সংক্ষিপ্ত
ফের সেই রকম এক ঘটনায় গ্রেফতার করা হল খাস কলকাতার এক বহুরুপী জ্যোতিষী। যজ্ঞের নামে মাদক মেশানো পানীয় খাইয়ে এক বিবাহিত মহিলাকে যৌন নিগ্রহ করে ওই জ্যোতিষী। পরে যেখন সেই জ্যোতিষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর পদক্ষেপ নেবেন বলে মনোস্থির করেন তখন বধূর অশ্লীল ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বহুরুপী সেই জ্যোতিষী।
টিভির পর্দায় বিভিন্ন রকম ফাঁদ পেতে জ্যোতিষীদের (Astrologer) প্রতারণার খবর উঠে আসে সংবাদের শিরোনামে। ফের সেই রকম এক ঘটনায় গ্রেফতার করা হল খাস কলকাতার (Kolkata) এক বহুরুপী জ্যোতিষী (Astrology)। যজ্ঞের নামে মাদক মেশানো পানীয় খাইয়ে এক বিবাহিত মহিলাকে যৌন নিগ্রহ করে ওই জ্যোতিষী। পরে যেখন সেই জ্যোতিষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর পদক্ষেপ নেবেন বলে মনোস্থির করেন তখন বধূর (Wife) অশ্লীল ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বহুরুপী সেই জ্যোতিষী। তাঁর মত এই রকম একজন গুণধর জ্যোতিষীর আরও এই রকম কীর্তিকলাপ রয়েছে কিনা সেই বিষয়টা খুটিয়ে দেখছে পুলিশ। আর পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে ধৃত ওই জ্যোতিষীর (Astrology) নাম সুভাষ দাস ওরফে শুভাশিস দাস ওরফে অভিষেক। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়াগায় নানা রকম নাম ব্যবহার করতেন এই গুণধর জ্যোতিষী।
উত্তর কলকাতার এক বধূ এই প্রতারক জ্যোতিষীর ফাঁদে পা দিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, বিয়ের পর বছর চারেক কেটে গিয়েছিল। কিন্তু কোনও সন্তানের মুখ দেখার সৌভাগ্য হচ্ছিল না তাঁর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংসারে অশান্তির সুত্রপাত। আর তারপর যা হল সেটা কিন্তু আমরা আমাদের জীবনেও দেখে থাকি। যেমন-কোনও রকম সমস্যার সম্মুখীন হলেই অনেকে জ্যোতিষ শাস্ত্রের পরামর্শ দিয়ে থাকে, সেই মত জ্যোতিষীর শ্মরণাপন্ন হয়ে থাকেন অনেকেই। উত্তর কলকাতার এই বধূও সংসারের শান্তি বজায় রাখতে জ্যোতিষীর কাছে ছুটে গিয়েছিলেন। সেই সময় জ্যোতিষী নিজেকে সুভাষ বলে পরিচয় দেন। তিনি সেই মহিলাকে একটি পাথর দেন। সেই জন্য মহিলার থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকাও নেন। তারপর সই জ্যোতিষী সেই মহিলাকে বলেন, তাঁর এই সমস্যা সমাধানের জন্য তারাপীঠে গিয়ে যজ্ঞ করতে হবে। তবে সেই যজ্ঞে তাঁর পরিবারের কেও উপস্থিত থাকতে পারবে না বলে জানিয়ছিল সেই জ্যোতিষী। তাঁকে ভরসা করেই তারাপীঠ যান ওই মহিলা। সেই জন্য আবার জ্যোতিষী সুভাষ আলাদা করে ৫০ হাজার টাকাও নেন।
তারাপীঠের শ্মশানে গিয়ে যজ্ঞও করা হয়। কিন্তু তারপরই সেই জ্যোতিষীর লালসার স্বীকার হন ওই মহিলা। অভযোগ, যজ্ঞের পর গৃহবধূকে একটি হোটেলে নিয়ে যায় সুভাষ। সেখানে তাঁকে মাদক মেশানো ভাঙের সরবৎ খাওয়ানো হয়। এরপরই ওই মহিলা অচেতন হয়ে পড়েন। ওই অবস্থায় জ্যোতিষী তাঁর যৌন নিগ্রহ করে। শুধু তাই নয়, সেই মুহুর্তের ছবিও ক্যামেরাবন্দি করে রাখেন ওই জ্যোতিষী। জ্ঞান ফেরার পর মহিলা গোটা বিষয়টি বুঝতে পারেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে লজ্জায় ও ভয়ে পরিবারের কাউকে কিছু জানাতে পারেন নি তিনি। কিছুদিন আগে ফের সেই জ্যোতিষী ওই মহিলাকে ডেকে পাঠান এবং আরও একটি যজ্ঞ করতে হবে বলে জানান। এবার অবস্য স্থান পরিবর্তন করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে যেতে হবে বলে জানান। কিন্তু এবার গৃহবধূর সন্দেহ হয়। তিনি যেতে রাজি হন নি।
ওই বধূ যেতে রাজি না হওয়ায় হোটেলে তোলা সেই মুহুর্তের অশ্লীল ছবি দিয়ে সেই জ্যোতিষী মহিলাকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে। সেই ছবি নেটদুনিয়ায় আপলোড করে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দেয়। এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। তারপর নিজের মধ্যে সাহস জুগিয়ে পরিবারের লোকেদের সহযোগিতায় তিনি চিৎপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এই ব্যক্তির নামে এই রকম আর কতগুলো ঘটনা রয়েছে সেটা খতিয়ে দেখছে স্থানীয় থানার পুলিশ।