সংক্ষিপ্ত
মধ্যবিত্তের পকেটের কথা ভেবে বড় দোকানের তুলনায় সস্তায় বিরিয়ানি বিক্রি করছে এই দোকানগুলি। কোথাও ৭০-৮০ টাকায় মিলছে চিকেন বিরিয়ানি আবার মাত্র ১৩০-১৪০ টাকায় পেয়ে যাবেন মটন বিরিয়ানিও। কিন্তু এবার প্রশ্ন হল যেখানে আকাশ ছোয়া মটনের দাম, ৭৪০-৮০০ টাকা কেজি মটন বিক্রি হচ্ছে সেখানে কী ভাবে ১৩০-১৪০ টাকায় পাতে পরছে মটন বিরিয়ানি? বিরিয়ানি তো খাচ্ছেন, তবে তাতে কী আদৌ থাকছে মটন? এত কম দামে কী ভাবে সম্ভব হচ্ছে মটন বিরিয়ানি দেওয়া?
ভোজন রসিক বাঙালির পাতে যদি থাকে বিরিয়ানি লাঞ্চ হোক বা ডিনার একেবারে জমে ক্ষীর। বিরিয়ানি মানেই কলকাতাবাসীর প্রিয় আরসালান, দাদা-বৌদির বিরিয়ানি, ডিবাপি'র নাম আসবেই। তবে তাছাড়াও ইতিউতি গজিয়ে উঠেছে নানা বিরিয়ানির দোকান। মধ্যবিত্তের পকেটের কথা ভেবে বড় দোকানের তুলনায় সস্তায় বিরিয়ানি বিক্রি করছে এই দোকানগুলি। কোথাও ৭০-৮০ টাকায় মিলছে চিকেন বিরিয়ানি আবার মাত্র ১৩০-১৪০ টাকায় পেয়ে যাবেন মটন বিরিয়ানিও। কিন্তু এবার প্রশ্ন হল যেখানে আকাশ ছোয়া মটনের দাম, ৭৪০-৮০০ টাকা কেজি মটন বিক্রি হচ্ছে সেখানে কী ভাবে ১৩০-১৪০ টাকায় পাতে পরছে মটন বিরিয়ানি? বিরিয়ানি তো খাচ্ছেন, তবে তাতে কী আদৌ থাকছে মটন? এত কম দামে কী ভাবে সম্ভব হচ্ছে মটন বিরিয়ানি দেওয়া? এই প্রশ্নের উত্তর মিলল দমদমের বিরিয়ানি বিক্রেতা তথা শেফ আক্রমের কাছে।
আরসালানের প্রাক্তন কর্মী আক্রমের কাছে মিলল বিরিয়ানি তৈরির সম্পর্কে নানা খুটি নাটি তথ্য। আক্রমের মতে যে সব ছোটো বিরিয়ানি দোকানগুলো ১৩০-১৪০ টাকায় মটন বিরিয়ানি দিচ্ছে তাঁরা আদৌ মটন দেয় না! তিই বলেন, "অনেক জায়গাতেই ১৩০-১৪০ টাকা এমনকী ৭০-৮০ টাকাতেও মটন বিরিয়ানি দেওয়া হয়। ওগুলো আসলে মটন নয়। আসলে মটনের অনেকগুলো ভাগ আছে, যেমন ছাগল, ধারি, মিকনি, কাই। কম দামে এইগুলি পাওয়া যায়। বেশিরভাগ দোকানদার এখন মটনের নামে এই ধারি দিয়ে বিরিয়ানি বানান।"
পাশাপাশি তিনি এও বলেন, "আসম মটন মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিটে গলে যায়। যেখানে এইসব মটন গলাতেই এক ঘন্টা লাগে। উপরোন্তু টেনে ছেঁড়া যায় না, কোন স্বাদ তো থাকেই না বরং একটা বাজে গন্ধ থেকে যায়। দুটি মটন পাশাপাশি খেলেই স্বাদের তফাৎ স্পষ্ট বোঝা যায়।"
আরও পড়ুন - বিশ্ব বিরিয়ানি দিবসে জেনে নিন, কলকাতা ছাড়াও দেশের সেরা ৫ বিরিয়ানির ইতিহাস
দীর্ঘদিন আরসালানে কাজ করেছেন আক্রম। তাঁরপর একসময় চাকরি ছেড়ে এক সহকর্মীর সঙ্গে মিলে তৈরি করেন নিজের বিরিয়ানি দোকান 'ডেভিড বিরিয়ানি'। বাজারে টিকে থাকতে ৪৯-৫৯ টাকায় বিরিয়ানি বিক্রি করে 'ডেভিড বিরিয়ানি'। যদিও আক্রমের মতে ওটা ঠিক বিরিয়ানি নয় বিরিয়ানির মতো খেতে একটা খাবার। কিন্তু চটকের ব্যবসা বেশিদিন টেকেনি। এরপর ডেভিড বিরিয়ানি ছেড়ে নিজের নতুন কুইজিন দিয়ে শুরু করেন আক্রমস বিরিয়ানি।
আক্রমের মতে বিরিয়ানি বা যে কোনও ব্যবসার মূল উপাদান কোয়ালিটি। তাই কোয়ালিটি দিয়েই তিনি বাজারে টিকে থাকতে চান। তাঁর বিরিয়ানির দাম আশেপাশের দোকানের থেকে বেশি। কারণ তিনি তাঁর বিরিয়ানিতে উৎকৃষ্ট মানের দ্রব্য ব্যবহার করেন। রেওয়াজি খাঁসি থেকে উৎকৃষ্ট মানের চাল, তেলের বদলে মোষের দুধের ঘি। এতে উৎপাদন খরচ তিনগুন বাড়লেও যে কোনও বড় দোকানকে স্বাদে গন্ধে একহাত নিতে পারে আক্রমের বিরিয়ানি।
সম্প্রতি দাদা-বউদি নামে ফেসবুক ব্লগারের পোস্টে উঠে আসে আক্রম বিরিয়ানির নাম। তাঁদের ভিডিয়োর মাধ্যমেই ফাঁস হয় কলকাতার ইতিউতি ছড়িয়ে থাকা বিরিয়ানি দোকানের স্বল্পমূল্যে বিরিয়ানি বিক্রির নেপথ্যের রহস্যও।
আরও পড়ুন - ইদ উপলক্ষে 'দুয়ারে বিরিয়ানি থেকে কাবাব', এই হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে যোগাযোগ করলেই খাবার পাঠাবে রাজ্য