সংক্ষিপ্ত

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হাঁসখালি গণধর্ষণ প্রসঙ্গে অধীর বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ হাথরসে পরিণত হয়েছে। কত মেয়ে যে ধর্ষিত হচ্ছে আর এভাবে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তা জানা নেই।" 

হাঁসখালি গণধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি। সোমবারই হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। আর এই দিনই এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্যাতিতার সঙ্গে অভিযুক্ত যুবকের সম্পর্ক কী ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। আর এই ঘটনা নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। 

সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধীর বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ হাথরসে পরিণত হয়েছে। কত মেয়ে যে ধর্ষিত হচ্ছে আর এভাবে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তা জানা নেই।" এরপরই মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, "বাংলার মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা। জানি না বাংলার নারী সমাজ এই ঘটনাকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবে। আমার খারাপ লাগছে। হাঁসখালির ঘটনা আর উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনা যখন সামনে আসছে তখন এই বাংলার অধঃপতনের ছবিটা আপনাদের সামনে স্পষ্ট হচ্ছে। এ বাংলার মা মাটি মানুষের তালিকায় কি ওই ১৪ বছরের বাচ্চা মেয়েটা পড়ে না। ভাগ্য ভালো যে চাইল্ড লাইন ছিল তাই হাঁসখালির ঘটনা জানতে পারলাম। না হলে তাও জানতে পারতাম না। এরকম অজানা কত ধর্ষণ, কত হত্যা হচ্ছে আমি আপনি জানি না। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, আজকে আপনি ধর্ষণকারীদের উকিল হয়েছেন কেন? খুনিদের ওকালতি করছেন কেন?"

আরও পড়ুন- 'হাঁসখালিতে ছেলেটির সঙ্গে নাকি মেয়েটির লাভ অ্যাফেয়ার ছিল', বললেন মমতা

সোমবার বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে হাঁসখালি প্রসঙ্গে মমতা বলেন, "হাঁসখালিতে ধর্ষণ বলবেন না কি প্রেম না অন্তঃসত্ত্বা নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন...আমি পুলিশকে বলেছি, ঘটনাটি কী? ঘটনাটা অত্যন্ত খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু, শুনেছি ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটির নাকি লাভ অ্যাফেয়ার ছিল।" এরপর মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, "মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখে। অভিযোগ জানানো হয়েছে ১০ তারিখে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে তবে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন? কাউকে কিছু না জানিয়ে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন কী ভাবে এর তদন্ত করবে পুলিশ?

আরও পড়ুন- 'আরশোলা বের হলেও এখানে খবর হয়', হাঁসখালিকাণ্ড প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মিডিয়াকে নিশানা মমতার

উল্লেখ্য, ৪ এপ্রিল রাতে জন্মদিনের পার্টিতে ডাকা হয়েছিল কিশোরীকে। এরপর জন্মদিনে ডেকে তাকে মদ্যপান করায় ব্রজগোপাল। অভিযোগ, সেখানেই সে এবং তার বন্ধুরা মিলে তাকে গণধর্ষণ করে। যৌন নির্যাতন এতটাই হয়েছিল যে, নির্যাতিতার গোপনাঙ্গ থেকে রক্তপাত শুরু হয়। রক্তে ভিজে যায় অন্তর্বাস। রাতে এক মহিলাকে দিয়ে প্রেমিকাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় অভিযুক্ত। কিন্তু, বাড়িতে ফেরার পরই অসুস্থবোধ করতে শুরু করে ওই কিশোরী। এদিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেয় ব্রজগোপাল। তারপরই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে কিশোরীর মৃত্যু হয়। 

আরও পড়ুন- হাঁসখালি নাবালিকার গণধর্ষণকাণ্ডে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হাইকোর্টে, শুনানির অপেক্ষায় সারা বাংলা