সংক্ষিপ্ত

পঠনপাঠন ও গবেষণার ক্ষেত্রে ক্রমাগত আর্থিক আনুকূল্যে ঘাটতি হলেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৪২ জন শিক্ষক জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বব্যাপী সেরাতম বিজ্ঞানীদের চূড়ান্ত দুই শতাংশে। 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গবেষণার ক্ষেত্রে গবেষণাপত্রের মান, অংশগ্রহণ বা লেখক হিসাবে গবেষকের কত নম্বরে নাম রয়েছে, গবেষণাপত্রের ‘সাইটেশন’ এবং ‘এইচ-ইন্ডেক্স’ কত, সেগুলির বিচারে শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী-গবেষকদের বেছে নিয়েছে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা সংকলিত তালিকায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জে.ইউ.) অন্তত ৪২ জন শিক্ষক তাঁদের গবেষণা প্রকাশনার ভিত্তিতে জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বব্যাপী সেরাতম বিজ্ঞানীদের চূড়ান্ত দুই শতাংশে।

কল্লোলিনী কলকাতার কাছে এ এক অত্যন্ত গর্বের সম্মান হলেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্য সরকারি অর্থ সাহায্যের থেকে প্রভূত বঞ্চিত, ফলে, যথেষ্ট আর্থিক অনটনের শিকার বিভিন্ন উন্নতমানের গবেষণা ও ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা। অন্যদিকে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও স্থান পেয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা বিজ্ঞানীদের তালিকায়। তবে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (সি.ইউ.) থেকে সেই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ১৩ জন গবেষক, যেখানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকের সংখ্যা কমপক্ষে ৪২।

২০২১ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৯ জন শিক্ষক স্থান পেয়েছিলেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠতম বিজ্ঞানীদের তালিকায়। ২০২২ সালে ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক এই ইউনিভার্সিটি বহু বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে মোট ৩৭৯৬ জন বিজ্ঞানী-গবেষকের একটি ডাটাবেস তালিকা তৈরি করেছিল, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষক মনোনীত হয়েছেন জে.ইউ. থেকে।

এই গবেষণা ক্ষেত্রে গণিত এবং রসায়ন বিভাগে চমৎকার সাফল্য এসেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়েও যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এগিয়ে রয়েছে তালিকার শীর্ষে, সেগুলি হল, বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স, আইআইটি দিল্লি, আইআইটি খড়্গপুর, আইআইটি বম্বে, আইআইটি মাদ্রাজ, আইআইটি কানপুর এবং আইআইটি রুরকি। তবে, বিজ্ঞানীদের তালিকায় ভারতের কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে যাদবপুরের শিক্ষক-গবেষকদের সংখ্যা সর্বোচ্চ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যে গর্বিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘গত বছরের থেকে যাদবপুর এ বার আরও এগিয়েছে। এই তালিকায় যাদবপুরের আগে কোনও কেন্দ্রীয় বা প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই। স্বল্প আর্থিক সংস্থান নিয়েই যাদবপুর পঠনপাঠনের পাশাপাশি গবেষণা ক্ষেত্রেও বিশ্বমানকে ছুঁতে পেরেছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য,  এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি রাজ্যভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এটি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে যথেষ্ট সহায়তা পায়, তবে আরও বেশি অনুদানের জন্য কেন্দ্র সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছিল যাতে আগামী দিনগুলিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় আরও উন্নতি করতে পারে।

স্ট্যানফোর্ডের তালিকায় থাকা কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষক উজ্জ্বল মৌলিক বলেছেন, ‘‘দিনে দিনে গবেষণা ক্ষেত্রে আর্থিক অনুদান কমছে। তার মধ্যেই যাদবপুরে বিশ্বমানের গবেষণা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’ অন্যদিকে, পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক তথা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক ড. পার্থ প্রতিম রায়ের বক্তব্য, “আমি কেন্দ্রকে অনুদান দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি, যাতে আগামী দিনে জেইউ-এর শিক্ষকদের গবেষণার কাজগুলি আন্তর্জাতিক স্তরে তুলে ধরা যায়।” 

আরও পড়ুন-
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগের বিপক্ষেই গেল কলকাতা পুলিশ
মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে আবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ছত্তিশগড়, কম্পন অনুভূত হল রাজস্থানেও!
গাঁজার স্বপক্ষে স্পষ্টবাদী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তাহলে কি এবার আমেরিকায় গঞ্জিকা আইনসিদ্ধ?