সংক্ষিপ্ত

বাটের গায়ে সিরিয়াল নম্বর লেখা রয়েছে। সোনার বাটের গায়ে লেখা তথ্য ও সিরিয়াল নম্বর খতিয়ে দেখে, তা ঠিক কোন দেশের এবং কবে সেগুলি তৈরি করা হয়েছে, সেই তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছে ইডি। 

পার্থ চট্টোপাধ্যায় মামলায় নয়া তথ্য! বেলঘরিয়ায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে যে প্রচুর পরিমাণে সোনা মিলেছে, তা বিদেশ থেকে পাচার হয়ে এসেছিল বলেই মনে করছেন ইডির আধিকারিকরা। অর্পিতার বারবার বিদেশ যাত্রার পিছনে এই পাচার করা সোনা সংগ্রহের কারণ থাকতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ ওই সোনা বিদেশ থেকে পাচার হয়ে এ রাজ্যে এসেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর তদন্তকারীরা।

অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দু’টি আবাসনে কারা যাতায়াত করতেন, আপাতত সে দিকেই নজর দিচ্ছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা। সে কারণে সোমবার সকালে অর্পিতার বেলঘরিয়ার ক্লাব টাউন হাইটসে হাজির হন ইডি আধিকারিকেরা। সংগ্রহ করেন রেজিস্টার এবং মাই গেট অ্যাপের তথ্য। এর পর সোমবার রাতে আবারও ওই আবাসনে গেলেন তদন্তকারী অফিসাররা। বেলঘরিয়ার ওই আবাসন পরিচালন সমিতির সম্পাদক জানিয়েছেন, ইডি আধিকারিকদের হাতে রেজিস্টার এবং মাই গেট অ্যাপের তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তিগত কারণেই সিসিটিভি ফুটেজ তুলে দেওয়া যায়নি।

কি কি ছিল বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে

অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৯ কোটি ৯০লক্ষ নগদ টাকা। সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে চার কিলোগ্রাম সোনার গয়না। বাজার মূল্য প্রায় ৪ কোটিরও বেশি। এই সোনার মধ্যে রয়েছে সোনার বাঁটও। ইডি সূত্রের খবর অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়ার সোনার মধ্যে রয়েছে তিনটি সোনার বাঁট। প্রতিটির ওজন এক কিলোগ্রাম। ইডি আধিকারিকরা  সমস্ত কিছু বাজেয়াপ্ত করেছেন। এই তালিকায় রয়েছে দুটি সোনার  ঘড়িও। 

বাটের গায়ে সিরিয়াল নম্বর লেখা রয়েছে। সোনার বাটের গায়ে লেখা তথ্য ও সিরিয়াল নম্বর খতিয়ে দেখে, তা ঠিক কোন দেশের এবং কবে সেগুলি তৈরি করা হয়েছে, সেই তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছে ইডি। বাজেয়াপ্ত করা সোনার বাট ও গয়না বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করানো হচ্ছে। ইডি মনে করছে, কালো টাকা লুকোনোর জন্য চোরাপথে সোনার বাট কেনা হয়েছিল। পরে তা বেআইনী ভাবেই এদেশে নিয়ে আসা হয়। 

বিদেশি সোনার বাটের গায়ে তথ্য ও সিরিয়াল নম্বর লেখা থাকে। দুবাই, হংকংয়ের মতো দেশে সরাসরি দোকান থেকে সোনার বাট কেনা যায়। সেরকমভাবেই এই সোনার বাট কেনা হয়েছে। ইডিকে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে গয়না অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া গিয়েছে, তাতে কোনও খাদ নেই। নিখাদ সোনায় তৈরি বলেই সেগুলি জৌলুসহীন। অর্পিতার গয়নার তালিকাটাও খুব ছোট নয়। উদ্ধার হয়েছে মোটা মোটা সোনার বালা, কানের ঝোলা লম্বা দুল, অনেকগুলি গলার হার। সেগুলি বেশ মোটা। গয়নাগুলির ওপরে কোনও হলমার্ক করা নেই। বাজেয়াপ্ত গয়নাগুলি বাজারচলতি ডিজ়াইনের গয়নার থেকে বেশ কিছুটা ভারী। তিনটি বাটের পাশাপাশি সোনার মোটা পাতের তৈরি ছ’টি বালাও পাওয়া গিয়েছে।

পার্থ-অর্পিতা গত কয়েক বছরে কত বার বিদেশ গিয়েছেন এবং কোথায় কোথায় গিয়েছেন, সেই সব তথ্যও সংগ্রহ করছে ইডি। অর্পিতা ছাড়াও পার্থ অন্য কোনও বান্ধবী বা অন্য ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির সঙ্গে বিদেশে গিয়েছিলেন কি না, সেই তথ্য পেতে অভিবাসন দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।