সংক্ষিপ্ত

আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথি অথবা শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথি থেকে শুরু হয় দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠান। কিন্তু তাই বলে একেবারে শীতকালে দুর্গাপুজো? শুনতে অবাক লাগলেও এবার এমনটাই হল বাংলা বুকে।

পৌরাণিক ইতিহাস বলে একসময় বসন্তকালেই হত দুর্গাপুজো। পরবর্তী দশরথ পুত্র রামের হাতেই অকালবোধন হয় দেবী দুর্গার। তারপর থেকে শারদীয়ায় শুভলগ্নেই শুরু হয় দুর্গাপুজোর। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের নবমী তিথি অথবা শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথি থেকে শুরু হয় পুজোর অনুষ্ঠান। কিন্তু তাই বলে একেবারে শীতকালে দুর্গাপুজো(Durgapujo in winter)? শুনতে অবাক লাগলেও এবার এমনটাই হল বাংলা বুকে। ইতিমধ্যেই ইউনেস্কোর তরফ থেকে বিশেষ স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলার দুর্গাপুজো(Durgapujo of Bengal)। যা নিয়ে বঙ্গবাসীর মধ্যে উন্মাদনা কম নেই। এদিকে বাংলার দুর্গাপূজোর ইউনেস্কো স্বীকৃতি(UNESCO recognition of Durga Puja) পাওয়ার পর এই প্রথম রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে(Ward No. 25 of Rajpur Sonarpur Municipality) সম্পূর্ণভাবে মা দুর্গার প্রতিমা বানিয়ে পুজো করা হল। যার নাম দেওয়া হয়েছে মা দুর্গার অকাল বোধন।

এই পুজোতে সামিল হয়েছেন হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান সহ সমস্ত ধর্মের মানুষ। তারা আজ একত্রিত হয়ে এই দূর্গা পূজা সম্পন্ন করলেন। তারা সকলেই একে অপরের হাতে হাত রেখে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় মা দুর্গার পদতলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন। কোনও ভাবেই, কোনও মূল্যেই বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে দেবেন না বলেও অঙ্গীকারবদ্ধ হলেন সকলে।যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার পরিকল্পনা করছে তাদের বাংলায় কোন স্থান নেই। এভাবেই মা দুর্গা কে সামনে রেখে তারা এই পুজোতে মাতলেন। এই পুজোর মূল উদ্যোক্তা রাজপুর সোনারপুর পৌরসভা ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি সৌরভ প্রধান।

আরও পড়ুন-অযোধ্যায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দাঁতালের দল, নতুন বছরেই বুনো হাতির হামলার ভয়ে তটস্থ পুরুলিয়ার পর্যটকেরা

পুজো প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা ঈদে সমান ভাবে উৎসবের আবহে মেতে উঠি। আমাদের মন্ত্রী ববিদা উনি নিজে একটা দুর্গাপুজো কমিটির চেয়ারম্যান, উনি কি সুন্দর ভাবে পুজোটাকে পরিচালনা করেন। এই পুজো করে আমরা একটাই বার্তা দিতে চাই এই ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি-র মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির কোনও স্থান নেই। আমরা সকলে কাঁধে কাঁধ রেখে, হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলেছি, আমরা উন্নয়নের পথে রয়েছি, সম্প্রীতির পথে রয়েছি।

আরও পড়ুন-কল্পতরু উৎসবেও করোনার ছায়া, বছরের প্রথম দিনেই বন্ধ থাকল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের দরজা

যদিও সোনারপুর পৌরসভার এই দুর্গাপুজো নিয়ে কটাক্ষবান শানিয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি, পুরভোটের আগে মানুষের মন জিততেই দুর্গাপুজোকে হাতিয়ার করছে শাসক দল। এই প্রসঙ্গে পাল্টা প্রত্যুত্তরে সৌরভ বলেন, পাঁচ বছর অন্তর পুরভোট আসবে, এছাড়াও বিধানসভা-লোকসভা-পঞ্চায়েত ভোট আসবে কিন্তু দেখবেন সবসময়েই বাংলার কোনও না কোনও জায়গায় এরকম প্রোগ্রাম হয়ে থাকে। যারা বাংলাকে ভালোবাসে, যার কোনও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ভালোবাসে না তারা বাংলার ঐতিহ্য রক্ষার জন্য এই ধরণের বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করে থাকে।