বল হাতে দুরন্ত চাহল,কাজে এল না বেয়ারস্টোর ইনিংস, সানরাইজার্সকে ১০ রানে হারাল বিরাটের আরসিবি
- আইপিএলের তৃতীয় ম্যাচেও দুরন্ত লড়াই দেখল ক্রিকেট বিশ্ব
- প্রথমে ব্য়াট করে ১৬৪ রান করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর
- জবাবে হায়দরাবাদের হয়ে ৬১ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন বেয়ারস্টো
- যদিও শেষ পর্যন্ত ১০ রানে ম্য়াচ জিতে নেয় আরসিবি, বল হাতে অনবদ্য চাহল

আইপিএলের তৃতীয় ম্যাচেও টানটান ক্রিকেট দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ১০ রানে হারাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। কাজে এল না জনি বেয়ারস্টোর লড়াকু ইনিংস। চাহলের ভেলকির যাদুতে ম্য়াচ জিতল আরসিবি। এদিন ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। আরসিবির হয়ে ওপেন করতে নামেন অ্যারন ফিঞ্চ ও দেবদূত পাড়িকল। আর অভিষেকেই দূরন্ত শুরু করেন কর্ণাটকি ব্যাটসম্যান পাড়িকল। একের পর এক আক্রমণাত্বক শট কেলে সকলের নজর কাড়ে পাড়িকল। পূরণ করেন নিজের অর্ধশতরানও। অ্যারন ফিঞ্চ ও পাড়িকল প্রথম ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৮৬ রানের পার্টনারশিপও করেন। ১১ তম ওভারে বিজয় শংকরের বলে বোল্ড আউট হন পাড়িকল। ৪২ বলে ৫৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন তিনি। মারেন আটটি বাউন্ডারি। ৯০ রানে প্রথম উইকেট পড়ে ব্যাঙ্গালোরের। দ্বিতীয় উইকেটের জন্য বেশিক্ষণ অপকেক্ষা করতে হয়নি ডেভিড ওয়ার্নারকে। অভিষেক শর্মার পরের ওভারেই এলবিডব্লু হয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান অ্যারন ফিঞ্চ। তিনি করেন ২৯ রান।
দুই উইকেট পডাপ পর ইনিংসের রাশ ধরার চেষ্টা করেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও এবি ডিভিলিয়ার্স। ডিভিলিয়ার্স ও বিরাট ৩৩ রানের পার্টনারশিপ করেন। কিন্তু নটরাজনের ১৬ তম ওভারে ওভার বাউন্ডারি মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ আউট হন বিরাট কোহলি। আইপিএল ২০২০-র প্রথম ইনিংসে বিরাটের ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান। এরপর ইনিংসের রাশ পুরোপুরি নিজের হাতে তুলে নেন এবি ডিভিলিয়ার্স। নিজের আক্রমণাত্বক রূপও ধারণ করেন মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি। একের পর এক চার-ছয় মেরে ২৯ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন এবিডি। কিন্তু তারপরই রান আউট হয়ে প্যাভেলিয়নে পেরত যান তারকা ব্য়াটসম্যান। ডিভিলিয়ার্স করেন ৩০ বলে ৫১ রান। শেষে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৩ রানে শেষ হয় আরসিবির ইনিংস। সানরাইজার্সের হয়ে একটি করে উইকেট পান বিজয় শংকর, অভিষেক শর্মা ও নটরাজন।
১৬৪ রান তাড়া করতে নেমে আক্রমণাত্বক শুরু করেন জনি বেয়ারস্টো। সামলে খেলছিলেন ওয়ার্নার। কিন্তু দুর্বাগ্যবশত রান আউট হয়ে যান সানরাইজার্স অধিনায়ক। এরপর ইনিংসের রাশ ধরেন মণীশ পাণ্ডে ও বেয়ারস্টো। আক্রমণাত্বক কিছু শটও কেলেন মণীশ পাণ্ডে। পাওয়ার প্লে শেষে এক উইকেটে ৪৮ রান করেন সানরাইজার্স। ২০ রানে অপারিজত থাকেন মণীশ পাণ্ডে ও জনি বেয়ারস্টো। পাওয়ার প্লের পরও ঠান্ডা মাথায় হায়দরাবাদের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান দুই তারকা ব্যাটসম্যান। সুযোগ পেলেই বড় শটও খেলেন বেয়ারস্টো ও মণীশ পান্ডে। ১০ ওভার শেষে সানরাইরাজার্সের স্কোর দাঁড়ায় এক উইকেটে ৭৮ রান। বেয়ারস্টো নট আউট থাকেন ৩৯ রানে ও মণীশ পাণ্ডে নট আউট থাকেন ৩১ রান। ৬০ রানের পার্টনারশিপও করে নেন তারা।
১১ তম ওভারে নবদীপ সাইনির বলে কভারে ক্যাচ দেন বেয়ারস্টো। কিন্তু সেই ক্যাচ মিস করেন অ্যারন ফিঞ্চ। ১২ তম ওভারের শেষ বলে আরসিবিকে সাফল্য এনে দেন যুজবেন্দ্র চাহল। তার বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন মণীশ পাণ্ডে। তিনি করেন ৩৪ রান। যদিও অপরদিক থেকে নিজের ইনিংস চালিয়ে যান জনি বেয়ারস্টো। ১৪ তম ওভারে ৪ মেরে দলের শতরান ও নিজের অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি। তারপর রানের গতিবেগ বাড়ান বেয়ারস্টো। কিন্তু ১৬ তম ওবারে চাহলের বলে বিগ হিট করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ৪৩ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন বেয়ারস্টো। তারপর ক্রিজে আসেন বিজয় শংকর। প্রথম বলেই চাহলের গুগলিতে বোল্ড হন তিনি। ১৭ তম ওভারে শিবম দুবের বলে বোল্ড আউট হন প্রিয়ম গর্গ। একই ওভারে রান আউট হন অভিষেক শর্মাও।
পরপর উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় হায়দরাবাদ। একইসঙ্গে ম্য়াচে ফেরে বিরাট কোহলির দল। ১৮ তম ওভারে আরও একটি উইকেট পড়ে হায়দরাবাদের। নবদীপ সাইনির বলে বোল্ড হন ভূবনেশ্বর কুমার। একই ওবারে রশিদ খানকেও বোল্ড করেন সাইনি। ১৯ তম ওভারে চোট নিয়েও ব্য়াট করতে নামেন মিচেল মার্শ। কিন্তু বড় হিট করতে গিয়ে শিবম দুবের বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। ১৯ ওভার শেষে হায়দরাবাদের স্কোর দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১৪৬। শেষ ওভারে ডেল স্টেইন নেন শেষ উইকেট। ১৫৩ রানে শেষ হয় সানরাইজার্সের ইনিংস। ১০ রানে ম্যাচ জিতে নেয় বিরাট কোহলির দল। আরসিবির হয়ে বল হাতে ৩টি উইকেট নেন চাহল, দুটি করে উইকেট পান সাইনি ও দুবে ও একটি উইকেট পান স্টেইন। এই জয়ের ফলে তিন মরসুম পর জয় দিয়ে আইপিএল অভিযান শুরু করল বিরাট কোহলি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর।