সংক্ষিপ্ত
- বেহালার ফ্ল্যাটে তরুণীর রহস্যমৃত্যু
- মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীর দিনই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা
- দরজা ভেঙে তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ
মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীর দিনই রহস্যজনক মৃত্য়ু হল মেয়ের। অগ্নিদগ্ধ ফ্ল্যাটের মধ্যে থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হল তরুণীকে। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় বছর চব্বিশের ওই তরুণীকে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বেহালার সরশুনার সরকার হাট লেনে।
মৃত ওই তরুণীর নাম গৌতমী বড়ুয়া। বছর চব্বিশের গৌতমীর বাবা বেশ কয়েক বছর আগে মারা যান। গত বছর মৃত্য়ু হয় মায়েরও। দিদিমার সঙ্গে গৌতমী ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। বাবার পেনশনের টাকাতেই সংসার চলত তাঁদের। কিন্তু দিন কুড়ি আগে গৌতমীর দিদিমারও মৃত্যু হয়। তার পর থেকে ওই আবাসনে একাই থাকতেন গৌতমী। গৌতমী নিজে কিছু করতেন না বলেই জানা গিয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সোমবার গৌতমীর মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী ছিল। মঙ্গলবার ভোররাত তিনটে নাগাদ ওই আবাসনেরই অন্য বাসিন্দা গৌতমীর ফ্ল্যাট থেকে ঘন ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে দেখেন। তিনিই অন্যান্য বাসিন্দাদের খবর দেন। ফ্ল্যাটের আবাসিকরা গৌতমীর ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। খবর পেয়ে সরশুনা থানার পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ওই তরুণীকে উদ্ধার করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গৌতমীর গোটা ফ্ল্যাট কালো ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল। জানলার কাঁচ ভেঙে কোনওক্রমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন পুলিশকর্মীরা। পুড়ে গিয়েছিল ফ্ল্যাটের সমস্ত আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিস। দরজার কাছেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিলেন ওই তরুণী। উদ্ধারের সময়ও গৌতমীর দেহে প্রাণ ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁর প্রতিবেশীরা। কিন্তু বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভোরবেলা মৃত্যু হয় তাঁর।
পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধারের সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন ওই তরুণী। তদন্তকারীদের অনুমান, তিনি এতটাই নেশাগ্রস্ত ছিলেন যে ফ্ল্যাটে আগুন লেগেছে বুঝতে পেরেও বেরিয়ে আসতে পারেননি। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সোমবার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর ছবির সামনে ধুপকাঠি জ্বালিয়েছিলেন গৌতমী। এর পাশাপাশি তাঁর ঘরের মধ্যে থেকে প্রচুর পরিমাণে সিগারেটও পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশের ধারণা হয় মায়ের ছবির সামনে জ্বালানো ধুপকাঠি, তা না হলে গৌতমী নিজে সিগারেট খাওয়ার সময় তা থেকেই কোনওভাবে ঘরের মধ্যে আগুন ধরে যায়। যার জেরে ঘরের প্রায় সব আসবাবপত্রই পুড়ে যায়। ফ্ল্যাটের অধিকাংশ জানলা বন্ধ থাকায় দমবন্ধ পরিস্থিত তৈরি হয়। বিপদ টের পেয়ে দরজা পর্যন্ত এসেও শেষ পর্যন্ত আর বেরোতে পারেননি গৌতমী। গোটা ঘটনায় এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।