সংক্ষিপ্ত

দেশের বৃহত্তম বজ্রপাতের হটস্পটে রয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ। পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজি-র পরিচালিত গবেষণায় আর কী জানা গেল? 

দেশের বৃহত্তম 'লাইটনিং হটস্পট' বা বজ্রপাতের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কলকাতা। সম্প্রতি পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজি-র পরিচালিত এক গবেষণায় এই তথ্যই উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তর ওড়িশা জুড়ে একটি বজ্রপাতের হটস্পট রয়েছে। অর্থাৎ, এই অঞ্চলে ঘন ঘন বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের অন্য হটস্পটটি রয়েছে দক্ষিণের রাজ্য কেরলে। বস্তুত, গত দুই বছরে কলকাতায় যত প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে, তার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি ছিল বজ্রপাত। আর, আগামী বছরগুলিতে শহরের বজ্রপাতের অবস্থা আরও খারাপ হবে বলে মনে করছেন আবহাওবিজ্ঞানীরা। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বজ্রপাতের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।

"

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী কলকাতা এবং এর তার উপকণ্ঠের এলাকাগুলি ক্রমশ যে আরও বেশি বজ্রপাদত-প্রবণ হয়ে উঠছে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইআইটিএম-পুনের বর্ষা মিশনের প্রোজেক্ট ম্য়ানেজার পার্থ সারথি মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৯-২০-তে বাংলায় মোট বিপর্যয়ে মৃত্য়ুর সংখ্যা ৫২৯, যার মধ্যে বজ্রপাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে ২৭৮টি, অর্থাৎ ৫২.৬ শতাংশ। ২০২০-২১ সালে, ৭৬৩টি বিপর্যয়ে মৃত্য়ুর মধ্যে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছিল ২৯৯টি, অর্থাৎ  ৩৯.২ শতাংশ। শতাংশের হিসাবে আগের বঠরের থেকে কম হলেও সংখ্যায় বেশি। চলতি বছরে ইতিমধ্যেই ২২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। আর বছরগুলিও একটি আগেরটির তুলনায় বেশি উষ্ণ হয়েছে। শুধু তাই নয়, গত বেশ কয়েক বছরের তথ্য ঘেঁটে গবেষকরা দেখেছেন, যে য়ে বছরের উষ্ণতা বেশি ছিল, সেই বছরগুলিতে বজ্রপাতও বেশি হয়েছে। 

আরও পড়ুুন - ৯ বছর করে আয়ু কমছে ৪০ শতাংশ ভারতীয়র - বিপর্যয়ের গ্রাসে দেশের মধ্য, পূর্ব এবং উত্তর অংশ, দেখুন

আরও পড়ুন - ইন্টারনেট ছাড়াই কাটাতে হতে পারে বেশ কয়েকটা দিন, আসছে তীব্র সৌরঝড় - সতর্ক করলেন গবেষকরা

আরও পড়ুন - যুদ্ধবিমান-কপ্টার-সাঁজোয়া গাড়ি ফেলে গেল মার্কিনিরা - সবই কি তালিবান দখলে, দেখুন ছবিতে ছবিতে

এই রাজ্যে শুধু বজ্রপাতের সংখ্যা যে বেশি তাইই নয়। দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তর ওড়িশা অঞ্চলে বজ্রপাতের শক্তিও ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের থেকে বেশি বলে জানা গিয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বজ্রপাত বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অনির্বাণ গুহকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, বজ্রপাতের শক্তি মূলত কোনও স্থানের পরিবেশের মাইক্রো-ফিজিক্যাল বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে। পরিবেশের মাইক্রো-ফিজিক্যাল বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন যত বেশি তীব্র হয়, ততই বেশি ক্ষতিকর হয় বজ্রাঘাতের মাত্রা। আর এই কারণেই এই অঞ্চলের বজ্রাঘাতের শক্তি ভারতের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেক বেশি। তিনি আরও জানিয়েছেন, বজ্রাঘাতে ৫০০ মেগা জুলের সমান বিশাল শক্তি থাকে। এটি ৫০,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা তৈরি করতে পারে। এই তাপ খুব অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হলেও, সূর্যের তাপের তুলনায় ১০ গুণ বেশি। তাই, যাতেই আঘাত করুক না কেন, প্রভাব হয় ধ্বংসাত্মক।

 

YouTube video player