সংক্ষিপ্ত


একমাসের জন্য কোনও প্রাণীকে দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করল আলিপুর চিড়িয়াখানা (Alipore Zoo)। একটা বাঘ বা সিংহ-কে এক মাসের জন্য দত্তক নিতে কত খরচ পড়বে জানেন? 

একমাসের জন্য একটা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে দত্তক নেবেন নাকি? কিংবা আফ্রিকার রাজা, সিংহকে? কিংবা কোনও রঙবেরঙের পালকওয়ালা বিদেশী পাখি? এর আগেই কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় (Alipore Zoo) সারা বছরের জন্য, কোনও প্রাণীকে দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু, সাধারণ মানুষের পক্ষে কোনও প্রাণীর সারা বছরের দত্তক নেওয়ার খরচাটা বহন করা দুঃসাধ্য। তাই, চিড়িয়াখানার প্রাণীদের নিয়ে জনসচেতনতা আরও বাড়াতে এখন থেকে একমাসের জন্যও যে কোনও প্রাণীকে দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করছে তারা। 

যিনি দত্তক নেবেন, তিনি অবশ্য সেই প্রাণীটিকে তাঁর বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন না। দত্তক নেওয়া প্রাণীরা চিড়িয়াখানাতেই থাকবে। তবে, যিনি তাঁকে দত্তক নিচ্ছেন, তিনি চারজনের জন্য চিড়িয়াখানায় ঢোকার কমপ্লিমেন্টারি পাস পাবেন। চিড়িখানা প্রাঙ্গনে এসে তাঁর জন্মদিন উদযাপন করতে পারবেন। সেইসঙ্গে তাঁকে একটি 'দত্তক কার্ড' দেওয়া হবে। আলিপুর চিড়িয়াখানার ওয়েবসাইটে কোন পশুর কে  পৃষ্ঠপোষক - তা ছবি সহ আপলোড করা হবে। সংশ্লিষ্ট পশুটির খাঁচার কাছেও তাঁর ছবি-সহ পরিচয় থাকবে।

এই বিষয়ে, বুধবার চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর আশিস সামন্ত বলেছেন, আরও বেশি মানুষকে এই দত্তক নেওয়ায় উৎসাহী করতে দত্তক নেওযার খরচ কমানো হয়েছে। হরিণ, বাঘ বা শিম্পাঞ্জিদের মতো চিড়িয়াখানার জনপ্রিয় পশুদের পাশাপাশি, তুলনায় কম জনপ্রিয় প্রাণীদের এবং পাখিদের দত্তক নিতে উত্সাহ দেওয়া হচ্ছে চিড়িয়াখানার পক্ষ থেকে। প্যাঙ্গোলিন, ফিসিং ক্যাট, এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দত্তক নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই দত্তক গ্রহণের অভ্যাসকে জনপ্রিয় করতে দত্তক নেওয়ার মেয়াদ এক মাসে নামিয়ে আনা হয়েছে। অবশ্য এখনও উৎসুকরা, আগের মতোই এক বছরের জন্য কোনও প্রাণী দত্তক নিতে পারবেন। 

আশিস সামন্ত আরও জানিয়েছে, বাঘ, সিংহ, বা হাতি দত্তক নেওয়ার বার্ষিক খরচ ৩ লক্ষ টাকা। একটি জিরাফকে একবছরের জন্য দত্তক নিতে গেলে খরচ ১.৫ লক্ষ টাকা। ছোট প্রাণীদের একেকজনের দত্তক নেওয়ার বার্ষিক খরচ ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা। আর, পাখিদের ক্ষেত্রে এই খরচটা হল ২,০০০ থেকে ৩,০০০ টাকা দিতে হবে৷ মাসিক দত্তক নেওয়ার খরচ হবে বার্ষিক খরচের বারো ভাগের একভাগ। ফলে আগে অনেকেই খরচের ভয়ে পিছিয়ে গেলেও, খরচটা কমে আসায় এবার তারাও এগিয়ে আসবেন বলেই আশা করা হচ্ছে। 

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, কোভিড-১৯ লকডাউন উঠে যাওয়ার পর থেকে, এখনও পর্যন্ত ২৫ জন ব্যক্তি বিভিন্ন প্রাণী এবং পাখি দত্তক নিয়েছেন এবং ক্রমে দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়াটি গতি পেয়েছে। ফিশিং ক্যাট, হায়েনা, জিরাফ, শিম্পাঞ্জির মতো প্রাণীকে দত্তক নেওয়া হয়েছে। পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিরাও রয়েছেন। থিয়েটার ব্যক্তিত্ব সোহিনী সেনগুপ্ত যেমন শিম্পাঞ্জি 'বাবু'কে দত্তক নিয়েছেন। হাওড়ার এক আইপিএস অফিসার এবং আশুতোষ কলেজের এক অধ্যাপকও দুটি ছোট প্রাণীকে দত্তক নিয়েছেন বলে জানিয়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানা।