সংক্ষিপ্ত
পার্ক সার্কাস মোড়ে গিয়ে ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন পড়ুয়ারা। যেখানে গিয়ে মানববন্ধন তৈরি করে রাস্তা অবরোধও শুরু করেন পড়ুয়ারা।
ছাত্র নেতা (Student Leader) আনিশ খানের (Anish Khan) মৃত্যুতে শোকপ্রকাশের জন্য পথে নেমেছিল পড়ুয়ারা (Students)। মোমবাতি (Candle March) হাতে শান্তিপূর্ণ মিছিল বের হয় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (Alia University) থেকে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে শান্তিপূর্ণ থাকলেও মোমবাতি মিছিল বদলে যায় হিংসাত্মক মিছিলে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই মোমবাতি মিছিল বেরিয়েছিল। তবে রাস্তায় এই মিছিল আটকানোর জন্য পুলিশ যে ব্যারিকেড দিয়েছিল তা উলটে দেওয়া হয়।
পার্ক সার্কাসে এসে পরিস্থিতি বদলে যায়। পার্ক সার্কাস মোড়ে গিয়ে ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন পড়ুয়ারা। যেখানে গিয়ে মানববন্ধন তৈরি করে রাস্তা অবরোধও শুরু করেন পড়ুয়ারা। তাদের দাবি, দ্রুত বিচার চাই আনিশ খানের মৃত্যুতে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল বের হয়ে পদ্মপুকুর পর্যন্ত যাবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে তা বেঁকে যায় পার্ক সার্কাসের দিকে। রুট চেঞ্জ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে মতবিরোধ শুরু হয়। পুলিশ বোঝাতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড উলটে ফেলে পড়ুয়ারা। মিছিল থেকে আনিশকে খুন করা হয়েছে দাবি করে দ্রুত ন্যায়বিচারের দাবি জানায় তাঁরা। পাশাপাশি মৃত্যুর ঘটনার উল্লেখ সামনে এনে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে তারা। এদিকে, গভীর রাতে পুলিশ (Police) পরিচয় দিয়ে বাড়িতে ঢুকে ছাত্রনেতাকে (Student Leader) খুনের অভিযোগ ওঠে আমতা থানা এলাকায় (Amta Police Station)। শুক্রবার রাতে (Friday Night) আমতা থানার সারদা দক্ষিন খাঁ পাড়ায় আলিয়া ইউনিভার্সিটির (Alia University) এক ছাত্রকে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলে মারার অভিযোগ ওঠে। মৃত যুবকের নাম আনিস খান(২৮)।
মৃত যুবকের বাবা সালাম খানের অভিযোগ পুলিশের পোশাক পরিহিত ৪ জন লোক বাড়ির ভেতরে ঢুকে আনিসকে খুন করে। পরিবার সূত্রে খবর আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া অনিশ আগাগোড়া কলকাতাতেই থাকতেন। তিন দিন আগে তিনি বাড়িতে আসেন। গতকাল সন্ধ্যাবেলা পাড়ার একটি জলসাতে যান। এরপরে গভীর রাতে সে বাড়ি ফেরে। তার বাড়ি ফেরার কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ চার জন লোক রাত ১টা নাগাদ তাদের বাড়িতে আসেন। ওই চারজনের মধ্যে একজন পুলিশের পোশাক পরা থাকলেও বাকিদের শরীরে জলপাই রঙের পোশাক পড়া ছিল বলেই মৃতের পরিবার সূত্রে দাবি। তারা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গ্রিল ধরে জোরে জোরে ধাক্কা দিচ্ছিল।
দরজা ধাক্কার আওয়াজ শুনে আনিসের বাবা গেটের সামনে এসে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের আমতা থানার পুলিশ বলে দাবি করেন। তারা বলে তারা আনিসকে খুঁজছে। তারা বাবা জানায় আনিস বাড়িতে নেই। তারা তার বাবাকে বলে তাদের কাছে খবর আছে কিছুক্ষন আগেই আনিস বাড়ি ফিরেছে। তাই তারা থানা থেকে আসছে। তার সঙ্গে কথা বলার আছে। এরপর গ্রিল আর গেট খোলা হলে আনিসের বাবাকে পুলিশের পোশাক পড়া ব্যক্তি বন্দুক দেখিয়ে ওখানেই দাঁড় করিয়ে দেয়।
এরপর বাকি তিনজন বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। তারা সিঁড়ি দিয়ে তিনতলায় উঠে আসে। তিনতলার সিঁড়ির ঘরের বারান্দার সামনে চৌকিতে বসে ছিল আনিস। তারা আনিসের সঙ্গে রীতিমত হাতাহাতি করে, তাকে ধরে তিনতলার বারান্দা থেকে নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। ফেলে দেওয়ার পরই তারা আবার সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নীচে নেমে ওই পুলিশের পোশাক পড়া ব্যক্তিকে স্যার বলে সম্বোধন করে। তারা ওই ব্যক্তিকে বলে 'স্যার কাজ হয়ে গেছে'। এরপরই আর বিলম্ব না করে দ্রুত তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
গভীর রাতে কিছু পড়ে যাওয়ার আওয়াজ শুনে পরিবারের অন্যান্য লোকেরা ছুটে এসে দেখে আনিস বাবার পায়ের সামনে পরে যন্ত্রনাতে কাতরাচ্ছে। এরপরই তাকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। ঠিক কি কারণে তাদের ছেলের সঙ্গে এই ধরণের ঘটনা ঘটলো তা এখনো বুঝে উঠতে পারছেন না তার পরিবারের লোকেরা।
অতি সম্প্রতি আনিস আইএসএফ দলে যোগ দিয়েছিল। এই ধরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাপা উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আমতা থানার পুলিশ।