সংক্ষিপ্ত
- জোড়াবাগানে মৃতার বাড়িতে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা
- বাড়ির বাইরে মমতার পদত্যাগের দাবিতে অগ্নিমিত্রা
- খুন ও যৌন নির্যাতনের ঘটনাকে ঘিরে শুরু 'রাজনীতি'
- ইতিমধ্যেই অপরাধ কবুল করেছেন কেয়ারটেকার
জোড়াবাগান মৃতা নাবালিকার বাড়িতে উপস্থিত রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। এদিকে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। ইতিমধ্যেই নাবালিকা খুন ও যৌন নির্যাতনের ঘটনাকে ঘিরে শুরু রাজনৈতিক পদক্ষেপ।
জোড়াবাগান নাবালিকা খুনের কাণ্ডে ইতিমধ্যেই অপরাধ কবুল করেছেন কেয়ারটেকার। বয়ানে অসঙ্গতি থেকেই সন্দেহ বাড়ে কেয়ারটেকারের উপর। এরপরেই তাকে আটক করে নেওয়া হয়। তদন্তের দায়িত্ব চলে যায় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগে। ৯ বছরের ওই নাবালিকাকে সে যে যৌন নির্যাতন চালিয়ে ঠান্ডা মাথাতেই খুন করেছে, এখবর প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। ক্ষোভের মুখে সকালে কলকাতা পুলিশকে। দোষীকে জণগণের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে আচমকা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকার বাসিন্দা। এরপরেই এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
আরও পড়ুন, 'প্রমাণ দেখাও', বিজেপির রথ যাত্রায় 'অনুমতি না দেওয়া'-র অভিযোগে বিস্ফোরক মমতার সরকার
এদিকে শুক্রবার জোড়াবাগান থানায় যান বিজেপির মহিলা মোর্চার সদস্যরা। থানা ঘেরাও কর্মসূচি নেন তাঁরা। অপরদিকে শশী পাঁজা মৃতার বাড়িতে যান। সেখানে মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ওই একই সময়ে মৃতার বাড়িতে হাজি হন অগ্নিমিত্রা পালও। ঘটনার পর ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অগ্নিমিত্রা জানিয়েছেন, মৃতার মায়ের সঙ্গে দেখা না করে ফিরবেন না। তিনি বলেন পুলিশকে নিষ্কৃয় করে রেখেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। কলকাতার মতো জায়গায় সিসিটিভি নেই। অথচ মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে প্রকল্পের কথা বলেন। তৃণমূল শাসিত রাজ্যে অপরাধিকে আড়াল করতেই অন্যকেঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি অগ্নিমিত্রা। তবে এখানেই শেষ নয়, ঘটনার দায় নিয়ে বিধানসভায় মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি করেছেন অগ্নিমিত্রা। যদিও মৃতার বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় শশী পাঁজা পাল্টা বলেন, 'এমন ঘটনায় বিজেপি এসে রাজনীতি করছে। এটা একেবারেই করা উচিত নয়।'
আরও পড়ুন, শনিবার মালদা আসছেন জেপি নাড্ডা, তিন হাজার কৃষকের সঙ্গে সারবেন 'সহভোজ'
প্রসঙ্গত, ময়নাতদন্তে রিপোর্টে উঠে এসেছে, নির্যাতিতার শরীর থেকে বিরিয়ানি ও চিপসের খাদ্যবশেষ পাওয়া গিয়েছে। অনুমান, বিরিয়ানি এবং চিপসের লোভ দেখিয়ে মাদক মিশিয়ে খাওয়ানো হয় নাবালিকাকে। এর পরই অচৈতন্য করা হয় তাকে। এখানেই শেষ নয়, কেয়ারটেকারের মোবাইলে পর্ণোগ্রাফিও পাওয়া গিয়েছে। এবং ওই কেয়ার টেকার মদ্যপ অবস্থায় পর্ণোগ্রাফি দেখে তারপরই উত্তেজিত অবস্থায় নাবালিকাকে ছাদে নিয়ে যায়। যদিও ওই কেয়ারটেকার এই খুনের ঘটনায় অপরাধ কবুল করে নিয়েছে।
ঘটনাস্থল ঘুরে নমুনা সংগ্রহের পর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রথমে ওই ৯ বছরের নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়। তারপর ওই নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ফের গলায় উপর আড়াআড়ি ছুরি চালানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেই ছুরিও। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, নাবালিকার ৪টি দাঁত ভেঙে ঘটনাস্থলে পড়েছিল। এমনকি ওই নাবালিকার মাথার পিছন থেকেও চুল টেনে ছেড়া হয়েছে। অপরাধীর হাত থেকে বাঁচার জন্য বছর ৯ এর ওই মেয়েটি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। কারণ ঘটনাস্থল থেকে প্রচুর ধস্তাধস্তির চিহ্ন মিলেছে। এমনকি নিম্নাঙ্গের বস্ত্র এবং অন্তর্বাস পরনে থাকলেও গোপনাঙ্গ উন্মুক্ত ছিল। বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা নাগাদ মামা বাড়ির কাছেই জোড়াবাগানের বৈষ্ণব শেখ স্ট্রিটর একটি তিন তলা বাড়ির ছাদে ওই বিবস্ত্র ও গলা কাটা অবস্থায় ওই নাবালিকার দেহ উদ্ধার করা হয়।