সংক্ষিপ্ত
সোমবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গঙ্গাসাগরের ট্রানজিট ক্যাম্পে মোট ৩৫ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের পাঠানো হয়েছে সেফ হোমে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।
শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar Mela) অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। পাশাপাশি এই মেলার নজরদারি কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari)। হাইকোর্টের নির্দেশে গঠন করা হয়েছে নতুন কমিটি (New Committee)। সেই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। শুভেন্দুকে বাদ দেওয়ায় অবশ্য 'জয়' দেখছে রাজ্য সরকার (State Government)। আর এরই মধ্যেই বুধবার বাবুঘাটে তীর্থযাত্রীদের বিশ্রাম শিবির ঘুরে দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গঙ্গাসাগর মেলায় তীর্থযাত্রীদের জন্য কী কী প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখবেন তিনি। এছাড়া স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষেও সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবেন।
সোমবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গঙ্গাসাগরের ট্রানজিট ক্যাম্পে (Transit Camp) মোট ৩৫ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের পাঠানো হয়েছে সেফ হোমে (Safe Home)। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। কারণ এই মুহূর্তে পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে মেলা। সেখানে উপস্থিত হয়েছেন বহু মানুষ। আর এই সব বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য আগামীকাল বাবুঘাটে তীর্থযাত্রীদের বিশ্রাম শিবির ঘুরে দেখবেন মমতা। কারণ গঙ্গাসাগর মেলায় যাওয়ার আগে আউট্রাম ঘাটে ভিড় করছেন পুণ্যার্থীরা। সেখানে তাঁদের করোনা পরীক্ষাও করা হচ্ছে। অনেকের রিপোর্টই পজিটিভ এসেছে। কিন্তু, তারপরও এখনও পর্যন্ত পুণ্যার্থীদের অনেকের মধ্যেই কোনও হেলদোল লক্ষ্য করা যায়নি।
আরও পড়ুন- গঙ্গাসাগরের নজরদারি কমিটি থেকে বাদ শুভেন্দু, হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে ‘খুশি’ রাজ্য
সেখানে ধরা পড়েছে চরম অসতর্কতার ছবি। করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরও মাস্ক পরছেন না অনেকেই। এমনকী, মানা হচ্ছে না দূরত্ববিধিও। সতীর্থদের সঙ্গে গল্পে মশগুল হয়ে পড়ছেন অনেকেই। আবার করোনা নিয়ে আজব সব যুক্তিও দিয়েছেন কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে সাধারণ মানুষকে করোনা সম্পর্কে সচেতন করতে ও করোনাবিধি মেনে চলার জন্য বার বার প্রশাসনের তরফে সতর্ক করা হচ্ছে। প্রচার করা হচ্ছে মাইকে। কোভিড বিধি মেনে চলার জন্য ভিন রাজ্য থেকে আসা পুণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভাষায় ঘোষণা করা হচ্ছে। সমুদ্র স্নানে ভিড় রুখতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। কিন্তু, তারপরও ভিড় আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমুদ্রতটে সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন- সামান্য কমল রাজ্যে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা, সংক্রমণের হার বেড়ে ৩৭.৩ শতাংশ
এদিকে গঙ্গাসাগর মেলায় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পুরনো বেশ কিছু শর্ত অদলবদল করেছে আদালত। বলা হয়েছে, গোটা সাগরদ্বীপকেই নোটিফায়েড এলাকা বলে চিহ্নিত করতে হবে। করোনা দুটি টিকা নেওয়ার সার্টিফিকেট না থাকলে সাগর দ্বীপে প্রবেশ করতে পারবেন না কেউই। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আরটিপিসিআর পরীক্ষা। এমনকী, গঙ্গাসাগরে করোনা বিধি ও হাইকোর্টের নির্দেশ ঠিকভাবে মানা হল কি না, তা দেখার জন্য মুখ্যসচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সেখানে নজরদারি চালানোর জন্য গঠন করা হয়েছে নতুন কমিটি। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও রয়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল লিগাল সার্ভিসেস অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি রাজু মুখোপাধ্যায়।