বাধীনতাকে। সাংবাদিকদের স্বাধীনতা হরণ করা যে পৃথিবীর কোনও দেশের উন্নতির পক্ষে সহায়ক হয় না, এমনটাই জানিয়েছিল ঋষি সুনকের দেশ। সেই বক্তব্যই পরিস্ফুটিত হল ২০২৩ সালে পৃথিবীতে সংবাদসংস্থাগুলির স্বাধীনতার তালিকায়। এই তালিকায় ভারতের স্থান এত নীচে নেমে গিয়েছে যে, ভারতকে ছাপিয়ে ওপরের দিকে উঠে এসেছে চিন, শ্রীলঙ্কা এমনকি, পাকিস্তানও।

২০২৩ সালে গ্লোবাল মিডিয়া ওয়াচডগ রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) একটি প্রতিবেদন বের করেছে, যাতে দেখা যাচ্ছে, এই বছর বিশ্বে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার সূচকে পৃথিবীর ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান নেমে এসেছে ১৬১ নম্বরে। এতও নীচে নেমে যাওয়া ভারতকে ছাপিয়ে গিয়েছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। মিডিয়ার স্বাধীনতার ক্ষেত্রে পাকিস্তান ভারতের চেয়ে যথেষ্ট ভালো ফল করেছে। ১৮০টি দেশের মধ্যে পাকিস্তান ১৫০ নম্বর স্থানে রয়েছে। গত বছর ১৮০টি দেশের মধ্যে পাকিস্তান ছিল ১৫৭-এ এবং ভারত ছিল ১৫০ নম্বর স্থানে। অর্থাৎ, ২০২৩ সালে ভারত প্রায় ১১টি দেশের চেয়ে পিছিয়ে গিয়েছে এবং পাকিস্তান সাংবাদিকদের স্বাধীনতা দিয়ে ৭টি দেশকে হারিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে।

শ্রীলঙ্কাও এবছর সংবাদপত্রের স্বাধীনতার সূচকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি করেছে। ২০২২ সালে, অর্থাৎ গত বছর ১৮০টি দেশের তুলনায় শ্রীলঙ্কার স্থান ছিল ১৪৬ নম্বরে। ২০২৩ সালে শ্রীলঙ্কা উঠে এসেছে ১৩৫ নম্বরে। অর্থাৎ, গত ২ বছর ধরেই ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। এবছর সাংবাদিকদের স্বাধীনতা দেওয়ার ক্ষেত্রে এই দেশটির আরও উন্নতি হয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিতে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে নরওয়ে। এর পাশাপাশি আয়ারল্যান্ড এবং ডেনমার্কও শীর্ষ তিনটি স্থান দখল করে নিয়েছে। এই দেশগুলির পরেই রয়েছে ভিয়েতনাম, চীন এবং উত্তর কোরিয়া। অর্থাৎ, ভারতের ৩ দিকের তিনটি প্রতিবেশী দেশই সাংবাদিকদের স্বাধীনতা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের তুলনায় দুর্দান্ত ভালো ফল করেছে।

প্রতি বছর সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং নিয়ে আসে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) সংস্থা। এটি হল একটি আন্তর্জাতিক এনজিও, যার স্বঘোষিত লক্ষ্য হল, বিশ্ব জুড়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং প্রচার করা। প্যারিসে রয়েছে এর সদর দফতর। এটি জাতিসংঘের সাথে পরামর্শমূলক মর্যাদা পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সের উদ্দেশ্য হল, আগের বছরের তুলনায় চলতি বছরে বিশ্বের ১৮০টি দেশ সংবাদমাধ্যমকে স্বাধীনতা দিতে কতটা উন্নতি বা অবনতি করল, তা মেপে দেখা। এটি লক্ষ্য রাখে যে, একটি দেশের সংবাদমাধ্যম রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আইনি, এবং সামাজিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত রয়েছে কিনা এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তার খামতি রয়েছে কিনা। কোনওরকম হুমকি বা গাজোয়ারি ছাড়াই সাধারণ মানুষের স্বার্থে সংবাদ নির্বাচন, উৎপাদন এবং প্রচার করাকেই RSF সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হিসেবে গণ্য করে।

আরও পড়ুন- 
বিমানের মধ্যে বসে এ কি করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প! প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আচরণে দুনিয়াজুড়ে ছিছিক্কার
Cyclone Mocha: ভয়ঙ্কর শক্তিশালী রূপ নিতে চলেছে ঘূর্ণিঝড় মোচা, ৪৮ ঘণ্টায় তুমুল ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতা

রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেকে উপস্থিত থাকবেন জগদীপ ধনখড়, কীভাবে আয়োজিত হবে এই মহিমান্বিত অনুষ্ঠান?