সংক্ষিপ্ত

"এখন আমাদের চাকরি পেইয়ে বাড়িতে থাকার কথা ছিল। নিজেদের দাদা ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু  অপদার্থ সরকারের জন্য তা সম্ভব হয়নি।  তাই এতদিনের এই লড়াইয়ে যাঁদের পাশে পেয়েছি সেই দাদা ও ভাইদের ফোঁটা দিলাম।"

দুর্গাপুজো থেকে লক্ষ্মীপুজো সবই কাটল পথে। এমনকী দীপাবলির আলোও পৌঁছল না গান্ধীমূর্তি বা মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির  পাদদেশে। হকের চাকরির দাবিতে ৫৯১ দিন ধরে রাস্তায় বসে তাঁরা। গোটা রাজ্য যখন উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা ওঁরা তখনও লড়ে গিয়েছে। কথা ছিল চাকরি পাওয়ার, কথা ছিল বাড়ি গিয়ে আলো জ্বালার, যমের দুয়ারে কাঁটা ফেলে ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেওয়ার। কিন্তু ভাইফোঁটাতেও ঠিকানা সেই ধর্নামঞ্চ। তাই ধর্নাস্থলে ভাইফোঁটা পালন করলেন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা। মেয়ো রোডে চাকরিপ্রার্থীদের হাতে ফোঁটা নিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। অন্যদিকে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির  পাদদেশে দেখা গেল অন্য দৃশ্য। ভাইফোঁটা ভাইফোঁটায় টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের মিষ্টি এবং বস্ত্র বিতরণ করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। 

দুর্গাপুজো থেকে কালীপুজো, দীপাবলি সব উৎসবই কেটেছে পথে। লক্ষ্মীপুজোয়  প্রতীকী লক্ষ্মী সেজে প্রতিবাদ থেকে কালীপুজো এবং দীপাবলি পালন, ওঁদের লড়াইয়ের সাক্ষী থেকেছে শহর। বাদ গেল না ভাইফোঁটাও। "ভাইফোঁটায় দাদা ও ভাইকে ফোঁটা দিতে পারিনি, তাই লড়াইয়ে যে দাদা ভাইদের পাশে পেয়েছি তাঁদের ফোঁটা দিলাম", ধর্নামঞ্চে বসেই নিজেদের মধ্যে ভাইফোঁটা পালন করলেন চাকরিপ্রার্থীরা। বিকেলে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন মহম্মদ সেলিম। তাঁকেও ভাইফোঁটা দেন অনেকে। 
মহম্মদ সেলিমকে ফোঁটা দেওয়ার পর একজন চাকরিপ্রার্থী বললেন, "এখন আমাদের চাকরি পেয়ে বাড়িতে থাকার কথা ছিল। নিজেদের দাদা ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু  অপদার্থ সরকারের জন্য তা সম্ভব হয়নি।  তাই এতদিনের এই লড়াইয়ে যাঁদের পাশে পেয়েছি সেই দাদা ও ভাইদের ফোঁটা দিলাম। সেলিমদাও সেরকমই একজন। বারবার ওঁকে পাশে পেয়েছি। ভাইফোঁটার দিনেও তিনি আমাদের সঙ্গে সময় কাটাতে এসেছেন।" 

অন্যদিকে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে দেখা গেল অন্য দৃশ্য। চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে দিলীপ ঘোষ। বিতরণ করলেন মিষ্টি এবং জামাকাপড়। এদিন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বললেন, "সরকার ৮ বছর ধরে স্বচ্ছ নিয়োগ করতে পারেনি। ভাইফোঁটার দিন ছেলেমেয়েদের রাস্তায় বসিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের পাশে একটু সময় কাটাতে এলাম।" 

কয়েকদিন আগেই করুণাময়ীতে চাকরিপ্রার্থীদের অনশনে পুলিশি ধড়পকড়ের সাক্ষী থেকেছে শহর। চাকরির দাবিতে করুণাময়ীতে বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা। মঙ্গলবাল থেকে আমরণ অনশন শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে আচমকাই বলপূর্বক বিক্ষোভকারীদের তুলে দেয় পুলিশ। কার্যত জোড় করেই টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় চাকরীপ্রার্থীদের। ১৫ মিনিটের মধ্যে তুলে দেওয়া হয় ৮৪ ঘন্টার আন্দোলন। ঘটনা ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বৃহস্পতিবার রাতের করুণাময়ী। তবে পুলিশি ধরপাকড়ের সামনে মাথা নোয়ায়েনি আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার সকালে ফের করুণাময়ীতে নতুন করে জমায়েত করে বিক্ষোভকারীদের একাংশ। 

আরও পড়ুন-
২০১৪ বনাম ২০১৭, টেট চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে পালটা আন্দোলনে নামলেন টেট চাকরিপ্রার্থীরাই
ভারতের সীমানায় ‘বিচিত্র’ পরিস্থিতি, মোকাবিলা করতেই ‘অগ্নিপথ’ স্কিম চালু করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার?

‘রানিকে খান খান করে ছাড়ব’, শাসকদলকে কড়া হুঁশিয়ারি সুকান্ত মজুমদারের, প্রয়োজনে অস্ত্র তুলে নেওয়ার বার্তাও