বিপজ্জনক ফাইটার জেট ক্র্যাশের ঘটনা: ১৯৫২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ৭৩ বছরে এয়ার শো-তে অনেক ফাইটার জেট ক্র্যাশ হয়েছে, যাতে পাইলট এবং দর্শকদের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রতিবেদনে বিশ্বের এয়ার শোর ৭টি ভয়াবহ দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানুন, যা গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
৭টি মারাত্মক ফাইটার জেট ক্র্যাশ: দুবাই এয়ার শো-তে ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের তেজস ফাইটার জেট ক্র্যাশ হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় তেজসের পাইলটের মৃত্যু হয়েছে। জেটটি পড়ার সাথে সাথেই আগুন ধরে যায় এবং আল মাকতুম বিমানবন্দরের উপরে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। এয়ার শো বিশ্বজুড়ে দর্শকদের আকাশপথে প্রদর্শন এবং স্টান্টের রোমাঞ্চ দেখানোর সুযোগ দেয়। কিন্তু ১৯৫২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ইতিহাসে এমন অনেক এয়ার শো হয়েছে, যেখানে জেট ক্র্যাশ বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক ৭৩ বছরে এয়ার শোর ৭টি সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা সম্পর্কে...
১৯৫২ ফার্নবোরো এয়ারশো (ইউকে)
১৯৫২ সালের ফার্নবোরো (Farnborough) এয়ার শো-তে ডি হ্যাভিল্যান্ড ডিএইচ.১১০ (de Havilland DH.110) প্রোটোটাইপ জেট প্রদর্শনের সময় মাঝ-আকাশে ভেঙে পড়ে। এটি কাঠামোগত ব্যর্থতার কারণে ঘটে এবং বিমানের টুকরোগুলো দর্শকদের দিকে পড়ে। এতে ২ জন ক্রু সদস্য এবং ২৯ জন দর্শক নিহত হন, প্রায় ৬০ জন আহত হন। এই দুর্ঘটনা এয়ার শো সুরক্ষার জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা ছিল, যা জেট ডিজাইন এবং প্রদর্শন নিয়মে পরিবর্তন এনেছিল।
১৯৮৮ রামস্টাইন এয়ার শো ডিজাস্টার (জার্মানি)
জার্মানির রামস্টাইন এয়ার শো-তে ইতালির ফ্রেচ্চে ত্রিকোলরি দলের তিনটি এয়ারমাক্কি এমবি-৩৩৯ (Aermacchi MB-339) জেটের আকাশে সংঘর্ষ হয়। এই দুর্ঘটনায় ৭০ জন নিহত হন, যার মধ্যে ৬৭ জন দর্শক এবং ৩ জন পাইলট ছিলেন। দুর্ঘটনায় শত শত মানুষ আহত হন। এই দুর্ঘটনা এয়ার শো ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়।
২০০২ স্কনিলিভ এয়ার শো ডিজাস্টার (ইউক্রেন)
ইউক্রেনের স্কনিলিভ এয়ার শো-তে সুখোই Su-27UB স্টান্ট করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সরাসরি দর্শকদের উপর পড়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় ৭৭ জন নিহত এবং প্রায় ৫৪৩ জন আহত হন। এটি এয়ার শো ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দর্শকের মৃত্যুর ঘটনাগুলোর মধ্যে গণ্য করা হয়।
১৯৮৩ রাইন-মেইন স্টারফাইটার ক্র্যাশ (জার্মানি)
রাইন-মেইন এয়ার বেসের একটি শো চলাকালীন কানাডেয়ার সিএফ-১০৪ (Canadair CF-104) স্টারফাইটার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ক্র্যাশ করে। এই দুর্ঘটনায় পাইলট অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও, মাটিতে ৬ জন নিহত হন। এই দুর্ঘটনা এয়ার শো-তে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং কঠোর নিয়ম लागू করা হয়।
২০১৫ শোরহ্যাম এয়ার শো ক্র্যাশ (ইউকে)
শোরহ্যাম এয়ার শো-তে হকার হান্টার টি৭ (Hawker Hunter T7) একটি লুপ ম্যানুভারের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। এই দুর্ঘটনায় মাটিতে থাকা ১১ জন নিহত হন।
২০২৫ পোলিশ এফ-১৬ বিমান রাডোম এয়ার শো রিহার্সালের সময় ক্র্যাশ (পোল্যান্ড)
পোল্যান্ডের রাডোম এয়ার শো-র রিহার্সালের সময় পোলিশ এয়ার ফোর্সের একটি F-16 ক্র্যাশ করে। এতে পাইলটের মৃত্যু হয়।
২০২৫ এইচএএল তেজস দুবাই এয়ার শো ক্র্যাশ (ইউএই)
দুবাই এয়ার শো-তে শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ভারতীয় ফাইটার জেট এইচএএল তেজস ক্র্যাশ হয়েছে। বায়ুসেনা নিশ্চিত করেছে যে দুর্ঘটনায় পাইলটের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স এই যুদ্ধবিমান ক্র্যাশের কারণ অনুসন্ধানের জন্য 'কোর্ট অফ ইনকোয়ারি' গঠন করেছে।


