সংক্ষিপ্ত
প্রথমে টুইট করে রাজ্যপাল জানিয়ে ছিলেন বেলা পৌনে ১২টার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জাকির হোসেন এবং আমিরুল ইসলামের শপথবাক্য পাঠ করানো হবে। কিন্তু, হঠাৎ তারপরই সেই সময় পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। জানানো হয় পৌনে ১২টার পরিবর্তে দুপুর ২টোর সময় তাঁদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
ভবানীপুর উপনির্বাচনে (Bhabanipur By Election) রেকর্ড পরিমাণ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ শপথ নেবেন তিনি। দুপুর ২ টোয় বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মমতা ছাড়াও আরও দুই নব নির্বাচিত বিধায়ক জাকির হোসেন (Jakir Hossain) ও আমিরুল ইসলামও (Amirul Islam) শপথ নেবেন। তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। টুইট করে একথা জানিয়েছেন রাজ্যপাল নিজেই।
মমতা সহ তিন বিধায়ককে কে শপথবাক্য পাঠ করাবেন তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। আসলে সংবিধান অনুযায়ী, মন্ত্রী, বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল। তবে রাজ্যপাল (Governor) চাইলে বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানোর ক্ষমতা অন্য কারও হাতে দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে সাধারণত তা স্পিকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সপ্তদশ বিধানসভার সদস্যরা যেদিন শপথ নিয়েছিলেন, সেদিন ধনখড়ই তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন। আর বিধানসভায় যেদিন শপথবাক্য পাঠ করানো হয় সেদিন পোর্টেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Biman Banerjee) শুধু শপথবাক্য পড়িয়েছিলেন জগদীপ ধনখড়। এরপরই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তিনি বাকি বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানোর অধিকার দিয়েছিলেন। তারপর বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে শপথবাক্য পাঠ করান। এতে কোনও সমস্যা ছিল না।
এরই মধ্যে রাজভবন থেকে বিধানসভার সচিবালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়। যেখানে বলা হয়, অধ্যক্ষকে শপথ বাক্য পাঠ করানোর যে অধিকার রাজ্যপাল দিয়েছিলেন, তা তিনি প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। তাই এবার আর অধ্যক্ষ নন, নতুন বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপালই। এরপরই বিধানসভা থেকে আবারও রাজভবনে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, যে কোনও রাজনৈতিক দলের যে কোনও প্রতিনিধিই বিধায়ক পদে জিতে শপথ নিতে আসতে পারেন। তাই এই প্রত্যাহার করা ক্ষমতা যেন অধ্যক্ষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, এতদিন সেই চিঠির কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি রাজভবনের তরফে। তা নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ফলে মমতা, জাকির হোসেন ও আমিরুল ইসলামকে কে শপথবাক্য পাঠ করাবেন ও কোথায় সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুন- দুর্গা পুজোর আগেই মাথায় হাত মহিলার, অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ২ লক্ষ টাকা
তারপর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধে সাড়া দেয় রাজভবন। তবে সেখানেও সময়ের পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমে টুইট করে রাজ্যপাল জানিয়ে ছিলেন বেলা পৌনে ১২টার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, জাকির হোসেন এবং আমিরুল ইসলামের শপথবাক্য পাঠ করানো হবে। কিন্তু, হঠাৎ তারপরই সেই সময় পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। জানানো হয় পৌনে ১২টার পরিবর্তে দুপুর ২টোর সময় তাঁদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে হঠাৎ করে কেন সময়সূচির পরিবর্তন করা হল? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি।
উল্লেখ্য, ভবানীপুর উপনির্বাচনে নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছেন মমতা। ৩০ সেপ্টেম্বরের ভোটের ফলপ্রকাশ হয় ৩ অক্টোবর। ২০১১ সালের উপনির্বাচনে তিনি এই কেন্দ্র থেকে ৫৪ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন। এবারের উপনির্বাচনে, সেই মার্জিন বেড়ে ৫৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। প্রায় ৭২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন তিনি। ২০১১-য় তৈরি করা নিজের রেকর্ডকে ২০২১-এ ছাপিয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন- তোড়জোড় তেমন নেই, ইজেডসিসির পুজো উদ্বোধন করতে পারেন জেপি নাড্ডা
অন্যদিকে, সামশেরগঞ্জে ২৬ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছেন আমিরুল ইসলাম। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন কংগ্রেসের জইদুর রহমান। আর জঙ্গিপুরে পরপর দু’বার জিতলেন তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন। ২০১৬-র তুলনায় ব্যবধান বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ। তবে এই কেন্দ্রে বিজেরি পরাজিত হলেও আগের থেকে ভোটের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে।
আরও পড়ুন- পুজোর ৩ দিন সারারাত চলবে না মেট্রো, রাত ১১টায় মিলবে শেষ ট্রেন
এখনও চারটি আসনে উপনির্বাচন বাকি রয়েছে। ৩০ অক্টোবর, নদিয়ার শান্তিপুর, কোচবিহারের দিনহাটা, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবায় উপনির্বাচন হবে। ফল ঘোষণা ২ নভেম্বর।