সংক্ষিপ্ত

বাজি বিক্রি ও ব্যবহারের উপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। বিশেষ অবসরকালীন বেঞ্চে আজ এই মামলার শুনানি হবে। 

এবারের কালীপুজোতে (Kali Puja) নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের বাজি (firecrackers)। বাজি বিক্রি ও ব্যবহারের (firecrackers Ban) উপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাই এবার কালীপুজোর আগে খোলা বাজারে বাজির দেখাই পাওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বাজি। বাজি বিক্রি ও ব্যবহারের উপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। আর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) আবেদন করা হয়েছে। বিশেষ অবসরকালীন বেঞ্চে আজ এই মামলার শুনানি হবে। 

উল্লেখ্য, পরিবেশবান্ধব বাজি (ECO friendly Crackers) পোড়ানোর উপরে ছাড় দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (WB Pollution Control board)। জানানো হয়েছিল, কালীপুজোর দিন রাত ৮ থেকে ১০ টার মধ্যে পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানো যাবে। তবে শুধু কালীপুজোই নয়, ছটপুজো এবং বর্ষণবরণেও একইভাবে শর্তসাপেক্ষে বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন। তার জন্য নির্দিষ্ট সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ছটপুজোর দিন সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বাজি পোড়ানো যাবে। তবে কোনও রকম শব্দবাজি এবং পরিবেশ দূষক বাজি পোড়ানো যাবে না। বড়দিন এবং বর্ষবরণেও বাজি পোড়ানোয় সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিল পর্ষদ। ২৫ ডিসেম্বর এবং ৩১ ডিসেম্বর রাতে ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানো যাবে বলে জানানো হয়েছিল। মূলত ক্রমবর্ধমান বেড়ে চলা দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। 

আরও পড়ুন-কালীপুজোতে পোড়ানো যাবে না কোনও বাজি, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

এর প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে বাজি সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানি হয় ছিল বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানির সময় বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, "করোনার তৃতীয় ঢেউ (Corona Third Wave) আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় বাজি পোড়ানো, বিক্রি করার অনুমতি দেব কীভাবে? বৃহত্তর মানুষের স্বার্থের কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্রেতা, বিক্রেতা, প্রস্তুতকারী সংস্থা সবার কথা ভাবতে হবে।"  

আরও পড়ুন- বাড়ছে সংক্রমণ, রাশ টানতে এই এলাকায় কালীপুজোর আগে ৩দিন বন্ধ দোকান-বাজার

আর সেই কারণেই বাজি বিক্রি ও ব্যহার নিষিদ্ধ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছিল, যে কোনও ধরনের বাজির ব্যবহার, প্রদর্শন, ফাটানো বন্ধ করার বিষয়টি রাজ্যকে নিশ্চিত করতে হবে। আসন্ন কালীপুজো ও দিওয়ালির পাশাপাশি ছট পুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, গুরু নানকের জন্মদিন, খ্রীষ্টমাস, নতুন বছর উদযাপনের সময় এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে। সেই সময় কেবলমাত্র মোম অথব তেল নির্ভর প্রদীপ ব্যবহার করা যেতে পারে। এদিকে বিচারপতিদের বেঞ্চ এনিয়ে পুলিশকে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি বায়ুদূষণ হয় এমন যেকোনও বাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও আদালত নির্দেশ দেয়। 

আরও পড়ুন- দৈনিক সংক্রমণ লাফিয়ে ১ হাজারের পথে রাজ্য়, কলকাতায় কোভিডের বলি ৬

এদিকে বাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার আপত্তি জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এক্ষেত্রে ন্যাশানাল গ্রিন ট্রাইবুনাল ও সুপ্রিম কোর্টের গ্রিন বাজিতে ছাড় দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছে। এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন গৌতম রায় ও সুদীপ ভৌমিক নামে দুই ব্যক্ত। পাশাপাশি বাজি প্রস্তুতকারকদের যৌথ মঞ্চের তরফেও আবেদন করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, গ্রিন বাজিকে ছাড় না দিলে প্রস্তুতকারকরা মারাত্মক সমস্যায় পড়বেন। সংসার চালাতে পারবেন না তাঁরা। আজ সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হবে। 

YouTube video player