সংক্ষিপ্ত
সিবিআই অনুসন্ধানের বিরোধিতা করা হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে। এসএসসি-র হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কিশোর দত্ত। তিনি হাইকোর্টে একাধিক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
স্কুল সার্ভিস কমিশের (School Service Commission) গ্রুপ ডি পদের (Group D Post) কর্মী নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের (CBI Investigation) নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। এই নিয়োগের (recruitment) ক্ষেত্রে যে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে তা নিয়ে সিবিআইকে প্রাথমিকভাবে খোঁজ খবর নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় সিবিআই তদন্ত ছাড়া কোনও উপায় নেই বলে জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর আগে এই মামলায় হাইকোর্টের চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে তদন্তের সওয়াল করা হয়েছিল রাজ্য সরকারের (State Government) তরফে। রাজ্যের সওয়ালে বলা হয়েছিল, ৩ জন বিচারপতিকে দিয়েও তদন্ত কমিটি গঠন করা যেতে পারে। যদিও বিচারপরতিদের দিয়ে তদন্ত না করিয়ে আজ এই দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।
এদিকে সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করা হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে। এসএসসি-র হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কিশোর দত্ত। তিনি হাইকোর্টে একাধিক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। তা শুনে বিচারপতি বলেন, “আপনার যা বলার আছে তার জন্য ৫ মিনিট সময় দেব। কেন বুঝতে চাইছেন না আপনারা মামলায় হেরে গিয়েছেন। আপনাদের হলফনামা থেকে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে সিবিআই তদন্ত ছাড়া কোনও উপায় নেই।”
আরও পড়ুন- 'মুকুলের বিধায়ক পদ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন', বিধানসভার স্পিকারকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
রাজ্যের আইনজীবীর হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) বলেন, “অনুরোধ করছি সিবিআই দেবেন না। রাজ্যের পুলিশের উপর একবার ভরসা করা হোক। রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে একটিও অভিযোগ নেই যে তারা যথাযথ তদন্ত করেনি। সিবিআই তদন্ত একটা সময় গিয়ে থেমে যায়। যে কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করালেও অসুবিধা নেই।” সওয়ালে তিনি আরও বলেন, "রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। রাজ্যের সংস্থা অযোগ্য, এই ধরনের কোনও অভিযোগ নেই। সিবিআই মানেই সব ঠিক হবে, আর কেউ কিছু পারে না, এটা ভ্রান্ত ধারণা।" যদিও রাজ্যের সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। কী কারণে রাজ্যের আর্জি মেনে নেওয়া হচ্ছে না, তার ব্যাখ্যাও দেন বিচারপতি। তিনি জানান, এই নিয়োগ মামলায় রাজ্য জড়িতে আছে। তাই রাজ্যের কোনও সংস্থার তদন্ত দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন- 'মুখ্যমন্ত্রীর অভিনয়ের জন্য আমরা হয়তো অস্কার পেতাম', মমতাকে কটাক্ষ অগ্নিমিত্রার
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের (Group D Post) বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। তখন ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে গ্রুপ ডি প্যানেলের (Group D Panel) মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু, তারপরও একাধিক নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। তার মধ্যে অনেকজনকেই নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও কীভাবে নিয়োগ হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে জানানো হয়, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর আর কোনও সুপারিশ পত্র পাঠানো হয়নি। এমনকী, বৃহস্পতিবার এ নিয়ে তারা একটি হলফনামাও জমা দেয়। ফলে প্রশ্ন ওঠে, এসএসসি যদি সুপারিশ না করে, তবে ওই নিয়োগ কীভাবে হয়েছে? তখনই জড়িয়ে পড়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নাম। তবে বৃহস্পতিবার আদালতে ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন পর্ষদের আইনজীবী। তিনি জানান, পর্ষদ নিজে থেকে কোনও নিয়োগ করেনি। কমিশনের সুপারিশ মেনেই হয়েছে যাবতীয় নিয়োগ। অবশেষে এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে। সেই দলে থাকবেন ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিক ও যুগ্ম কর্তা। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- এবার ত্রিপুরাতে রক্ত ঝরল সাংবাদিকের, ফের আক্রান্ত তৃণমূলও