চলে গেলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্র রাজনীতিতে এক অধ্যায়ের অবসান হল তাঁর রাজনৈতিক জীবন ছিল সুদীর্ঘ তাতে এসছিল অনেক উত্থান-পতন

আগামী বছর এরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই কংগ্রেসের চিন্তা আরও বাড়িয়ে চলে গেলেন প্রদেশ সভাপতি সোমেন মিত্র। এরাজ্যে এমনিতেই কংগ্রেসের অবস্থা ক্ষয়িষ্ণু। তার মধ্যে সোমেন মিত্রের প্রয়াণ কংগ্রেসের কাছে বড় ক্ষতি। বড়াবরই কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন সোমেন মিত্র। যদিও মাঝে দল ছেড়েছিলেন। কিন্তু শেষজীবনে ফের ফিরে এসেছিলেন পুরনো দলের ছত্রছায়াতেই।

আমহার্স্ট স্ট্রিটের ‘ছোড়দা’ নামেই কংগ্রেস রাজনীতিতে বেশি পরিচিত ছিলেন সোমেন।প্রয়াত বরকত গনিখান চৌধুরীর শিষ্য বলা হত তাঁকে। সেখান থেকেই তৈরি করেছিলেন নিজের আলাদা এক রাজনৈতিক সত্ত্বা। অধুনালুপ্ত শিয়ালদহ বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁর ছিল একচ্ছত্র আধিপত্য। বাম আমলেও এই আসন থেকে নিজের ক্যারিশ্মার জোরেই বেশ কয়েকবার বিধায়ক হয়েছিলেন সোমেন মিত্র।

Scroll to load tweet…

আবার নব্বইয়ের দশকে তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের সঙ্গে কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচনে লড়াইয়ের পরেই দল ছেড়েছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে নির্বাচনে বিপর্যয়ের দায় নিয়ে, ১৯৯৮ সালে সোমেন মিত্রও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এর প্রায় প্রায় দু-দশক পর ২০১৮-র সেপ্টেম্বরে তিনি দ্বিতীয়বার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদে ফেরেন।

আরও পড়ুন:বাংলার রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন, চলে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র

আর যার সঙ্গে বিবাদের জেরে মমতা তৃণমূল গঠন করলেন সেই সোমেন মিত্রকেই একসময় নিজের দলে যোগ দিতে আহ্বান করেছিলেন তিনি। ডাক ফেরাননি সোমেনও। সেটা ২০০৭-২২০৮ সালের ঘটনা। তখন এরাজ্যে ধীরে ধীরে পোক্ত হচ্ছে বাম বিরোধী হাওয়া। বনিবনা না হওয়ায় সেই সময় কংগ্রেস ছেড়ে প্রথমে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস গঠন করেছিলেন সোমেন। তারপর যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। ২০০৯ সালে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সাংসদও নির্বাচিত হয়েছিলেন সোমেন মিত্র। তবে সাংসদ হিসাবে ৫ বছর কাটতে না কাটতেই ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগে তিনি তৃণমূল ছেড়ে পুরনো দল কংগ্রেসে ফেরেন। এর ঠিক ৪ বছর পর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয়বার প্রদেশ সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব নেন।

আরও পড়ুন: সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে এসেছিল অনেক উত্থান-পতন, কীভাবে সকলের 'ছোড়াদা' হয়েছিলেন সোমেন মিত্র

কংগ্রেস রাজনীতিতে সাংসদ অধীর চৌধুরীর অনুগামীদের সঙ্গে সোমেন মিত্রের অনুগামীদের দূরত্ব ছিল। তবে সোমেন মিত্র হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ রাখতেন অধীর। প্রাক্তন সহকর্মীর নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজনৈতিক ভাবে বিরোধী থাকলেও সোমেন মিত্র হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন মুখঅযমন্ত্রীও। রবিবারও ফোন করে সোমেন মিত্রের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে ফুল পাঠিয়ে তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনাও করেন।