- কেওড়াতলা শ্মশানের জেরে এখন অশান্তিতে ভুগছে আদি গঙ্গা চত্বরের বাসিন্দারা
- বাড়ি বিক্রি করতে চেয়েও গ্রাহক পাচ্ছেন না সম্পত্তির মালিকরা
- শ্মশানের আটটি চিমনির জন্য চারটি দূষণ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র রয়েছে
- কিন্তু তার মধ্য়ে কাজ করছে না একটিও
শ্মশানেই নাকি আসল শান্তি, অথচ কেওড়াতলা শ্মশানের জেরে এখন অশান্তিতে ভুগছে আদি গঙ্গা চত্বরের বাসিন্দারা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, যে বাড়ি বিক্রি করতে চেয়েও গ্রাহক পাচ্ছেন না সম্পত্তির মালিকরা।
দক্ষিণ কলকাতার আবাসন ঘিরে স্বপ্ন ছিল অনেকেরই। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় আদি গঙ্গাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু উচু আবাসন। কেনার সময় এই আবাসনের ফ্ল্য়াট দেখেই পছন্দ হয়েছিল ক্রেতাদের। কিন্তু দিন ঘুরতেই এখন সে ফ্ল্য়াট বেঁচতে পারলে বাঁচেন ফ্ল্য়াটের মালিকরা। তাঁদের অভিযোগ, শ্মশানের চুল্লির ধোঁয়াই কাল হয়েছে তাঁদের জীবনে। কেওড়াতলা শ্মশানের একাধিক চুল্লি দিয়েই বেরোচ্ছে বিষ বাতাস। কালো ধোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে ছাই উড়ে আসেছে চুল্লির চিমনি থেকে। যার জেরে উচু আবাসনের বাসিন্দাদের মহাফাঁপড়ে পড়তে হয়েছে। ছাই ও দূষণ থেকে বাঁচতে ঘরের জানালা খুলতে পারছেন না তাঁরা। এই নিয়ে বহুবার কলকাতা পুরসভার কাছে বলা হলেও প্রাপ্তিযোগ শূন্য।
জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ দিবসে, রাজধানীকে পেছনে ফেলে এগিয়ে কলকাতা
সূত্রের খবর, মৃতদেহ থেকে কার্বন দূষণ এড়াতে বেশকিছু দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র লাগানো রয়েছে কেওড়াতলা শশ্মানে। পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে শ্মশানের আটটি চিমনির জন্য চারটি দূষণ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু তার মধ্য়ে কাজ করছে না একটিও। যার ফলে প্রায়শই কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে চিমনি থেকে। বিষয়টা যে মিথ্য়ে নয় , তা মেনে নিয়েছেন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য় বিভাগের এক আধিকারিক। তিনি জানান, শ্মশানে দূষণ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী ও ইলেকট্রিশিয়ানদের মধ্য়ে তালমেল না থাকাতেই এই ঘটনা ঘটছে।
কেওড়াতলা শ্মশানের এই দূষণের জেরে বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে চেতলা রোডের বাসিন্দাদের। চেতলার এক আবাসনের ব্য়বসায়ী জানান, ব্য়বসা করব বলেই উচু আবাসনে ফ্ল্য়াট বুক করেছিলাম। জানলা খুললেই ওই কালো ধোঁয়ায় প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার জোগাড় হয়। এখন তো ভাবছি, ব্যবসা অন্য়ত্র সরিয়ে নেব। পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন,ক্ষতিকারক চিমনির ধোঁয়া থেকে মারত্মক ক্ষতি হতে পারে শরীরের। দূষণ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র কাজ না করায় এই ধোঁয়ায় কার্বনের সঙ্গে সালফার ও নাইট্রোজেন থাকাটা স্বাভাবিক। অনেক ক্ষেত্রেই হাইড্রো কার্বন, কার্বন মনোক্সাইড তৈরি হয় এই ধোঁয়া থেকে।
এনআরসি-র ডিটেনশন ক্যাম্পের জন্য কেন্দ্রকে জমি দিচ্ছেন মমতা,অভিযোগ সূর্যকান্তর
আগে কাঠের চিতায় কমপক্ষে মৃতদেহ পোড়াতে ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি কাঠ লাগত। যা পুড়ে পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়িয়ে দিত। পরবর্তীকালে দেহ পোড়ানো হয়ে গেলে সেই ছাই ফেলা হত গঙ্গায়। এই পদ্ধতিতে অত্যধিক গাছ কাটার পাশাপাশি জলে দূষণের মাত্রাও বাড়ত। কিন্তু নতুন করে ইলেকট্রিক চুল্লি আসায় কাজটা অনেক সহজ হয়েছে। পরিসংখ্য়ান বলছে, কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শীতকালে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ দেহ পোড়ানো হয়। যার জন্য ৮টি ইলেকট্রিক চুল্লির পাশাপাশি রয়েছে দুটি কাঠের চুল্লির ব্য়বস্থা। দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে যে চারটি যন্ত্র বসানো হয়েছে তার এক একটির দাম ২৫ লক্ষ টাকা। অথচ এত টাকা খরচ করেও আখেরে লাভের লাভ হচ্ছে না কিছুই।
Read Exclusive COVID-19 Coronavirus News updates, from West Bengal, India and World at Asianet News Bangla.
খেলুন দ্য ভার্চুয়াল বোট রোসিং গেম এবং চ্যালেঞ্জ করুন নিজেকে। கிளிக் செய்து விளையாடுங்கள்
Last Updated Dec 2, 2019, 5:38 PM IST