সংক্ষিপ্ত

 

  •  বাইরে অঝোরে বৃষ্টি হয়ে চলেছে, তবুও হুশ নেই 
  • রোগীর তোয়াক্কা না করে বৃষ্টিতেই নিয়ে চলল স্বাস্থ্যকর্মীরা  
  • ফলস্বরূপ বৃষ্টিতে ভিজে চুপচুপে অবস্থা রোগীর 
  •  চরম অবহেলার ছবি এনআরএস মেডিকেল কলেজে 


নাকে অক্সিজেন, পায়ে স্যালাইন, বৃষ্টিতে ভিজছে রোগী। চরম অবহেলার ছবি এনআরএস মেডিকেল কলেজে। বাইরে অঝোরে বৃষ্টি হয়ে চলেছে, তবুও হুশ নেই হাসপাতাল কর্মীদের। রোগীর বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে বৃষ্টির মধ্যেই তাঁকে নিয়ে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। 

আরও পড়ুন, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উদ্ধার মা-বাবা-বোন-ঠাকুমার দেহ, ভোটের আগেই খুন করে একমাত্র ছেলে 


  নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে রয়েছেন রোগী। তার মুখে অক্সিজেন মাস্ক, পায়ে লাগানো স্যালাইন। বেডের নিচে রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার, রোগীর গায়ে চাদর দিয়ে ঢাকা, যদিও মুখ খোলা। বাইরে অঝোরে বৃষ্টি হয়ে চলেছে, তবুও হুশ নেই হাসপাতাল কর্মীদের। রোগীর বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে বৃষ্টির মধ্যেই তাঁকে নিয়ে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। যারা রোগীর শয্যা ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন তাদের একজনের মাথায় অবশ্য ছাতা রয়েছে। তবুও রোগীর মাথার ওপর কোন আড়াল জুটলো না, ছাতা তো দূর অস্ত। তাই ফলস্বরূপ বৃষ্টিতে ভিজে চুপচুপে অবস্থা রোগীর। এভাবেই সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে রোগীকে নিয়ে যাওয়া হল পাশের স্টুডেন্ট হেলথ হোমে। শনিবার বারবেলায় রোগীর প্রতি এমনই চরম অবহেলা এবং অনিয়মের ছবির সাক্ষী থাকলো নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, যা ধরা পড়ল আজকের ক্যামেরায়।  

আরও পড়ুন, ৭ বছর পর সারদা মামলায় জামিন পেলেন দেবযানী মুখোপাধ্যায়, তবুও ঝুলেই রইল ভিন রাজ্যে ভাগ্য 

শনিবার দুপুর বারোটা নাগাদ দেখা যায়, এনআরএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর থেকে একজন রোগীকে নিয়ে বেরোচ্ছেন কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী। হাসপাতাল থেকে বার করে এক নম্বর গেট দিয়ে বেরিয়ে, ট্রাম লাইন ধরে রাস্তার উপর দিয়েই গড়াতে থাকে রোগীর বেডের চাকা। বাইরে তখন অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী বৃষ্টির জলে ভিজে চুপচুপে, তবুও হুঁশ নেই কারোরই। নিজেদের একজনের মাথায় ছাতা থাকলেও রোগীকে চরম অবহেলায় রেখেই নিয়ে যাওয়া হল রাস্তা দিয়ে। এম্বুলেন্স ব্যবহার না করে এভাবে খোলামেলা ভাবে রাস্তার উপর দিয়ে কি একজন ভর্তি থাকা রোগীকে নিয়ে যাওয়া যায়,  প্রশ্ন শুনেই মুখে কুলুপ স্বাস্থ্যকর্মীদের। নিজেদের যুক্তি সাজাতে না পেরে বরং সাংবাদিকের উপরই বেজায় মেজাজ হারালেন একজন স্বাস্থ্যকর্মী। কেন তাদের ছবি তোলা হচ্ছে? ছুড়ে দিলেন সেই প্রশ্নও।

আরও পড়ুন, ' হাতির পিঠ থেকে দু-তিনটে পিঁপড়ে নামলে যায় আসে না', মুকুল ইস্যুতে বিস্ফোরক সায়ন্তন 

 

জানা গেল, বেলঘড়িয়ার এক বাসিন্দা কিডনির অসুখ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এনআরএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শনিবার তার বুকে ব্যথা অনুভব করায় চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় পাশের স্টুডেন্ট হেলথ হোমে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি থাকা একজন রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে না নিয়ে, এভাবে খোলামেলা অবস্থায় বৃষ্টিতে ভিজিয়ে হেলথ হোমে নিয়ে যাওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে হাসপাতালে ভূমিকা। বিষয়টি নিয়ে কি প্রশ্ন করা হলে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের সুপার চিকিৎসক ইন্দিরা দে বলেন, 'এটা হওয়ার কথা নয়, সাধারণত রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সে করেই ট্রান্সফার করা হয়। এটা হয়ে থাকলে আমি অনুসন্ধান করে দেখব। কিছু একটা তো ভুল হয়েছে।' 

আরও পড়ুন, আজ দিল্লিতে ফের শাহি বৈঠকে রাজ্যপাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত সেরেই ফিরবেন কলকাতায় 

এর পরেই টনক নড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয় হেলথ হোমে। যে রোগীকে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, এবার সেই রোগীকেই নিয়ে আসা হল অ্যাম্বুলেন্সের করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো বৃষ্টিতে ভেজার ফলে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তার দায় কে নেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, 'রোগী যেহেতু  কিডনির অসুখে ভুগছেন তার ইমিউনিটি এমনিতেই তলানিতে ঠেকেছে। এভাবে তাকে বৃষ্টিতে ভেজালে তিনি ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তার অবিলম্বে সর্দি-কাশি জ্বর আসতেই পারে। এছাড়াও এখন করোনার সময়ে তাকে খোলামেলাভাবে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া অনুচিত হয়েছে, তিনি করোনায় আক্রান্ত হতেই পারেন। এটা একেবারে চূড়ান্ত অমানবিকতার নিদর্শন।'

আরও পড়ুন, 'TMC সেটিং মাস্টার', কৈলাস বিরোধী পোস্টারে একাকার কলকাতা