সংক্ষিপ্ত
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা এই চার দুষ্কৃতিই আন্তঃরাজ্য লরি পাচার চক্রের সাথে যুক্ত। তাদের আরও বড় কোও চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশের অনুমান। জাতীয় সড়ক থেকে চলমান লরি হাইজ্যাক করাই মূলত এই দলের টার্গেট। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা।
দুর্ঘটনার নাটক করে জাতীয় সড়ক থেকে একটি লরি কে হ্যাইজ্যাক(Lorry hijack) করে নিয়ে যাবার পথে পুলিশের জালে ধরা পড়ল আগ্নেয়াস্ত্র সহ চার দুষ্কৃতি। পুলিশ জানিয়েছে শনিবার বিকেলে খড়গপুর থেকে বাঁকুড়াগামী(Bankura) একটি খালি ট্রাককে অনুসরন করে ওন্দা থানার(Onda police station) কালিসেনের কাছে আচমকায় ওই ট্রাকের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় একটি ছোট গাড়ি। চলমান ট্রাকের সামনে ছোট গাড়িটি এসে যাওয়ায় ট্রাক ড্রাইভার(Truck driver) দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রাকটির গতি কমিয়ে আনলে আচমকাই প্রকাশ্য রাস্তায় ওই ট্রাকের উপর চেপে বসে এক দুস্কৃতি। পুরো সিনেম্যাটিক স্টাইলেই ট্রাকে চেপেই ওই দুস্কৃতি ট্রাক চালকের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে তার কথামতো ট্রাকটিকে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। তার সঙ্গে ছিল তার আরও এক সঙ্গী।
এদিকে ড্রাইভার সমেত ওই দুই দুষ্কৃতি ট্রাকটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে অনান্য লরির চালকরা বাধা দিতে যায়। তখন তাদেরকেও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখানো হয়। এরপরেই হাইজ্যাক করা ট্রাকটিকে পিছন থেকে নিজেদের চারচাকা গাড়িতে অনুসরণ করতে থাকে অন্য দুই দুষ্কৃতি। এদিকে এই ঘটনায় স্বভাবতই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য লড়ি চালকদের মধ্যেও। ট্রাক হাইজ্যাকের পর পরই স্থানীয় সূত্রে ওন্দা থানার পুলিশ ঘটনার কথা জানতে পারে। পুলিশের হাতে পৌঁছায় দুস্কৃতিদের চার চাকা গাড়ির নম্বর। তা দেখেই পুলিশের সন্দেহ হয় হাইজ্যাক করা ট্রাকটিকে ঝাড়খন্ডের ধানবাদের(Dhanbad, Jharkhand) দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে দুষ্কৃতিরা। এরপরই ঘটনাস্থল থেকে ধানবাদের দিকে যাওয়া বাঁকুড়ার প্রতিটি রাস্তায় জোরদার নাকা চেকিং শুরু করে পুলিশ। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে টানটান অপেক্ষার পর হাইজ্যাক হওয়া ট্রাকটিকে দুর্গাপুর ব্যারেজের কাছে আটক করে বড়জোড়া থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন-কার আদেশে নিরাপত্তা রক্ষী ছাড়া ভোট দিতে হল, বিতর্কে উষ্কে বিস্ফোরক রাজ্যপাল
আটক করা হয় ট্রাকটিকে অনুসরণ করতে থাকা দুষ্কৃতিদের চার চাকা গাড়িটিও। গোটা ঘটনায় যুক্ত চার দুষ্কৃতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তাদের কাছে থেকে মোট তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা এই চার দুষ্কৃতিই আন্তঃরাজ্য লরি পাচার চক্রের সাথে যুক্ত। তাদের আরও বড় কোও চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশের অনুমান। জাতীয় সড়ক থেকে চলমান লরি হাইজ্যাক করাই মূলত এই দলের টার্গেট। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। শুরু হয়েছে তদন্ত। এই দলের সাথে স্থানীয় কোনও লোকজনের যোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতরা ধানবাদ এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ধৃত চার জনকে আজ তোলা হয় বাঁকুড়া জেলা আদালতে।