সংক্ষিপ্ত
তৃণমূলের হামলার প্রতিবাদে ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের সংহতিতে বাম ছাত্র-যুবরা কলেজ সামনে একটি একটি বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। এদিকে ঘটনাচক্রে এদিন ওই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলেন মুকুল রায়। মুকুল রায়কে দেখা মাত্রও আরও বাড়ে আন্দোলনের তেজ।
দুদিন আগেই কোর্স ফি কমানোর প্রতিবাদে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল মধ্যমগ্রামের আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র(এপিসি) কলেজে(Acharya Prafulla Chandra (APC) College, Madhyamgram)। যা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য-রাজনীতির অন্দরে। ওই কলেজের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, কোর্স ফি সংক্রান্ত বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাদের বাধা দেয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। মারধরও করা হয় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে। এবার এই ঘটনার প্রতিবাদে জেলাজুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছে এসএফআই(SFI)। এদিন তৃণমূলের হামলার প্রতিবাদে(protest of TMC attack) ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের(general student movement) সংহতিতে বাম ছাত্র-যুবরা কলেজ সামনে একটি একটি বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। এদিকে ঘটনাচক্রে এদিন ওই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলেন মুকুল রায়। মুকুল রায়কে(TMC leader Mukul Roy) দেখা মাত্রও আরও বাড়ে আন্দোলনের তেজ। তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরেই চলে স্লোগানিং। এপিসি কলেজে সংঘর্ষে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি তোলা হয়। আর এই কারণেই ঘোলা সোদপুর রোডে দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়েন বঙ্গ রাজনীতির এই বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা।
এদিকে এসএফআইয়ের মিছিলের জেরে কিছু সময়ের জন্য ব্যাপক যানজট তৈরি হয় ঘোলা সোদপুর রোডে। যদিও বাম-ছাত্র যুবদের দাবি, মানুষের ভোগান্তি তাদের উদ্দেশ্য নয়, তারা শুধুমাত্র এপিসি-র আন্দোলনকারীদের সংহতি জানাতেই তারা পথে নেমেছেন। এদিকে এই বিক্ষোভে গোটা এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মধ্যমগ্রাম থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। দাবি-দাওয়া নিয়ে আশ্বস্ত করা হয় বিক্ষোভকারীদেরক।তারপরেই ওঠে বিক্ষোভ। দীর্ঘ সময় পর মুক্তি পেয়ে নিজ গন্তব্যের দিকে রওনা হন মুকুল রায়।
আরও পড়ুন-ফের বাড়ছে উদ্বেগ, করোনা ভাইরাসের বুস্টার ডোজ নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা মমতার
এদিকে এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা এসএফআই-র জেলা সম্পাদক আকাশ কর এশিয়ানেট বাংলাকে বলেন, আমরা দেখেছি এপিসি কলেজে যারা কোর্স ফি কামানোর জন্য আন্দোলন করেছিল তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কাল রাত অবধি হুমকি-মারধর চালিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীরা। এই কাজে নেতৃত্ব দিয়েছে এপিসি কলেজেরই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক। এই ঘটনার প্রতিবাদেই, এপিসি-র সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনকে সংহতি জানিয়ে আমরা এদিন বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করি। আমরা কলেজেও বিক্ষোভ দেখাতে যাই। কিন্তু গিয়ে দেখি যে কোনও কারণেই হোক কলেজে তালা মেরে ওরা সব পালিয়ে গিয়েছে। তবে আমি শুনেছি, গত রাতেই নাকি আচমকা একটি নোটিশ দিয়ে কলেজের তরফে জানানো হয় ৩১ তারিখ অবধি পড়াশোনা বন্ধ থাকবে। এর পিছনে কী কারণ কারও জানা নেই।
আরও পড়ুন-রাজ্যে বাড়ছে ওমিক্রণের চোখ-রাঙানি, ফের স্কুল-কলেজ বন্ধের ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীর
এদিকে এপিসি কাণ্ড নিয়ে যে শাসক দলের উপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিকে এপিসি কলেজের একটা বড় অংশের আন্দোলনকারীদের আবার দাবি, তারা রাজানীতির রং ছাড়াই গণতান্ত্রিক অধিকার বলে কোর্স ফি কমানোর দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু তাতে পরবর্তীতে রাজনীতির রং লেগে যায়। এমনকী এপিসিতে এসএফআই-র অস্তিত্ব নিয়েও অস্বস্তি বাড়ছে বহু সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। যদিও তৃণমূলের দাবি, বামেদের মদতেই উত্তাল হয়েছে কলেজ। তবে অসমর্থিত সূত্রের খবর, মূলত সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরাই প্রথম এই কোর্স ফি কমানোর দাবি তোলেন। তারপর তাদের পাশে এসে দাঁড়ান অন্যান্য বিভাগের পড়ুয়ারা। তবে তাদেরও অধিকাংশের সাফ দাবি অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকেই শুরু করা হয়েছিল আন্দোলন। এদিকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে যদিও ছাত্রছাত্রীদের ‘অরাজনৈতিক’ দাবিকেই মান্যতা দিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা এসএফআই-র জেলা সম্পাদক আকাশ কর।