সংক্ষিপ্ত

মমতা সরাসরি নিশানা করেন সিপিআইএম-কে। তিনি বলেন, 'আমাদের ১১ বছরের শাসনে তৃণমূল সরকার স্কুলে চাকরি দিয়েছে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৯৭০কে।' এখনও শূন্যপদ রয়েছে। কোর্টের সমস্যা মিটে গেলেই সেখানে নিয়োগ করা হয়েছে।

তৃণমূল ছাত্রপরিষদের জন্মদিনেও স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনও তিনি বলেন কাজ করতে গেলে ভুল ত্রুটি হয়। তাই তাঁর আমলে যদি কোনও ভুল ত্রুটি হয় তাহলে তিনি তা সংশোধন করে দেবেন। এদিন মমতা সরাসরি নিশানা করেন সিপিআইএম-কে। তিনি বলেন, 'আমাদের ১১ বছরের শাসনে তৃণমূল সরকার স্কুলে চাকরি দিয়েছে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৯৭০কে।' এখনও শূন্যপদ রয়েছে। কোর্টের সমস্যা মিটে গেলেই সেখানে নিয়োগ করা হয়েছে। এদিন মমতা বলেন 'সিপিএম তোমার আমলে - ডকুমেন্ট কোথায়? লিস্ট কোথায় ? আলমারি কোথায়? পয়সা নিয়েছো আর চাকরি দিয়েছো। ' একই সঙ্গে এদিন তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্রপরিষদের মঞ্চ থেকেই রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যেসব প্রকল্পগুলি চালু করেছেন সেগুলি তুলে ধরেন। পাশাপাশি তাঁর আমলে যেসব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলি চালু হয়েছে সেগুলির কথাও বলেন। 

তিনি এদিনও নিশানা করেন সিপিএম রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যকে নিশানা করেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য স্কুল নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একাধিক মামলা করছেন তিনি।  বলেন এতগুলি চাকরি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু 'আকাশবাবু বিকাশবাবুদের জন্য তা আটকে রয়েছে। রোজ রোজ দুইএ-একজনের স্বার্থের জন্য তা আটকে রয়েছে।' তিনি বলেন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার কর্মসংস্থানের ওপর জোর দিয়েছে। আর সেই কারণে সরকারি চাকরি ছাড়াও দেড় কোটিরও বেশি তরুণ-তরুণীরা চাকরি পেয়েছে। বাংলা ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থা বেড়েছে বলেও দাবি করেন মমতা।

তবে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  কিছুটা হলেও সুর চড়িয়েই ভাষণ শুরু করেন। তিনি বলেন  সিপিএম-এর আমলেও প্রচুর দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু আজ আঙুল উঠছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। মমতা বলেন, 'আজ তৃণমূলকে বলছো চোর! কিন্তু আমি আজ যদি চেয়ারে না থাকতাম, রাজনীতি না করতাম তাহলে আমার বোনেদের বলতাম যারা এই মিথ্য কথা রটনা করে তাদের জিভটা টেনে ছিঁড়ে নিতে।' তিনি বলেন উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে একটা দলের নামে বদনাম করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন এখনও পর্যন্ত দোষ প্রমাণ হয়নি। কেউ শাস্তি পায়নি। কিন্তু মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। আর বিজেপি মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করেছে। তাঁর কথায় পেগাসাস করে সকলের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে।  

এদিনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে বিজেপি নিয়ন্ত্রণ করছে বলেও অভিযোগ করছেন। তিনি আরও বলেন, যারা বিজেপির বিরোধীতা করছে তাদেরই ইডি আর সিবিআই লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন প্রত্যেক নির্বাচনের সময়ই বিজেপি রাজ্য সরকারকে বিতর্ক করছে। তিনি আরও বলেন, এই রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারকে বিরক্ত করছে। কারা এই কাজ করছে তারও লিস্ট করছে তৃণমূল। এদিন মমতা বলেন, 'পার্থ যদি চোর হয় তাহলে আইন তার বিচার করবে। পার্থ চোর - অনুব্রত চোর এটাতো হয় না।' 

এদিনও তাঁর নামে কোর্টে কেস করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন তাঁর বিরুদ্ধে সম্পত্তি বেড়ে যাওয়ার মামলা হয়েছে। এই মামলা তাঁর পরিবারকেও টানা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই মামলা আন্তর্জাতিক আদালতে হওয়া উচিৎ। তারপরই মমতা বলেন তিনি সাংসদ কোটার পেনশন নেন না। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও কোনও মাইনে নেন না। সরকারি গাড়িও চড়েন না বলেও জানিয়েছেন। যে বাড়িতে তিনি রয়েছেন সেটাও ঠিকা সত্ত্বের বাড়ি। আইন অনুয়ায়ী তিনি রানি রাসমণির প্রজা। তিনি বলেন তাঁর বই বিক্রি হয় বলেও বিরোধীরা কটাক্ষ করেন। বই বিক্রির টাকায় তাঁর সংসার চলে বলেও জানিয়েছেন তিনি।