সংক্ষিপ্ত

লের সব বিধায়কদের পাশাপাশি আজ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা মমতারও। কিন্তু, থাকলেন না। দাদার শেষ যাত্রায় যেমন তিনি যোগ দেননি, ঠিক তেমন ভাবেই স্মৃতিচারণাতেও তাঁকে যোগ দিতে দেখা গেল না। 

বাড়ির পুজো (Kali Puja) ছেড়ে ৪ নভেম্বর (4 November) রাতে ছুটে গিয়েছিলেন হাসপাতালে (Hospital)। বুকে পাথর চাপা দিয়ে সবাইকে জানিয়েছিলেন "সুব্রতদা" আর নেই। কিন্তু, দাদার শেষ যাত্রায় যোগ দেননি বোন মমতা (Mamata Banerjee)। যোগ যে দেবেন না তা আগেই জানিয়েছিলেন। আর আজ বিধানসভায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee) স্মৃতিচারণাতেও অংশ নিলেন না তিনি। আজকের দিনটাও নিভৃতেই কাটালেন। নবান্নে (Nabanna) কাগজপত্র ও ফাইলের মাঝেই ব্যস্ত রাখলেন নিজেকে। এ প্রসঙ্গে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee) বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেদনাহত। তিনি শেষ যাত্রাতেও যেতে পারেননি। আজও আসতে পারেননি।"

আজ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণায় বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন সব দলের বিধায়করা। এমনকী বিজেপি বিধায়কদেরও (BJP MLA) অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। দলের সব বিধায়কদের পাশাপাশি আজ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল মমতারও। কিন্তু, থাকলেন না। দাদার শেষ যাত্রায় যেমন তিনি যোগ দেননি, ঠিক তেমন ভাবেই স্মৃতিচারণাতেও তাঁকে যোগ দিতে দেখা গেল না। নবান্নে কাজের মধ্যেই ডুবে থাকলেন তিনি।  

আরও পড়ুন- নভেম্বর বিল্পবের স্মরণে পতাকা তোলায় 'শাস্তি', নানুরে পিটিয়ে খুন সিপিএম কর্মীকে

২৪ অক্টোবর শারীরিক পরীক্ষার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়েছিলেন সুব্রত। পরীক্ষা চলাকালীনই তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। এরপর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে উডবার্নের আইসিসিউ-তে ভর্তি করেছিলেন চিকিৎসকরা। পরে কার্ডিওলজি আইসিইউ-তে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। সুব্রতকে ‘নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন’ বা বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল অক্সিজেনও। পরে তাঁর বুকেও সংক্রমণ ধরা পড়ে। তবে কিছুটা সুস্থ হওয়ায় গত সপ্তাহে বাইপ্যাপ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছিল। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন সোমবার সুব্রতর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিও করা হয়। দুটি স্টেন্ট বসানো হয়েছিল। তারপর ঠিকই ছিলেন তিনি।  কিন্তু, ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি স্টেন্ট থ্রম্বোসিসে আক্রান্ত হন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। তারপর রাত ৯টা ২২ মিনিটে সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। 

আরও পড়ুন- যাত্রী বোঝাই বাসে ধূমপানের প্রতিবাদ করায় 'শাস্তি', মার খেলেন পুলিশ কর্মী

বৃহস্পতিবার, কালীপুজোর দিন সন্ধ্যায় আচমকাই গোটা রাজ্যে নেমে আসে অন্ধকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন বলেছিলেন, “বাড়িতে পুজো, কিন্তু আমি মন স্থির রাখতে পারিনি। মনটা আনচান করছিল। সুব্রতদার শরীরটা খারাপ হচ্ছে খবর পাচ্ছিলাম। অবশেষে এল মৃত্যুসংবাদ। আমি গোয়ায় থাকতেই খবর পেয়েছিলাম। দৌঁড়ে গিয়েছি হাসপাতালে। আমাকে বলেছিলেন, আমি ঠিক আছি, প্রোগাম দে, গোয়া যাব।” কিন্তু, আর প্রোগ্রাম পাননি। আসলে দেওয়ার প্রয়োজনও পড়েনি। তার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। ৪ নভেম্বর হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ৫ নভেম্বর কেওড়াতলা মহাশ্মশানে গান স্যালুটে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শেষ যাত্রার দিনও সারাদিন অন্তরালে ছিলেন মমতা। সেখান থেকেই গোটা প্রক্রিয়ার দেখাশোনা করেছিলেন তিনি। আর আজও আড়ালে থেকেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন। ভারাক্রান্ত মনে নবান্নেই সারাদিন নিজেকে ব্যস্ত রাখলেন। 

আরও পড়ুন- নিকাশির নামে বরাদ্দ টাকা উধাও, জলের তলায় বিঘার বিঘা জমি

YouTube video player